নরেন্দ্র মোদী (বাঁ দিকে) এবং প্রয়াত অটলবিহারী বাজপেয়ী। — ফাইল চিত্র।
হঠাৎই সমাজমাধ্যমে ‘প্রাসঙ্গিক’ হয়ে উঠেছে প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর ৪৬ বছরের পুরনো সেই বক্তৃতা। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গাজ়া ভূখণ্ডে সর্বাত্মক সেনা অভিযান ঘোষণা করে প্যালেস্তেনীয়দের ওই এলাকা ছাড়ার হুমকি দেওয়ার পরেও নরেন্দ্র মোদী তেল আভিভকে সমর্থনের ঘোষণার পরে।
শনিবার দুপুরে ইজ়রায়েল বায়ুসেনা নির্বিচারে গাজ়ার অসামরিক অঞ্চলে বোমাবর্ষণ করার সময়ই পশ্চিম এশিয়া নিয়ে নয়াদিল্লির দীর্ঘ দিনের কূটনৈতিক ভারসাম্যের নীতি থেকে সরে এসে প্রকাশ্যে ইজ়রায়েলের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তার পরে রাজনৈতিক মহলে নানা প্রশ্ন উঠেছে প্রধানমন্ত্রীর এই অবস্থান নিয়ে। প্রশ্ন উঠেছে সামাজমাধ্যমেও।
আর মোদীর এই অবস্থান বদলের সূত্র ধরেই সামাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে ১৯৭৭ সালের লোকসভা ভোটের আগে তৎকালীন জনতা পার্টির নেতা বাজপেয়ীর দিল্লির একটি সমাবেশে সেই বক্তৃতা।
ওই বক্তৃতায় স্পষ্ট ভাষায় বাজপেয়ী প্যালেস্তাইন, লেবানন, সিরিয়ার ভূখণ্ডে ইজ়রায়েলি দখলদারির নিন্দা করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘ইজ়রায়েলের দখল করা আরব ভূখণ্ড খালি করতেই হবে।’’ প্রধানমন্ত্রী পদে তাঁর দলীয় উত্তরসূরি মোদী কেন ভারতের সাড়ে সাত দশকের কূটনৈতিক অবস্থান বদলে প্যালেস্তেনীয় ভূখণ্ড গাজ়ায় ইজ়রায়েলি আগ্রাসনকে বৈধতা দিলেন, সে প্রশ্ন উঠেছে সমাজমাধ্যমে।
দিল্লির সমাবেশের ওই বক্তৃতায় পশ্চিম এশিয়ায় স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইজ়রায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি প্যালেস্তেনীয় জনতার অধিকার প্রতিষ্ঠার উপরও গুরুত্ব দিয়েছিলেন বাজপেয়ী। সেই সঙ্গে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কংগ্রেসকে হারিয়ে কেন্দ্রে জনতা পার্টি ক্ষমতায় এলেও নয়াদিল্লির কূটনৈতিক অবস্থান বদলাবে না।
৭৭-এর সেই লোকসভা ভোটে ইন্দিরা গান্ধীর কংগ্রেসকে হারিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল জনতা পার্টি। প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাইয়ের সরকারের বিদেশমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে সেই প্রতিশ্রুতি পালন করেছিলেন বাজপেয়ী। বাসভূমি হারানোর প্যালেস্তেনীয় জনতার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন দৃঢ় ভাবে। সমাজমাধ্যমে প্রশ্ন, সাড়ে চার দশক পরে তাঁরই দলের মোদী কেন বদলে ফেললেন সেই অবস্থান?