বিজেপি কর্মী, সমর্থকদের উচ্ছ্বাস। ছবি: পিটিআই।
তিন রাজ্যে ভোটজয়ের পরেই বিজেপির সদর দফতরে দাঁড়িয়ে নাম না করে কংগ্রেসকে হুঁশিয়ারি দিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘দেশের সেবা করার জন্য রাষ্ট্রসেবা করতে হয়। অহংকার, নিরাশা, নেতিবাচক— হেডলাইন দেয় সংবাদমাধ্যমকে। জনতার মনে স্থান দেয় না। নতুন কোনও প্রকল্প হলে, গরিবের জন্য বাড়ি তৈরি করলে কংগ্রেস এবং তার সঙ্গীরা ব্যঙ্গ করে। আপনারা শুধরে যান। জনতা নাহলে আপনাদের বেছে বেছে সাফ করে দেবে।’’
চার রাজ্যের মধ্যে তিন রাজ্যের বিধানসভা ভোটে জয়ের পর বিজেপির সদর দফতরে পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়েছেন, মানুষের এই রায় থেকে স্পষ্ট, ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলিকে দেশে আরও পরিশ্রম করতে হবে।
মধ্যপ্রদেশে হারের দায় নিয়ে কারণ বিশ্লেষণ করা হবে বলে জানালেন কমল নাথ।
রাজস্থানে কংগ্রেস ক্ষমতা ধরে রাখতে পারছে না। তবে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহৌলত জয়ী। সর্দারপুরা কেন্দ্র থেকে তিনি বিজেপি প্রার্থী মহেন্দ্র রাঠৌরকে হারিয়েছেন।
পরিবর্তনের স্রোতেও জয়ী হয়েছেন সচিন পাইলট। রাজস্থানের টঙ্ক কেন্দ্রে কংগ্রেস নেতা ২৯ হাজারের বেশি ভোটে বিজেপি প্রার্থী অজিত সিংহ মেহতাকে পরাজিত করেছেন।
রাজস্থানের জোতওয়াড়া কেন্দ্র থেকে জয়ী হলেন বিজেপি প্রার্থী রাজ্যবর্ধন রাঠৌর। তিনি কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক চৌধুরীকে ৫০ হাজারের বেশি ভোটে হারিয়েছেন।
রাজস্থানের ঝালারাপাটন কেন্দ্র থেকে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী বসুন্ধরা রাজে। তিনি কংগ্রেস প্রার্থী রামলালকে ৫৩ হাজার ভোটে হারিয়েছেন।
বুধনি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। এক লক্ষের বেশি ভোটে কংগ্রেস প্রার্থীকে হারিয়েছেন তিনি।
তিন রাজ্যে বিজেপির সাফল্যে মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়ে পোস্ট করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জয়ের জন্য মোদীকেও অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি।
রবিবার সকাল ৮টা থেকে চার রাজ্যে ভোটগণনা শুরু হয়েছে। বিকেল ৫টার পরিসংখ্যান বলছে, মধ্যপ্রদেশে ২৩০টি আসনের মধ্যে ১৬৭টিতে এগিয়ে বিজেপি। কংগ্রেস এগিয়ে ৬২টি আসনে। রাজস্থানে ২০০টির মধ্যে ১১৫টি আসনে এগিয়ে বিজেপি। কংগ্রেস ৬৯টি আসনে এগিয়ে। ছত্তীসগঢ়ে ৯০টির মধ্যে বিজেপি ৫৪টি এবং কংগ্রেস ৩৬টি আসনে এগিয়ে। তেলঙ্গানায় মোট আসন ১১৯টি। তার মধ্যে কংগ্রেস ৬৩টি আসন এবং বিআরএস ৪০টি আসনে এগিয়ে। বিজেপি এগিয়ে ৯টি আসনে।
উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে সফল হলেও তেলঙ্গানার ভোটে দাগ কাটতে পারেনি বিজেপি। পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন মোদী। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, ‘‘তেলঙ্গানার ভাই এবং বোনেদের বলছি, বিজেপিকে সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ। গত কয়েক বছর ধরে বিজেপির প্রতি আপনাদের ভালবাসা বাড়ছে। আশা করি আগামী দিনে তা আরও বাড়বে। তেলঙ্গানার সঙ্গে আমাদের বন্ধন বরাবরই দৃঢ়। আমরা মানুষের জন্য কাজ করে যাব।’’