Air pollution

গ্রামের মহিলাদের স্বাস্থ্যরক্ষায় রান্নাঘরের দূষণ কমাতে একাই এগিয়ে এলেন ঝাড়খণ্ডের সুমন

রান্নার গ্যাসের বিকল্প হিসেবে পরিবেশবান্ধব সৌরশক্তিচালিত রান্নাঘর গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ঝাড়খণ্ডের লোহারদাগা জেলায়।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
ঝাড়খণ্ড শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২২ ১৮:৩১
রান্না করার সময় উনুন থেকে নির্গত ধোঁয়া থেকে প্রায়ই শ্বাসকষ্ট, চোখ জ্বালা, গলা জ্বালার মতো উপসর্গগুলি দেখা যায়।

রান্না করার সময় উনুন থেকে নির্গত ধোঁয়া থেকে প্রায়ই শ্বাসকষ্ট, চোখ জ্বালা, গলা জ্বালার মতো উপসর্গগুলি দেখা যায়। ছবি : ইনস্টাগ্রামের পাতা থেকে।

ঝাড়খণ্ডের একটি জেলা লোহারদাগা। সেখান থেকে ৮০ কিলোমিটার ভিতরে প্রত্যন্ত হেন্ডলাসো গ্রামে সাত সদস্যের পরিবার নিয়ে থাকেন বছর ৪৮-এর সুমন বর্মা কুজরা। জ্বালানীর জন্য মূলত বনের কাঠ, শুকনো পাতা, ডালপালার উপরই নির্ভর করতে হত তাঁদের।

রান্না করার সময় উনুন থেকে নির্গত ধোঁয়া থেকে প্রায়ই শ্বাসকষ্ট, চোখ জ্বালা, গলা জ্বালার মতো সাধারণ উপসর্গগুলিকে খুব একটা গুরুত্ব দেননি সুমন।

Advertisement

রান্নাঘরের দূষণ থেকেও শারীরিক সমস্যা হতে পারে, যে সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই সুমনের মতো অনেক মহিলারই, যাঁরা দিনের বেশির ভাগ সময়ই রান্নাঘরে অতিবাহিত করেন। সংবাদমাধ্যমকে সুমন জানিয়েছেন, ‘‘উনুনের ধোঁয়া থেকে এত রোগ হতে পারে, এ কথা আমি আগে কোনও দিন শুনিনি।’’

২০২০ সালে ঝাড়খণ্ডের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দ্বারা আয়োজিত ‘বায়ু দূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন’ শীর্ষক একটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে দূষণ সম্পর্কে ধারণা বদলে যায় সুমনের। তার পর থেকে সুমন উদ্যোগ নিয়ে ওই গ্রামের সমস্ত মহিলাকে এই বিষয়ে অবহিত করেন। ঘরের মধ্যে বায়ুর গুণগত মান কেমন, তা মাপার যন্ত্রও সরবরাহ করা হয় ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে।

সুমন নিজের রান্নাঘরের দূষণের মাত্রা মাপতে গিয়ে দেখতে পান, সেখানে তা অস্বাভাবিক হারে বেশি। প্রাথমিক ভাবে সমাধান হিসেবে ‘ক্রস ভেণ্টিলেশন’ পদ্ধতির নিদান দেওয়া হয়েছিল বায়ু দূষণ সংক্রান্ত ওই অনুষ্ঠানে। পাশাপাশি জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছিল।

সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সুমনের ডাকে সাড়া দিয়ে প্রায় ৪০০ মহিলা এই কাজে নিযুক্ত হয়েছেন। তাঁদের নিয়ে একটি স্বনির্ভর দল তৈরি করেছেন সুমন। যাঁরা প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে প্রতিনিয়ত দূষণ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে থাকেন। সরকারি সাহায্যে রান্নার গ্যাস পাওয়া গেলেও দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী ঝাড়খণ্ডের বেশির ভাগ মানুষ এখনও কাঠ বা কয়লার উপর নির্ভরশীল।

‘‘রান্নার গ্যাসের বিকল্প হিসেবে পরিবেশবান্ধব সৌরশক্তিচালিত রান্নাঘর গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।এখনও প্রায় সাড়ে চার হাজার মহিলাকে এই সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। এই কর্মসূচি আমরা আমাদের গ্রাম থেকেই শুরু করলাম,’’ জানালেন সুমন।

আরও পড়ুন
Advertisement