অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ছবি: পিটিআই।
ছোট্ট কুঠুরি। তার মেঝেতে পাতা ছিল দু’টি গদি। গ্রেফতারির পর দিল্লিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র সদর দফতরে সেই ছোট্ট কুঠুরিতেই রাত কেটেছে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের। এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার একটি সূত্র।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে কেজরীওয়ালের বাসভবনে তল্লাশি শুরু করে ইডি। রাত ৯টা নাগাদ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। বাড়ি থেকে গ্রেফতারের পরেই দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয় কেজরীকে। ইডি সূত্রে খবর, সেখানে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়, কী কী ওষুধ তিনি খান? অন্য কোনও প্রয়োজন রয়েছে কি না, তা-ও জানতে চাওয়া হয় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। ছোট কুঠুরিতে সিসি ক্যামেরা বসানো রয়েছে। সেই ক্যামেরার ফুটেজে রাত-দিন নজর রাখার জন্য দু’জন আধিকারিক নিয়োগ করা হয়েছে। ইডির একটি সূত্র বলেছে, ‘‘নিরাপত্তার কারণে বাইরের খাবার দেওয়ার অনুমতি দিই না। সদর দফতরের ভিতরের ক্যান্টিন থেকে খাবার দেওয়া হয়েছে।’’
দিল্লির আবগারি নীতি মামলায় গত বছর একটি সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করেছিল ইডি। তাতে দাবি করেছিল, এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সমীর মহেন্দ্রুর সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা বলেছিলেন কেজরীওয়াল। সেখানে অন্য এক অভিযুক্ত বিজয় নায়ারের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন। ইডির চার্জশিটে মহেন্দ্রুর বয়ানও রয়েছে। মহেন্দ্রুর দাবি, বিজয় তাঁকে জানিয়েছিলেন, দিল্লির নতুন আবগারি নীতি কেজরীওয়ালের ‘মস্তিষ্কপ্রসূত’। দু’বার কেজরীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক করার ব্যবস্থাও করে দিয়েছিলেন বিজয় মহেন্দ্রুর দাবি, শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। তাই ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে দু’জনের কথা হয়।
চার্জিশিটে ইডি আরও দাবি করে, আবগারি নীতির রূপায়ণের নেপথ্যে ছিলেন আপের শীর্ষনেতারা। ‘বেআইনি অনুদান সংগ্রহ’-এর জন্যই এই নীতি তৈরি করা হয়েছিল। তার সপক্ষে প্রমাণ হিসাবে দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সিসৌদিয়ার সচিব সি অরবিন্দের বয়ানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ইডির সাপ্লিমেন্ট চার্জশিটে সেই বয়ান নথিবদ্ধ করা হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, ২০২১ সালের মার্চে এই নীতি নিয়ে মন্ত্রীদের রিপোর্টের খসড়া তাঁকে দেওয়া হয়েছিল। কেজরীওয়ালের বাড়িতে তাঁকে ডেকে সেই রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। চলতি সপ্তাহের শুরুতে বিআরএস নেত্রী কবিতাকে এই মামলায় গ্রেফতার করে ইডি। তখন তারা দাবি করে, এই মামলায় ‘ষড়যন্ত্রী’ হলেন কেজরীওয়াল।