দিল্লির ব্রিটিশ দূতাবাসের সামনে থেকে সরিয়ে নেওয়া হল ব্যারিকেড। ছবি: টুইটার।
ব্রিটেনের ভারতীয় দূতাবাসে খলিস্তানপন্থী স্বঘোষিত ধর্মগুরু অমৃতপাল সিংহের সমর্থকদের তাণ্ডবের প্রভাব এসে পড়ল কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরের দিল্লিতে। রাজধানীতে ব্রিটিশ হাইকমিশনের সামনে থেকে সরিয়ে নেওয়া হল পুলিশের ব্যারিকেড। যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছিল তাই তুলে নেওয়া হয়েছে, জানিয়েছে পুলিশ।
নিরাপত্তাজনিত কারণে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের সামনে এ ভাবেই ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখে পুলিশ প্রশাসন। কিন্তু বুধবার আচমকা দিল্লির ব্রিটিশ হাই কমিশনের সামনে থেকে সেই ব্যারিকেড তুলে নেওয়া হয়। জানানো হয়, পথচারীদের যাতায়াতে সমস্যা তৈরি করছিল এই ব্যারিকেড। তাই তুলে নেওয়া হল। দিল্লি পুলিশের এক প্রবীণ আধিকারিক সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ব্রিটিশ হাই কমিশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখনও একই রকম আছে। যদিও পথচারীদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করা ব্যারিকেডগুলি তুলে নেওয়া হয়েছে। এতে নিরাপত্তার কোনও সমস্যা হবে না।’’
মুখে এ কথা বললেও প্রশ্ন উঠছে, আচমকা বুধবারই কী করে পুলিশ বুঝল যে ওই ব্যারিকেড থাকায় হাঁটাচলায় সমস্যায় পড়ছেন মানুষ! ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, এটি হল ব্রিটিশ সরকারকে কৌশলে বার্তা দেওয়া। যে ভাবে বিনা বাধায় খলিস্তানপন্থীরা লন্ডনে ভারতীয় হাই কমিশনে চড়াও হয়ে তাণ্ডব চালিয়েছে, তা মোটেই ভাল ভাবে নেয়নি নয়াদিল্লি। তাণ্ডব চলাকালীন অমৃতপালের সমর্থকেরা দূতাবাসে টাঙানো ভারতের জাতীয় পতাকা খুলে নেন। সেই দৃশ্য দেখে চমকে উঠেছে ভারত। দিল্লির ব্রিটিশ হাই কমিশনের সামনে থেকে ব্যারিকেড তুলে নেওয়া তারই প্রতিক্রিয়া বলে মনে করা হচ্ছে।
শুধু দূতাবাসেরই নয়, রাজধানীর ২ নম্বর রাজাজি মার্গে ব্রিটিশ হাই কমিশনার অ্যালেক্স ইলিসের বাড়ির সামনে থেকেও ব্যারিকেড তুলে নেওয়া হয়েছে।
#WATCH | Delhi: Barricades removed from outside the residence of British High Commissioner Alex Ellis. pic.twitter.com/OMSuRfsiu4
— ANI (@ANI) March 22, 2023
পঞ্জাবে আচমকাই উদয় হয়েছে এক স্বঘোষিত ধর্মগুরুর। পুলিশের হাতে ধরা পড়ার ভয়ে যে অমৃতপাল সিংহ এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাঁকে গ্রেফতারির চেষ্টার প্রতিবাদ জানাতেই তাঁর অনুগামীরা লন্ডনে ভারতীয় হাই কমিশনে তাণ্ডব চালান। তার কড়া প্রতিক্রিয়া দেয় ভারত। রবিবার রাতেই জরুরি এত্তেলা দিয়ে ডেকে পাঠানো হয় দিল্লিস্থিত ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশনারকে। তাঁর কাছে উদ্বেগের কথা জানানো হয়। সূত্রের খবর, ভারতীয় আধিকারিকদের সামনে ব্রিটেনের ডেপুটি হাই কমিশনারও ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন এবং এই ধরনের আচরণ মোটেও বরদাস্ত করা হবে না বলে বার্তা দেন। কিন্তু তাতে খুশি নয় নয়াদিল্লি। কেন ভারতীয় হাইকমিশনের আশপাশে নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা ছিল না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে ভারতের।
শনিবার থেকেই অমৃতপালকে ধরতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে পঞ্জাব পুলিশ। তাঁর সংগঠন ‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’-এর সঙ্গে যুক্ত শতাধিক মানুষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে অমৃতপাল এখনও অধরা।