মণিপুরে টহল সেনার। —ফাইল চিত্র।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে নৃশংস আচরণ করার অভিযোগ উঠেছিল মণিপুরে মোতায়েন করা অসম রাইফেলসের জওয়ানদের বিরুদ্ধে। মূলত মেইতেই অধ্যুষিত জেলাগুলি থেকে অসম রাইফেলসকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি উঠেছিল। কুকি জনগোষ্ঠীর প্রতি পক্ষপাত দেখানোর অভিযোগেও সরব হয়েছিলেন কেউ কেউ। এই পরিস্থিতিতে মণিপুরের বিষ্ণুপুর জেলার মৈরাং লামখাইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পুলিশ চৌকি থেকে সরিয়ে দেওয়া হল অসম রাইফেলসের জওয়ানদের।
মণিপুর পুলিশের ডিজির তরফে প্রকাশিত একটি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, দ্রুততার সঙ্গে ওই পুলিশ চৌকিতে অসম রাইফেলসের পরিবর্তে দায়িত্ব নেবেন সিআরপিএফ জওয়ানেরা। তাঁদের সঙ্গে থাকবেন মণিপুর পুলিশের আধিকারিকেরাও। হিংসাকবলিত মণিপুরে সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক বার অসম রাইফেলসের বিরুদ্ধে নৃশংস আচরণ করার অভিযোগে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়েছে। বিষ্ণুপুর এবং চূড়াচাঁদপুর জেলায় এই বাহিনীর বিরুদ্ধে মিছিলও হয়েছে।
কয়েক দিন আগে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োয় দেখা যায়, অসম রাইফেলসের কাজের ধরন নিয়ে প্রকাশ্যেই প্রতিবাদ জানাচ্ছেন মণিপুর পুলিশের কয়েক জন কর্তা। যদিও আনন্দবাজার অনলাইন এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে অসম রাইফেলসের বক্তব্য, তারা কোনও অন্যায় কাজ করেনি। রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতেই যাবতীয় পদক্ষেপ করেছে।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রায় দু’শো জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়ার সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।