— প্রতীকী চিত্র।
ভাল শেয়ারে লগ্নি করে বিপুল লাভের হাতছানি, ডিজিটাল অ্যারেস্টের ভয় দেখিয়ে টাকা দিতে বাধ্য করা, বা অন্তরঙ্গ ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে সম্মানহানির হুমকি— এই ভাবে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকেরা। পরিসংখ্যান বলছে, এই কাজে প্রতারকদের সবচেয়ে পছন্দের অ্যাপ্লিকেশন হল ওয়টস্যাপ। অনেকটাই ‘পিছিয়ে’ টেলিগ্রাম ও ইনস্টাগ্রাম।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী ২০২৪ সালের প্রথম তিন মাসে প্রতারণার ৮৬,২৭৭টি অভিযোগ জমা পড়েছিল। যার মধ্যে ৪৩,৭৯৭টি প্রতারণা হয়েছে ওয়টস্যাপের মাধ্যমে। টেলিগ্রাম ও ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে হওয়া প্রতারণার সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ২২,৬৮০ ও ১৯,৮০০। পরিংখ্যান বলছে, গত বছরের প্রথম চার মাসে প্রতারকদের হাতে প্রায় ১২৫ কোটি টাকা খুইয়েছেন দেশের নাগরিকরা। যা প্রকৃত অঙ্কের তুলনায় খুব অল্প, মত সাইবার বিশেষজ্ঞদের। বিশেষ করে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিয়ো প্রকাশের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অধিকাংশই পুলিশের কাছে রিপোর্ট হয় না, জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা।
তদন্তকারীদের মতে, প্রতারকদের কাছে মানুষকে বোকা বানাতে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য অ্যাপ্লিকেশন হল ওয়টস্যাপ। যা চালানো সোজা। আমজনতার অধিকাংশ ওয়টস্যাপ পরিষেবা ব্যবহার করে থাকেন।
স্বরাষ্ট্র কর্তাদের মতে, ওয়টস্যাপের মাধ্যমে নানা ভাবে ফাঁদ পাতা হয়। তার মধ্যে বহুল প্রচলিত হল, নির্দিষ্ট ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে অতিরিক্ত রোজগারের লোভ দেখিয়ে ধারাবাহিক ভাবে বার্তা পাঠানো। মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং-এর লোভ দেখিয়ে (নির্দিষ্ট কিছু লিঙ্কে ক্লিক করলেই অর্থ অ্যাকাউন্টে চলে আসবে) ওই ফাঁদ পাতা হয়। যাকে ‘পিগ বুচারিং স্কিম’ বলছেন গোয়েন্দারা। এ ক্ষেত্রে আস্থা অর্জনে প্রথম এক-দু’বারে আবেদনকারীকে টাকা ফেরত দেন প্রতারকেরা। প্রাথমিক আস্থা অর্জনের পরে আবেদনকারীদের বড় মাপের অর্থে লোভ দেখিয়ে প্রতারণা করা হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, সন্দেহভাজন হওয়ায় গত এক বছরে বিদেশের ৫৯ হাজার ওয়টস্যাপ অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হয়। প্রতারকরা কতটা ধুরন্ধর, তা বোঝাতে এক স্বরাষ্ট্র কর্তা বলেন, ‘‘রামমন্দির উদ্বোধনের সময়ে ওয়টস্যাপে মূর্তির প্রাণ প্রতিষ্ঠা সরাসরি দেখা যাবে বলে কিছু সন্দেহজনক লিঙ্ক ঘুরছিল। ওই লিঙ্কে ক্লিক করে অনেকেই প্রতারণার শিকার হয়েছনে।’’ ফেসবুকে ঋণ দেওয়ার নাম করেও ওই সব চক্র সক্রিয় রয়েছে। যাদের থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন গোয়েন্দারা।