Amit Shah

আগামী সপ্তাহেই অমিত ঠাকুরনগরে, নিজেই ফোন করে আশ্বাস দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

অমিতের বঙ্গ সফর বাতিল হয়ে যাওয়ায় যাতে মতুয়ামহলে ক্ষোভ তৈরি না হয়, সে জন্য শনিবার সকালেই ঠাকুরনগরে চলে যান কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২১ ১৫:০০
অমিত-সফর বাতিল হওয়ায় নতুন করে শনিবার মতুয়াদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়।

অমিত-সফর বাতিল হওয়ায় নতুন করে শনিবার মতুয়াদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। নিজস্ব চিত্র

দিল্লিতে বিস্ফোরণ এবং তজ্জনিত পরিস্থিতিতে বাতিল হয়ে গিয়েছে অমিত শাহের বঙ্গ সফর। ভেস্তে গিয়েছে শনিবার তাঁর ঠাকুরনগরে আসার পরিকল্পনাও। কিন্তু খুব তাড়াতাড়িই ঠাকুরনগরে আসবেন অমিত। তিনি নিজেই বিজেপি-র শীর্ষনেতাদের শনিবার ফোন করে জানিয়েছেন সে কথা।

অমিতের বঙ্গ সফর বাতিল হয়ে যাওয়ায় যাতে মতুয়ামহলে ক্ষোভ তৈরি না হয়, সে জন্য শনিবার সকালেই ঠাকুরনগরে চলে যান রাজ্য বিজেপি-র পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সঞ্জীব বালিওয়াল। প্রাথমিক ভাবে তাঁরা বিক্ষোভের মুখেও পড়েছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি সামলে তাঁরা বৈঠকে বসেন বনগাঁর সাংসদ তথা মতুয়াদের ভক্তিকেন্দ্র ঠাকুরবাড়ির সদস্য শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই বৈঠক চলার সময়েই কৈলাসকে ফোন করেন অমিত। এবং জানান, আগামী সপ্তাহেই তিনি ঠাকুরনগরে আসছেন। যাতে বৈঠকে অংশগ্রহণকারী সকলে তাঁর কথা শুনতে পারেন, সে জন্য ফোনটি ‘লাউডস্পিকার’-এও দিতে বলেন অমিত। তার পর ওই আশ্বাস দেন। তবে কবে তিনি ঠাকুরনগরে আসবেন, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। অমিত ফোনে বলেন, দিনক্ষণ স্থির হলে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার নোটিসে তিনি বঙ্গ সফরে আসবেন। সভা করবেন ঠাকুরনগরেও।

Advertisement

শনিবার ঠাকুরনগরে অমিতের সমাবেশের অন্যতম লক্ষ্য ছিল নাগরিকপঞ্জি নিয়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের ক্ষোভ নিরসনের চেষ্টা। লোকসভা নির্বাচনের সময়ে সংশোধিত নাগরিক আইন (সিএএ) কার্যকর হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। মতুয়ারাও দু’হাত ভরে ভোট দিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থীদের। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই আইন চালু না হওয়ায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে মতুয়াদের মধ্যে। ক্ষুব্ধ বিজেপি সাংসদ শান্তনুও। করোনার টিকাকরণের কাজ শেষ হলে সিএএ কার্যকর হবে বলে বাংলায় এসে সাংবাদিক বৈঠকে অমিত ঘোষণা করলেও শান্তনুর দাবি ছিল, ঠাকুরনগরে গিয়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের সামনে তা বলতে হবে অমিতকে। শনিবার অমিত ঠাকুরনগরের সমাবেশ থেকে সেই সংক্রান্ত ঘোষণা করতে পারেন বলেই মনে করা হয়েছিল। কিন্তু সফর বাতিল হয়ে যাওয়ায় তা আর হল না।

বস্তুত, অমিত-সফর বাতিল হওয়ায় নতুন করে শনিবার মতুয়াদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। তৃণমূলের পক্ষ থেকেও প্রচার শুরু হয়। বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর বলেন, ‘‘কিছু বলার নেই বলেই আসছেন না অমিত শাহ।’’ নতুন করে ক্ষোভ তৈরি হতে পারে বুঝেই শনিবার কলকাতা থেকে ঠাকুরনগরে চলে যান কৈলাস, মুকুল এবং সঞ্জীব। শান্তনুকে নিয়ে বৈঠক শুরু করেন তাঁরা। সেখানে ছিলেন বিজেপি-র বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মানসপতি দেবও। তিনি পরে বলেন, ‘‘এখন আর কোনও ক্ষোভ নেই। খোদ অমিত’জি বৈঠকের মধ্যে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি আসছেন। কবে আসবেন সেটাও খুব তাড়াতাড়ি জানিয়ে দেবেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই আশ্বাসে সকলেই খুশি। কারও কোনও ক্ষোভ নেই।’’

শুক্রবার বেশি রাতে অমিতের সফর বাতিল হওয়ার খবর পাওয়া যায়। সেই কারণে অনেকেই শনিবার সকাল পর্যন্ত তা জানতে পারেননি। তাই অনেক দূর থেকে বহু মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ শনিবার সকাল থেকেই ঠাকুরনগরে আসতে শুরু করেন। সভা হচ্ছে না জানার পরে তাঁরা অনেকেই হতাশ হয়ে ফিরে যান। মানসপতি জানিয়েছেন, বিজেপি-র পক্ষে থেকে অমিতের আশ্বাসের কথা সকলকে জানানো হবে। বনগাঁ জেলা বিজেপি শনিবার থেকেই সেই প্রচার শুরু করে দিচ্ছে।

Advertisement
আরও পড়ুন