Hathras Stampede Incident

মৃত কিশোরীকে ‘অলৌকিক শক্তি’তে বাঁচিয়ে তোলার দাবি করেছিলেন ভোলে বাবা! গ্রেফতারও হন ২৬ বছর আগে

২৬ বছর আগে এমনই দাবি করে ভক্তদের মধ্যে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন নারায়ণ সাকার বিশ্ব হরি ওরফে ভোলে বাবা। তা প্রমাণ করতে এক কিশোরীর দেহ ‘কব্জা’ করেন। যদিও সেই ঘটনাতেই গ্রেফতার হন তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪ ১৭:০৩
(বাঁ দিকে) ভোলে বাবা। হাথরসকাণ্ডে মৃতেরা (বাঁ দিকে)। ফাইল চিত্র।

(বাঁ দিকে) ভোলে বাবা। হাথরসকাণ্ডে মৃতেরা (বাঁ দিকে)। ফাইল চিত্র।

‘অলৌকিক শক্তি’ দিয়ে মৃত ব্যক্তির দেহে প্রাণ ফিরিয়ে দিতে পারেন তিনি। ২৬ বছর আগে এমনই দাবি করে ভক্তদের মধ্যে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন নারায়ণ সাকার বিশ্ব হরি ওরফে ভোলে বাবা। তা প্রমাণ করতে এক কিশোরীর দেহ ‘কব্জা’ করেন। যদিও সেই ঘটনাই তাঁকে জেলের রাস্তা দেখিয়েছিল। ১৯৯৮ সালে গ্রেফতার হন ভোলে বাবা।

Advertisement

শাহগঞ্জ থানার এসএইচও তেজবীর সিংহ জানিয়েছেন, পঙ্কজ কুমার নামে এক ব্যক্তির ভাইঝি ক্যানসারে ভুগছিল। পঙ্কজ কুমারও ভোলে বাবার ভক্ত ছিলেন। তিনি জানান, তাঁর ভাইঝি হঠাৎ এক দিন জ্ঞান হারায়। তার পর জ্ঞান ফিরেও এসেছিল। কিন্তু তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয়েছিল তার। এসএইচও তেজবীর জানান, কিশোরীর দেহ নিয়ে তার পরিজনেরা যখন শ্মশান পৌঁছেছিলেন সৎকারের জন্য, ভোলে বাবা প্রায় ২০০ ভক্ত নিয়ে সেখানে হাজির হন। কিশোরীর পরিবারের কাছে দাবি করেন, তাকে ‘অলৌকিক শক্তি’ দিয়ে বাঁচিয়ে তুলবেন। তার পরই কিশোরীর দেহ নিজের ‘কব্জায়’ নেন ভোলে বাবা।

এসএইচও জানান, খবর পেয়েই সেখানে পুলিশ পৌঁছয়। পুলিশকে দেখেই ভোলে বাবার ভক্তেরা পাথর ছুড়তে শুরু করেন। যদিও ভোলে বাবা, তাঁর স্ত্রী এবং বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, ভক্তদের মধ্যে প্রভাব এতটাই বৃদ্ধি করেছিলেন যে, তাঁরা বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন, ভোলে বাবা সব সমস্যার সমাধান করতে পারেন নিমেষেই। শুধু তাই-ই নয়, ‘ভূত-প্রেত’, ‘আত্মা’ও নাকি তাঁর কাছে ‘বশ্যতা’ স্বীকার করত! এক কথায়, ভোলে বাবা হয়ে উঠেছিলেন ভক্তদের জীবনের ‘মসিহা’।

ভোলে বাবা নামে জনপ্রিয় হওয়ার আগে তিনি পরিচিত ছিলেন সুরজ পাল নামেই। কাসগঞ্জে থাকতেন। কনস্টেবলের চাকরি করতেন। কিন্তু সেখান থেকে ধীরে ধীরে স্বঘোষিত ‘বাবা’ হয়ে ওঠেন। মূলত স্বল্প আয়যুক্ত দলিত পরিবার, যাঁরা মূলত দিনমজুর, শ্রমিক, সাফাইকর্মী, ছুতোরের কাজ করতেন, তাঁরাই হয়ে ওঠে ভোলে বাবার ভক্ত। ঊর্মিলা নামে ‘বাবা’র এক ভক্ত সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘বাবা’ কারও কাছে টাকাপয়সা চাইতেন না। ‘সৎসঙ্গে’ আসা ভক্তদের কাছে তাঁর একটাই বার্তা ছিল, ‘মাছ, মাংস, ডিম, মদ খাবেন না।’ তাঁর বোন তারামতীও ভোলে বাবার ভক্ত। তিনি আবার পদপিষ্টের ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।

তারামতীর দাবি, ‘সৎসঙ্গ’ চলাকালীন ভোলে বাবা বলেছিলেন, “আজ প্রলয় আসবে। তার পরই এই ঘটনা ঘটে।” সংবাদমাধ্যমকে তারামতী বলেন, “বাবার (ভোলে বাবা) কথাই সত্যি হল।” মঙ্গলবার ভোলে বাবার ‘সৎসঙ্গে’ই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১২১ জনের ( সংবাদসংস্থা পিটিআই মৃতদের একটি তালিকাও প্রকাশ করেছে)।

আরও পড়ুন
Advertisement