অরুণিমা সিংহ। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
কচ্ছপ বাঁচানোই তাঁর জীবনের ব্রত। দিন-রাত এক করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কচ্ছপের বাসস্থান নদী ও জলাভূমিগুলির রক্ষার কাজ করেন তিনি। নিরন্তর জনসচেতনা প্রচার চালান। আটকান চোরাচালান। আর এ ভাবেই গত আট বছরে অন্তত ২৮ হাজার কচ্ছপের প্রাণ রক্ষা করেছেন উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের বাসিন্দা অরুণিমা সিংহ!
আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘টার্টল সারভাইভ্যাল অ্যালায়েন্স’ (টিএসএ)-এর ভারত শাখার সদস্য অরুণিমা এ বছর ‘ন্যাটওয়েস্ট আর্থ হিরোস সেভ দ্য স্পিসিস অ্যাওয়ার্ড’-এর জন্য মনোনীত হয়েছেন। তাঁর পরিবেশ ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ সংক্রান্ত এই আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রাপ্তিতে খুশির হাওয়া দেশের বন্যপ্রাণপ্রেমীদের মধ্যে। টিএসএ-র ভারত শাখার প্রধান শৈলেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘ভারতে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আন্দোলনের প্রথম সারির নাম অরুণিমা। বিরল ‘ক্রাউন্ড রিভার টার্টল’ নিয়ে গবেষণাও করেছেন তিনি। এই পুরস্কার তাঁর প্রাপ্য।’’
টিএসএ-র সদস্য রাজা মণ্ডল আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, উন্নয়নের অভিঘাতে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় অনেক জলাভূমি বিপন্ন হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘‘অরুণিমা এই পুরস্কার পাওয়ায় আন্তর্জাতিক দুনিয়ার কিছুটা নজর পড়বে এ দিকে। কচ্ছপ-সহ বিভিন্ন মিষ্টি জলের প্রাণীর সংরক্ষণের কাজ কিছুটা হলেও গতি পাবে।’’
অন্তত আট প্রজাতির মিষ্টি জলের কচ্ছপের পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশের গঙ্গা অববাহিকার মিষ্টি জলের কুমির (মগর), ঘড়িয়াল, শুশুক, ভোঁদড়-সহ নানা প্রাণীর বাস। মিষ্টি জলের বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় এই প্রজাতিগুলির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। মূলত এদের নিয়েই অরুণিমা এবং তাঁর সংগঠনের কাজ। উত্তরপ্রদেশের নারোরা পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের কর্মী রাজা জানান, কচ্ছপ সংরক্ষণের কাজ করতে গিয়ে একাধিক বার চোরাচালান চক্র এবং স্থানীয় জমি মাফিয়াদের হামলার মুখেও পড়েছেন তাঁরা।