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তিন রাজ্যে ভোটের ফল এবং বিজেপির সাফল্য নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন। লিখেছেন, ‘‘জনতা জনার্দনের কাছে আমরা মাথা নত করছি। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তীসগঢ়ের ফল থেকে পরিষ্কার, মানুষ উন্নয়নের পক্ষে। বিজেপিকে সমর্থনের জন্য এই তিন রাজ্যের মানুষকে আমি ধন্যবাদ জানাই। আমরা তাঁদের সেবায় কঠোর পরিশ্রম করব। দলের পরিশ্রমী কর্মীদেরও আমি বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’’
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে চার রাজ্যের ফলাফল নিয়ে মুখ খুলেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘‘তেলঙ্গানার মানুষ আমাদের যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। পাশাপাশি, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশে যাঁরা আমাদের ভোট দিয়েছেন, তাঁদের ধন্যবাদ। এই তিন রাজ্যে আমাদের ফল হতাশাজনক। তবে আগামী দিনে আমরা আরও শক্তিশালী হয়ে তিন রাজ্যেই ক্ষমতায় ফিরব। চার রাজ্যেই আমরা ভাল লড়াই করেছি। দলের কর্মীদের পরিশ্রমকে কুর্নিশ।’’
রাজস্থানের উদয়পুরে জয়ী হয়েছেন বিজেপি নেতা তারাচাঁদ জৈন। তিনি কংগ্রেসের গৌরব বল্লভকে ৩২ হাজার ভোটে হারিয়েছেন।
চার রাজ্যের ফলাফলে অবাক হননি এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার। তিনি জানালেন, ‘ইন্ডিয়া’র পরবর্তী বৈঠকে এই ফলাফল বিশ্লেষণ করা হবে। আগামী ৬ ডিসেম্বর জোটের বৈঠক ডাকতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে কংগ্রেস।
তেলঙ্গানায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসতে চলেছে কংগ্রেস। রাজ্যে দলের প্রধান রেবন্ত রেড্ডি এই জয়ের আবহে হায়দরাবাদে রোড শো-তে অংশ নিয়েছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদের অন্যতম দাবিদার তিনি।
ফল প্রায় নিশ্চিত। তেলঙ্গানায় ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে বিআরএস। এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে দলের তরফে কেটিআর কংগ্রেসকে জয়ের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। লিখেছেন, ‘‘বিআরএসকে পর পর দু’বার সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি তেলঙ্গানার মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ। এই ফলাফল দেখে আমি দুঃখ পাইনি, তবে হতাশ হয়েছি। এই হার থেকে আমরা শিক্ষা নেব এবং কামব্যাক করব। জয়ের জন্য কংগ্রেসকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানাচ্ছি।’’
তেলঙ্গানার জুবিলি হিলস কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী মহম্মদ আজহারউদ্দিন পিছিয়ে পড়েছেন। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, তিনি দশ রাউন্ড গণনার পর ১৬৪৮ ভোটে পিছিয়ে আছেন বিআরএস প্রার্থী মগন্তী গোপীনাথের কাছে।
রাজস্থানের বিজেপি নেত্রী দিয়া কুমারী জয়ী। বিদ্যাধর নগর কেন্দ্র থেকে ৭১ হাজারের বেশি ভোটে তিনি জিতেছেন। দিয়া রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদের অন্যতম দাবিদার।