Assam Rat Hole Mining

খনি দুর্ঘটনার পর উদ্যোগী অসম সরকার, অবৈধ ইঁদুর-গর্ত খনি বন্ধ করতে অভিযান প্রশাসনের

গত ৬ জানুয়ারি অসমের দিমা হাসাওয়ের উমরাংসোর এক অবৈধ কয়লাখনিতে হঠাৎ জল ঢুকে পড়ে। ৩০০ ফুট গভীর খনির প্রায় ১০০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত জল উঠে যায়। ভিতরে আটকে পড়েন অন্তত ন’জন শ্রমিক!

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:১১
অসমের দিমা হাসাওয়ের সেই খনি।

অসমের দিমা হাসাওয়ের সেই খনি। — প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

খাতায়কলমে বৈধ ছাড়পত্র নেই। তাও ‘নিষিদ্ধ’ পদ্ধতিতেই রমরমিয়ে চলছে কয়লা উত্তোলনের কাজ। চলতি মাসের শুরুতে অসমের খনিতে জল ঢুকে বহু শ্রমিকের মৃত্যুর পর এ বার এমনই নানা অবৈধ খনি বন্ধ করতে উদ্যোগী হল সে রাজ্যের সরকার। শনিবার সিল করে দেওয়া হল অন্তত ১৩টি ‘ইঁদুর-গর্ত’ খনি (র‌্যাট হোল মাইন)।

Advertisement

শনিবার অসম সরকার এবং কোল ইন্ডিয়া লিমিটেডের যৌথ অভিযানে ১৩টি অবৈধ ইঁদুর-গর্ত খনি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খনিতে কর্মরত তিন শ্রমিককেও গ্রেফতার করা হয়েছে। দিমা হাসাওয়ের পুলিশ সুপার মায়াঙ্ক কুমার ঝার কথায়, ‘‘ইঁদুর-গর্ত খনি খুবই বিপজ্জনক। এই পদ্ধতিতে শ্রমিকেরা খনির ভিতরে সরু সুড়ঙ্গ খোঁড়েন। ফলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে।’’ গত ১৬ জানুয়ারি মরিগাঁওয়ে অসম মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর রাজ্যের সমস্ত অবৈধ খনি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেই মতোই শনিবার সকালে শুরু হয় ‘অভিযান’।

কী এই ‘র‌্যাট-হোল মাইনিং’? কেনই বা তা নিষিদ্ধ? নাম শুনে আন্দাজ করা যায়, ইঁদুরের কায়দায় গর্ত খোঁড়ার সঙ্গে ‘র‌্যাট-হোল মাইনিং’-এর সম্পর্ক রয়েছে। এককালে খনি থেকে আকরিক উত্তোলনের কাজে এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হত। কোনও যন্ত্রের সাহায্য ছাড়া শাবল, গাঁইতি দিয়ে খুব সঙ্কীর্ণ গর্ত খুঁড়ে খুঁড়ে এগোতে হত শ্রমিকদের। তবে এই প্রক্রিয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, এই ভাবে খোঁড়া সুড়ঙ্গ অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ হয়। ফলে যে কোনও মুহূর্তে ধস নেমে শ্রমিকের মৃত্যু হতে পারে। ২০১৮ সালে মেঘালয়ের এমনই এক অবাধ কয়লাখনিতে জল ঢুকে পড়ায় মৃত্যু হয়েছিল ১৫ জন শ্রমিকের। অনেক খোঁজাখুজির পর মাত্র দু’টি মৃতদেহ উদ্ধার করা গিয়েছিল। বাকিদের দেহও মেলেনি। একের পর এক দুর্ঘটনার কারণে ‘র‌্যাট-হোল মাইনিং’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। তার পরেও এই পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন বন্ধ হয়নি। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের নভেম্বরে উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারার সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধারের জন্য এই নিষিদ্ধ পদ্ধতিরই শরণাপন্ন হতে হয়েছিল প্রশাসনকে।

গত ৬ জানুয়ারি অসমের দিমা হাসাওয়ের উমরাংসোর এক অবৈধ কয়লাখনিতে হঠাৎ জল ঢুকে পড়ে। ৩০০ ফুট গভীর খনির প্রায় ১০০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত জল উঠে যায়। ভিতরে আটকে পড়েন অন্তত ন’জন শ্রমিক! উদ্ধারকারী দলের দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর চার জনের দেহ উদ্ধার করা গেলেও বাকিদের এখনও খোঁজ মেলেনি। ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মৃত চার শ্রমিকের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়েছে। এখনও খনির ভিতরে আটকে থাকা শ্রমিকদের পরিবারকে দেওয়া হয়েছে ছ’লক্ষ টাকা। শনিবার অসমের খনি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী কৌশিক রাই ওই টাকার চেক শ্রমিকদের পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছেন।

Advertisement
আরও পড়ুন