শীতের দিনে শিশুকে কী কী খাওয়ালে সুস্থ থাকবে? ছবি: ফ্রিপিক।
শীত মানেই উৎসব, পার্টির মরসুম। আর উৎসব মানেই জমিয়ে ভূরিভোজ। ঠান্ডা যত বাড়বে, ততই কেক-পেস্ট্রি, হট চকোলেট, চপ-কাটলেট খেতে মন চাইবে। খুদেরাও এই সময়ে ভালমন্দ খাওয়ার জন্য বায়না করে। বড়দিন হোক বা বছরশেষের পার্টি, অথবা নববর্ষের অনুষ্ঠান, নিয়ম ভেঙে খাওয়াদাওয়া হবেই। তাই মাঝের দিনগুলি পুষ্টিকর খাবার খেয়েই শরীর সুস্থ রাখুন। বিশেষ করে বাড়ির খুদে সদস্যেরা বায়না করলেই কেক বা পেস্ট্রি, চকোলেট খাওয়াবেন না। বরং শীতের সময়ে ছোটদের কী কী খাওয়ালে তারা সুস্থ থাকবে, জেনে নিন।
শীতের সময় খিদেটা একটু বেশিই পায়। আবার এই সময়ে জল পিপাসা কিছুটা কমে যায়। তাই খেয়াল রাখবেন, খুদে পর্যাপ্ত জল খাচ্ছে কি না। বয়স অনুপাতে দিনে পরিমাণ মতো জল খেতেই হবে। পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তীর মতে, শীতের সময়ে তরল খাবার বেশি খাওয়া ভাল। স্যুপ, ফলের রস শিশুকে খাওয়ানো জরুরি।
শীতের সময়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তাই ডায়েটে এমন খাবার রাখতে হবে, যাতে ফাইবারের পরিমাণ বেশি। শম্পার পরামর্শ, এই সময়ে শিশুকে আটা বা ময়দার রুটি, পরোটা না দিয়ে বরং রাগি বা বাজরার রুটি বানিয়ে দিন। সকালের জলখাবারে ওট্সের চিল্লা বেশ স্বাস্থ্যকর। রাগি দিয়েও পরোটা বানিয়ে দিতে পারেন। তেলের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে রাখলে কোনও সমস্যা নেই।
ডালের মধ্যে মুগ, ছোলা, সয়াবিনও সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। কম মশলা দিয়ে হালকা করে ডাল রেঁধে দিন। এখন শীতের দিনে বাজারে নানা রকম সব্জি পাওয়া যাচ্ছে। সব্জি দিয়ে ডালও ভাল খেতে পারে শিশু। শাকসব্জি ও ডাল থেকে পর্যাপ্ত প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ঢুকবে শরীরে।
পুষ্টিবিদেরা বলছেন, রোজের খাবারে দারচিনি, এলাচ, লবঙ্গ, আদা, হলুদ, রসুন, গোলমরিচের মতো মশলা ব্যবহার করলে ভাল। রান্নায় ব্যবহৃত বেশির ভাগ মশলাতেই অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস রয়েছে ভরপুর। খাবার হজম করতে সাহায্য করাও আর একটি প্রধান কাজ এ সব মশলার। গোটা গরমমশলা বা গুঁড়ো ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন আমিষ এবং নিরামিষ রান্নায়। সবক’টির মধ্যেই অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণ রয়েছে। দারচিনি, লবঙ্গে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এটি ওজন কমায়, আবার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।
দোকান থেকে কেনা প্যাকেটজাত স্যুপ নয়, শিশুকে সব্জি বা চিকেন দিয়ে স্যুপ রেঁধে খাওয়ান। প্যাকেটজাত খাবার বা প্রক্রিয়াজাত মাংস সংরক্ষণের জন্য এমন রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই টাটকা মাংস কিনে স্যুপ বা স্ট্যু বানিয়ে খাওয়াই ভাল। শিশু বাইরের খাবার খেতে চাইলে, ভাজাভুজি নয় বরং গ্রিল্ড বা রোস্টেড খাবারই দিন।
বিকেলের দিকে খিদে পেলে মুখরোচক নোনতা খাবার নয়, বরং শিশুকে দিন নানা রকম বাদাম, বীজ, ড্রাই ফ্রুট্স। কাঠবাদাম, আখরোট, কম নুন দেওয়া কাজু খেতে পারে শিশু। সূর্যমুখীর বীজ, তিসির বীজ, চিয়া বীজও স্বাস্থ্যকর। তবে শিশুর বাদামে অ্যালার্জি আছে কি না আগে দেখে নেবেন। তা হলে চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ মতোই খাওয়াতে হবে।