দিল্লির যন্তর মন্তরে তেলঙ্গানার নেত্রী কবিতার অনশন কর্মসূচিতে সিপিএম সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরি। ছবি: পিটিআই।
দিল্লির মদের লাইসেন্স বিলি সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী, কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের (কেসিআর) কন্যা কে কবিতাকে শনিবার জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তার আগেই ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)-র নেত্রী কবিতা সংসদে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশের দাবিতে শুক্রবার অনশন কর্মসূচি পালন করলেন।
শুক্রবার দিল্লির যন্তর মন্তরে কবিতার অনশন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। যোগ দিয়েছিলেন বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতা-নেত্রী। সেই তালিকায় আম আদমি পার্টি, শিরোমণি অকালি দল, এনসিপি, আরজেডি, জেডি(ইউ), পিডিপি, শিবসেনা (উদ্ধব), আরএলডির মতো দল রয়েছে। তবে কোনও রাজনৈতিক সংগঠন নয়, ভারত জাগৃতি নামে একটি সামাজিক সংগঠনের তরফে সংসদ এবং বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভায় এক-তৃতীয়াংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের দাবিতে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত বৃহস্পতিবার কবিতাকে তলব করেছিল ইডি। কিন্তু তিনি যাননি। তিনি যাচ্ছেন না জানানোর পরে ইডির তরফে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শনিবার নতুন দিন দেওয়া হয়েছে কবিতাকে। কেসিআর-কন্যার অভিযোগ, বছর শেষে রাজ্যে ভোট। সে জন্যই নরেন্দ্র মোদীর সরকার তাঁকে এবং তাঁর দলকে হেনস্থায় সক্রিয় হয়েছে। শুক্রবার কবিতা বলেন, “দিল্লিতে ধর্নায় বসার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমাকে ডাকে ইডি। অন্তত ন’টি রাজ্যে ঘুরপথে সরকার গড়েছে বিজেপি। তেলঙ্গানায় তা পারেনি। তাই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে।’’
কবিতাকে দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় আগেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। এই মামলার চার্জশিটে ইডির অভিযোগ, দিল্লির তৎকালীন উপমুখ্যমন্ত্রী মদ সংক্রান্ত নীতির ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া আবগারি নীতির পরিবর্তন ঘটিয়ে যে ব্যবসায়িক সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন কবিতা তার ৬৫ শতাংশের মালিক!
গত ডিসেম্বরে সিসৌদিয়ার ঘনিষ্ঠ হিসাবে অমিত আরোরা নামে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। সূত্রের খবর, তখনই তারা জানতে পারে এই মামলায় যুক্ত রয়েছেন কবিতাও। এ ব্যাপারে পরবর্তী কালে তদন্ত এগোলে জানা যায়, কবিতার দু’টি ফোনে অন্তত ১০ বার ‘আন্তর্জাতিক মোবাইল ইক্যুইপমেন্ট পরিচিতি’ বদলানো হয়েছে। সেই সময়ে কবিতাকে জেরা করেছিল দিল্লিমদ কাণ্ডের আর এক তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।
সূত্রের খবর, আবগারি দুর্নীতিকাণ্ডে কবিতাকে হায়দরাবাদের ব্যবসায়ী অরুণ রামচন্দ্র পিল্লাইয়ের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন ইডি আধিকারিকেরা। গত সোমবার ইডি বর্ণিত ‘দক্ষিণ লবি’র অন্যতম অরুণ গ্রেফতার হন। তার আগে গত মাসে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন বিবি গোরান্তালা নামে হায়দরাবাদের এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। অভিযোগ, অরবিন্দ কেজরীওয়াল সরকারের আবগারি নীতির ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পরিবর্তন’ ঘটাতে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
(এই প্রতিবেদনটি প্রকাশের সময় কবিতার অনশন মঞ্চে তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেবও গিয়েছিলেন বলে লেখা হয়েছিল, যা ঠিক নয়। এই ভুল গোচরে আসা মাত্রই সংশোধন করে নেওয়া হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী।)