(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী এবং অরবিন্দ কেজরীওয়াল (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
দিল্লির নির্বাচনের মুখে রবিবার প্রায় ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘নমো ভারত’ করিডরের (রেল লাইনের) উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ৪০ মিনিটে দিল্লি থেকে মীরট পৌঁছে যাওয়া যাবে এই পথ ধরে। আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়ালের দাবি, দিল্লির সরকার কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতা করছে বলেই মোদী এই প্রকল্পগুলি উদ্বোধন করতে পারলেন।
সামনেই দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। নির্ঘণ্ট এখনও ঘোষণা না হলেও ভোটের উত্তাপ এখন থেকে টের পাওয়া যাচ্ছে দিল্লিতে। চলছে আক্রমণ, প্রতি আক্রমণ। কেজরীওয়ালের আপকে খোঁচা দিয়ে ‘আপ-দ’ বলে বিঁধছেন মোদী, অমিত শাহেরা। রবিবারও ‘আপ-দ’ মুক্ত দিল্লি গড়ার ডাক দিয়েছেন মোদী। আপ সরকারের কোনও দূরদর্শিতা নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। মোদী বলেন, “দিল্লির নগরোন্নয়ন পরিকল্পনা এমন হওয়া উচিত, যা গোটা বিশ্বের কাছে নিদর্শন হয়ে থাকবে। কিন্তু ‘আপ-দ’ সরকারের কোনও ভাবনাচিন্তা নেই এ বিষয়ে। কেন্দ্রে বিজেপি শাসিত সরকারই রাজধানীর উন্নতি করছে।”
মোদীর এই মন্তব্যের পর বিকেলেই জবাব দিলেন কেজরী। আপ প্রধানের বক্তব্য, এই প্রকল্পগুলি কেন্দ্রীয় সরকার এবং আপ প্রশাসনের সহযোগিতার ফসল। তিনি বলেন, “যাঁরা বলে বেড়ান আপ শুধু লড়াই করতে ব্যস্ত থাকে, এ দিনের জোড়া উদ্বোধন তাদের মুখের উপর জবাব।” বস্তুত, এ বারের বিধানসভা ভোটের আগে আপকে নাগাড়ে আক্রমণ শুরু করেছে বিজেপি। সম্প্রতি আপ সরকারের বিরুদ্ধে ‘আরোপপত্র’ (‘চার্জশিট’) প্রকাশ করেছে তারা। তাতে গত এক দশকে আপ নেতৃত্বের ‘প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থতা’র প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে।
মোদীর রবিবারের বক্তৃতাতেও বার বার উঠে এসেছে আপ সরকারের গত এক বছরের ‘খামতি’র কথা। বিকেলে আপ প্রধান পাল্টা দাবি করেন, তাঁর দলের শীর্ষ নেতৃত্বদের জেলে পাঠানো হয়েছে, অত্যাচার করা হয়েছে। তবু প্রশাসন নিজের লক্ষ্যে স্থির থেকেছে। তাঁর বক্তব্য, কী ভাবে মানুষের জন্য কাজ করা যায়, সেটিকেই গত ১০ বছরের আপ জমানায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়েছে।
দিল্লিতে ফেব্রুয়ারি মাসে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা থাকলেও এখনও নির্বাচন কমিশন দিনক্ষণ ঘোষণা করেনি। আগামী ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোটার তালিকা সংশোধন, পরিমার্জনের কাজ চলবে সেখানে। তার পরেই ঘোষণা করা হবে ভোটের নির্ঘণ্ট। বিরোধীদের একাংশের অভিযোগ, ভোটের আগে মোদীকে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি উদ্বোধনের সুযোগ করে দিতেই ভোট ঘোষণায় বিলম্ব করা হচ্ছে। ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দিল্লির ৭০টি আসনের মধ্যে ৬২টি আসনে জয়ী হয়েছিল আপ। বিজেপি পেয়েছিল আটটি আসন। তবে গত বছরের লোকসভা ভোটে দিল্লি থেকে কোনও সাংসদ পায়নি আপ। সাতটি আসনের সাতটিই গিয়েছে বিজেপির দখলে।