সংসদ ভবন। ফাইল চিত্র।
সংসদের ক্যান্টিনের সস্তা খাবার নিয়ে বিতর্ক রয়েছে বহু দিন ধরেই। বাজেট অধিবেশনের সূচনাপর্বেই ভর্তুকির রীতি পুরোপুরি বন্ধ করে সেই বিতর্কে ইতি টানছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ভর্তুকি তুলে নেওয়ার ফলে চলতি সপ্তাহ থেকে সংসদের ক্যান্টিনের বিভিন্ন পদের দাম বাড়ছে।
২০১৬ সালের পর ফের বাড়ছে সংসদে খাবারের দাম। বাজারদরের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে তৈরি হওয়া নতুন মূল্য তালিকাও সামনে এসেছে ইতিমধ্যেই। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া বাজেট অধিবেশনে নয়া দাম কার্যকরী হবে।
২০১৬ সালে নিরামিষ থালির দাম ১৮ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছিল ৩০ টাকা। এ বার তা হয়েছে ১০০ টাকা। আমিষ মধ্যাহ্ন ভোজ বুফের দাম হয়েছে ৭০০ টাকা। প্রতিটি রুটির জন্য ২ টাকার পরিবর্তে এ বার থেকে দিতে হবে ৩ টাকা। খাসির মাংসের বিরিয়ানি খেতে খরচ করতে হবে ১৫০ টাকা। ব্রিটিশ কায়দায় তৈরি সেদ্ধ সবজির প্লেট প্রতি নয়া দাম ৫০ টাকা।
সম্প্রতি লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা জানিয়েছিলেন, ভর্তুকির এই প্রথা বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই সঙ্গে তিনি জানান, উত্তর রেল কর্তৃপক্ষের পরিবর্তে ক্যান্টিন পরিচালনার দায়িত্ব পাবে ইন্ডিয়ান ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (আইটিডিসি)।
সংসদ সচিবালয়ের একটি সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে, ২০১৯ সালে ক্যান্টিনের ভর্তুকি বাবদ ১৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। সে সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব প্রতাপ রুডি পর্যায়ক্রমে ভর্তুকি বন্ধ করার কথা জানিয়েছিলেন। সংসদের ক্যান্টিনে জন্য সরকারের ভর্তুকির বহর কতটা, তা জানতে চেয়ে সুভাষ অগরওয়াল নামে এক সামাজিক আন্দোলনকারী তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় মামলা করেছিলেন। তার জবাবে ২০১৬ সালে সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, গত পাঁচ বছরে সাংসদদের খাবারে ৬০ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে।
তৎকালীন লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন অবশ্য সে সময় ভর্তুকি বহাল রাখার পক্ষেই সওয়াল করেছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, সাংসদদের পাশাপাশি সংসদের সব স্তরের কর্মী, নিরাপত্তা রক্ষী, সাংবাদিক এবং দর্শকাশনের অতিথিরাও নিয়মিত ক্যান্টিনে খেয়ে থাকেন। প্রসঙ্গত, লোকসভা এবং রাজ্যসভা মিলিয়ে সাংসদের সংখ্যা ৭৯০ হলেও অধিবেশন চলাকালীন প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার জন সংসদের ক্যান্টিনে খান। সে কারণে বিপুল পরিমাণে ভর্তুকি দিতে হয় সরকারকে।