মূল ছবি: পিটিআই। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
লোকসভায় সাংসদ প্রতাপচন্দ্র ষড়ঙ্গীকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করতে পারে বিজেপি। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু বৃহস্পতিবার এই ইঙ্গিত দিয়েছেন। অন্য দিকে, কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে অভিযোগ তুলেছেন, তাঁকে সংসদের অন্দরে ধাক্কা মেরেছেন বিজেপি সাংসদেরা!
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অম্বেডকর-মন্তব্য ঘিরে সংসদের অন্দরে সরকার এবং বিরোধী পক্ষের সংঘাত বৃহস্পতিবার কার্যত পরিণত হয় ধাক্কাধাক্কিতে। দু’পক্ষের ধস্তাধস্তির সময় পড়ে গিয়ে বিজেপি সাংসদ প্রতাপ আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ওড়িশার বালেশ্বরের সাংসদ ষড়ঙ্গীর অভিযোগ, তাঁকে ধাক্কা মেরেছেন রাহুল। ষড়ঙ্গী বলেন, ‘‘রাহুল গান্ধী এক সাংসদকে ধাক্কা মারেন। তিনি আমার গায়ের উপর পড়েন। ফলে আমি মাটিতে পড়ে যাই।’’ রিজিজু বলেন, ‘‘প্রতাপচন্দ্র ছাড়াও আমাদের সাংসদ মুকেশ রাজপুত আহত হয়েছেন। ওঁরা (কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা) কী ভেবেছেন! কী ভাবে এমন আচরণ করতে পারেন।’’
বিজেপির দাবি, মাথায় আঘাত লেগেছে ষড়ঙ্গীর। সতীর্থ বিজেপি সাংসদ এবং লোকসভার কর্মীরা ধরাধরি করে মকর প্রবেশদ্বারের বাইরে আনার পরে ষড়ঙ্গীকে দেখতে যান রাহুলও। অন্য দিকে খড়্গে বলেন, ‘‘আমাকে সংসদের মকর দ্বারের কাছে বিজেপি সাংসদেরা ধাক্কা দিয়েছেন।’’ তিনি জানান, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি লিখে বিষয়টি জানিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, অধিবেশন কক্ষের অন্দরে ষড়ঙ্গী ‘আহত হওয়ায়’ রাহুলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানাতে হলে সংসদীয় বিধি মেনে স্পিকারের অনুমতি নিতে হত বিজেপিকে।
মঙ্গলবার রাজ্যসভায় সংবিধানের ৭৫ বছর নিয়ে বিতর্কের শেষে জবাবি বক্তৃতায় শাহ বলেন, ‘‘এখন একটা ফ্যাশন হয়েছে, অম্বেডকর, অম্বেডকর, অম্বেডকর, অম্বেডকর...। এত বার ভগবানের নাম নিলে সাত জন্ম পর্যন্ত স্বর্গ লাভ হত।’’ বুধবার থেকেই শাহের বিরুদ্ধে অম্বেডকর-অবমাননার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা। বৃহস্পতিবার লোকসভায় সেই বিক্ষোভ ঘিরেই হয় তুলকালাম। প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালে ওড়িশায় অস্ট্রেলীয় মিশনারি গ্রাহাম স্টুয়ার্ট স্টেইনস ও তাঁর দুই শিশুপুত্রকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল বজরং দলের। সেই সময়ে বজরং দলের রাজ্য সভাপতি ছিলেন ষড়ঙ্গী। তাঁর বিরুদ্ধেও খুনের মামলা রুজু হয়। কিন্তু মূল অভিযুক্ত দারা সিংহের যাবজ্জীবন জেল হলেও বিচারে রেহাই পেয়ে যান ষড়ঙ্গী।