‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ মামলার তদন্তে গ্রেফতার এক রাশিয়ান। — প্রতীকী চিত্র।
‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ করে প্রতারণার অভিযোগ এক রাশিয়ানকে নিজেদের হেফাজতে নিল গুজরাত পুলিশ। ধৃতের নাম আনাতোলি মিরানভ। তিনি রাশিয়ার ওরেনবার্গের বাসিন্দা। পর্যটক সেজে এক ভারতে এসেছিলেন অভিযুক্ত। মহারাষ্ট্র পুলিশের সাইবার অপরাধ শাখার হাতে অতীতে গ্রেফতার হন। মিরানভ পুণের এক জেলে বন্দি ছিলেন। সেখান থেকেই তাঁকে এ বার নিজেদের হেফাজতে নিল গুজরাত পুলিশ। প্রতারণার তদন্তে উঠে এসেছে চিনা গ্যাংয়ের যোগও। পুলিশের দাবি, মিরানভ ওই চিনা গ্যাংয়ের হয়েই কাজ করতেন।
শুল্ক দফতরের আধিকারিক সেজে গুজরাতের আমদাবাদের এক ব্যবসায়ীকে ‘ডিজি়টাল গ্রেফতার’ করে প্রতারকেরা। অভিযোগ, ওই ব্যবসায়ীর থেকে ১৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। ওই মামলার তদন্তে নেমে এই রাশিয়ান নাগরিকের যোগসূত্র খুঁজে পায় পুলিশ।
সরাসরি ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’-এর সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও, ওই প্রতারণা চক্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ছিল মিরানভের উপর। সাধারণত সাইবার প্রতারকেরা নিজেদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেন না টাকা হাতানোর সময়ে। এ ক্ষেত্রে অন্য কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টকে তাঁরা ব্যবহার করেন। আমদাবাদের সহকারী পুলিশ কমিশনার (সাইবার) হার্দিক মাকাদিয়া জানিয়েছেন, যাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি প্রতারণার কাজে ব্যবহার হত, সেগুলির উপর নজর রাখতেন মিরানভ। এটিই ছিল তাঁর দায়িত্ব। পরে সেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি থেকে টাকা বার করে সেগুলিকে অন্য বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে সরাতেন তিনি। কিছু ক্ষেত্রে তা ক্রিপ্টোকারেন্সিতেও বদলে দেওয়া হত।
এই মামলার ক্ষেত্রে প্রথমে মেহফুলআলম শাহ নামে এক ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ওই ১৭ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন প্রতারকেরা। সাইবার জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে যুক্ত নাদিম পাঠান নামে অপর এক ‘এজেন্ট’ এ বিষয়ে মেহফুলকে রাজি করিয়েছিলেন। তাঁদের দু’জনকেই ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের জেরা করে উঠে আসে মিরানভের নাম।
পুলিশ জানিয়েছে, এই প্রতারণা সঙ্গে একটি চিনা গ্যাং জড়িত রয়েছে। মিরানভ ওই চিনা গ্যাংয়ের হয়েই কাজ করতেন। মেহফুলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৭ লক্ষ টাকা যাওয়ার পর মেহফুল এবং নাদিম উভয়কেই মুম্বইয়ের এক হোটেলে ডেকে পাঠান মিরানভ। সেখানে বসেই ওই প্রতারণার অঙ্ক অন্য কিছু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরিয়ে দেন তিনি। কিছু টাকা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বদলে ফেলেন।