(বাঁ দিকে) অভিযুক্ত প্রবেশ শুক্ল। (ডান দিকে) আদিবাসী শ্রমিকের মুখে প্রস্রাব করার সেই মুহূর্ত। —ফাইল চিত্র ।
আদিবাসী শ্রমিকের মুখে-গায়ে প্রস্রাব করার ঘটনায় তিনি ‘গভীর ভাবে ব্যথিত’। আর সেই কারণ দেখিয়েই দল থেকে পদত্যাগ করলেন মধ্যপ্রদেশের সিধি জেলার বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিবেক কোল। দল ছাড়ার পর স্থানীয় বিজেপি বিধায়ককের বিরুদ্ধে ক্ষোভও উগরে দিয়েছেন তিনি।
কয়েক দিন আগে একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেন আনন্দবাজার অনলাইন। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছিল, প্রবেশ শুক্ল নামের এক ব্যক্তি আদিবাসী শ্রমিক দশমত রাওয়তের মুখে, গায়ে প্রস্রাব করছেন। গত ৪ জুলাই ঘটনাটি ঘটে মধ্যপ্রদেশের সিধি জেলার কুবরি গ্রামে। ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই মধ্যপ্রদেশে শোরগোল পড়ে যায়।
সেই প্রস্রাবকাণ্ডের জেরেই এ বার দল থেকে পদত্যাগ করলেন বিবেক। বিবেক জানিয়েছেন, ওই আদিবাসী ব্যক্তির উপর প্রস্রাবের ঘটনা তাঁকে কষ্ট দিয়েছে। আর তাই তিনি বিজেপি থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বিবেক জানিয়েছেন, মধ্যপ্রদেশ বিজেপির সভাপতি ভিডি শর্মাকে তিনি পদত্যাগপত্র ইমেল করেছেন। বিবেক বলেন, ‘‘আমার পদত্যাগ চূড়ান্ত। দু’দিন আগেই মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সভাপতি ভিডি শর্মাকে পদত্যাগপত্র ইমেল করেছিলাম। আমি বিজেপির পদাধিকারীদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেও পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছি। দল আমাকে পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নিতে বলেনি।’’
পদত্যাগপত্রে সিধির বিজেপি বিধায়ক কেদারনাথ শুক্লের নিন্দাও করেছেন বিবেক। তাঁর অভিযোগ, গত দু’বছর ধরে বহু অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন কেদারনাথ। কেদারনাথের বিরুদ্ধে আদিবাসীদের জমি দখল এবং অন্যান্য নৃশংসতার অভিযোগও তিনি এনেছেন। তাঁর অভিযোগ, অভিযুক্ত প্রবেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে কেদারনাথের। যদিও বিজেপির তরফে সেই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরেই মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এই ঘটনায় আদিবাসীরা শাসক বিজেপির দিক থেকে মুখ ফেরাতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে পদ্মশিবিরের নেতাদের মধ্যে। প্রস্রাবকাণ্ডের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই মধ্যপ্রদেশ পুলিশ অভিযুক্ত প্রবেশকে গ্রেফতার করে। প্রবেশের বিরুদ্ধে কঠোর জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএ) আওতায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় তাঁর বাড়ির একাংশ। প্রস্রাবকাণ্ডের ‘প্রায়শ্চিত্ত’ হিসাবে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান সরকারি বাসভবনে নির্যাতিত দশমতকে ডেকে তাঁর পা ধুইয়ে ক্ষমা চান। সরকারের তরফে দশমতকে ৫ লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তাও মঞ্জুর করা হয়েছে। বাড়ি তৈরির জন্যও অতিরিক্ত দেড় লক্ষ টাকা দশমতকে দিয়েছে সরকার।