Foreign Exchange Violation Case

ইডি দফতরে অনিল অম্বানীর স্ত্রী, বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ মামলায় তদন্তকারীদের মুখোমুখি টিনা

সোমবার বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের মামলায় রিলায়্যান্স এডিএ গ্রুপের কর্ণধার অনিল অম্বানীর বয়ান রেকর্ড করেছিল ইডি। মঙ্গলবার অনিলের স্ত্রী টিনাও ইডির মুখোমুখি হলেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
মুম্বই শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৩ ১১:৫০
Anil Ambani’s wife Tina appears before ED in Foreign Exchange Violation Case.

অনিল অম্বানী এবং তাঁর স্ত্রী টিনা অম্বানী। ফাইল চিত্র।

বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন (ফেমা) লঙ্ঘনের মামলায় ইডি দফতরে হাজিরা দিলেন রিলায়্যান্স এডিএ গ্রুপের কর্ণধার অনিল অম্বানীর স্ত্রী তথা প্রাক্তন অভিনেত্রী টিনা অম্বানী। মঙ্গলবার দক্ষিণ মুম্বইয়ের ইডি দফতরে হাজিরা দেন তিনি। বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

সোমবারই ইডির কাছে হাজিরা দিয়েছিলেন টিনার স্বামী। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা অনিলের বয়ান রেকর্ড করেন। তার পর মঙ্গলবার টিনাকেও ইডি দফতরে দেখা গেল। ইডি সূত্রে খবর, অনিলের সংস্থার কিছু বিনিয়োগ এবং বিদেশে গচ্ছিত কিছু গোপন সম্পদ সংক্রান্ত নতুন একটি মামলায় টিনা হাজিরা দিয়েছেন।

Advertisement

গত বছরের অগস্ট মাসে আয়কর বিভাগ কালো টাকা বিরোধী আইনে অনিলকে নোটিস পাঠিয়েছিল। সুইস ব্যাঙ্কের দু’টি অ্যাকাউন্টে ‘অঘোষিত’ ৮১৪ কোটি টাকা রাখার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। আয়কর দফতর নোটিসে অনিলের বিরুদ্ধে ৪২০ কোটি টাকা কর ফাঁকির অভিযোগ এনেছিল। সেই সঙ্গে জরিমানাও করা হয় অনিলকে। যদিও গত মার্চে বম্বে হাই কোর্ট অনিলকে পাঠানো নোটিস এবং জরিমানার উপর স্থগিতাদেশ জারি করে।

ইয়েস ব্যাঙ্ককাণ্ডে বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে ২০২০ সালে অনিলকে তলব করেছিল ইডি। সেই সময় ইয়েস ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিইও রানা কপূর-সহ আরও কয়েক জনকে তলব করা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, ইয়েস ব্যাঙ্কের থেকে যে সব সংস্থা বিরাট পরিমাণে ঋণ নিয়েও শোধ করেনি, তাদের মধ্যে অনিলের সংস্থা অন্যতম। ইয়েস ব্যাঙ্ক অনিলের সংস্থাকে প্রায় ১২,৮০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছিল। তা সুদে-আসলে বেড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে। কিন্তু ঋণ শোধ হয়নি।

ইয়েস ব্যাঙ্ক ডুবতে বসার পরে ইডি তদন্তে নেমে দেখতে পায়, প্রাক্তন সিইও রানা বিভিন্ন সংস্থাকে ঝুঁকি সত্ত্বেও ঋণ পাইয়ে দেন। তার বিনিয়মে ঘুষ হিসেবে ওই সব সংস্থা রানার এবং তাঁর স্ত্রী-কন্যার মালিকানাধীন সংস্থায় টাকা ঢেলেছিল। সিবিআই এবং ইডি তদন্ত শুরু করার পরেই অনিলের সংস্থা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিল, রানা বা তাঁর স্ত্রী, কন্যার কোনও সংস্থার সঙ্গে তাদের কোনও লেনদেন নেই। ইয়েস ব্যাঙ্কের থেকে যে ঋণ নেওয়া হয়েছে, তার বিনিময়ে বন্ধক রাখা হয়েছে। স্বাভাবিক ব্যবসায়িক লেনদেনের নিয়ম মেনেই ঋণ নেওয়া হয়েছে। ইয়েস ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ করতেও সংস্থা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অনিলের গোষ্ঠী এই দাবি করলেও ইডি-কর্তাদের বক্তব্য, সংস্থার প্রধানকে ব্যাখ্যা করতে হবে কোন শর্তে তিনি এই ঋণ পেয়েছিলেন। এই ঋণের বিনিময়ে তাঁর সঙ্গে ইয়েস ব্যাঙ্ক বা তার কর্তাদের সঙ্গে আলাদা কোনও চুক্তি হয়েছিল কি না, তা-ও জানতে চাওয়া হবে। রানার আমলে ৭৮টি বড় গোষ্ঠী ইয়েস ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পেয়েছিল। যার প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা শোধ হয়নি। এর মধ্যে অনিল অম্বানী-সহ পাঁচটি বড় গোষ্ঠীর সঙ্গে লেনদেন নিয়ে তদন্ত করেছে সিবিআই এবং ইডি। সেই তদন্তের সূত্রেই বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের মামলায় মঙ্গলবার অনিলের স্ত্রী হাজিরা দিলেন ইডি দফতরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement