বদহজম না কি হার্টের অসুখ, ধরবেন কী উপায়ে। ছবি: ফ্রিপিক।
বুকে চিনচিনে ব্যথা হচ্ছে সব সময়? না কি মাঝেমধ্যে চাপ চাপ ব্যথার অনুভূতি হচ্ছে? মনে হচ্ছে, কেউ যেন কয়েক মন ভারী পাথর বসিয়ে দিয়েছে। বুকে ব্যথা হলেই হৃদ্রোগ বলে ভেবে নেন অনেকেই। আতঙ্কিতও হন। কিন্তু বুকে ব্যথার কারণ অনেক হতে পারে। এই বিষয়ে চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলছেন, “হার্টের অসুখের প্রধান উপসর্গই হল বুকে ব্যথা যার সঙ্গে বদহজম বা গ্যাসের ব্যথার মিল আছে। তাই অনেকেই বুকে ব্যথাকে গ্যাসের ব্যথা ভেবে এড়িয়ে যান। অ্যান্টাসিডও খেয়ে ফেলেন যাতে হিতে বিপরীত হতে পারে। আবার উল্টোটাও হয়। গ্যাসের ব্যথাকে হার্ট অ্যাটাকের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে আতঙ্কে ভুগতে থাকেন।”
বুকে চিনচিনে ব্যথা হোক বা চাপ চাপ ব্যথা, কোন ব্যথা কী কারণে হচ্ছে, তা বোঝা খুব জরুরি। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ তো নিতেই হবে, তা ছাড়া কিছু উপসর্গও চিনে রাখতে হবে।
বদহজমের ব্যথার লক্ষণ কী কী
চিকিৎসক জানাচ্ছেন, ‘অ্যাসিড রিফ্লাক্স’ হয় অনেকের। তখন মনে হয় গলার কাছে কিছু দলা পাকিয়ে রয়েছে। খাদ্যনালি দিয়ে অ্যাসিড উঠে আসতে থাকে গলার কাছে। প্রচণ্ড জ্বালা হয়। সেই সঙ্গে বুকে-পিঠে ব্যথা করতে থাকে। যদি বুকে ব্যথার পাশাপাশি গলার কাছে কিছু দলা পাকিয়ে আছে মনে হয়, তা হলে বুঝতে হবে তা অম্বলের জন্য হচ্ছে।
তা ছাড়া আরও কিছু লক্ষণ দেখা দেবে, যেমন— অল্প কিছু খেলেই পেট ফুলে যাবে, পেটে যন্ত্রণা হতে পারে। খাওয়ার পরেই বমি বমি ভাব থাকবে। ঘন ঘন পেটখারাপ হতে থাকবে।
‘অ্যাসিড রিফ্লাক্স’-এর কারণে বুকে প্রচণ্ড জ্বালা করতে থাকে। চিকিৎসক বলছেন, অনেকেই ভেবে বসেন হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। আসলে অতিরিক্ত অম্বলের কারণে খাদ্যনালি দিয়ে যখন অ্যাসিড উঠতে থাকে তখন খাদ্যনালি সঙ্কুচিত হয়ে যায়। সেখানে প্রদাহ হতে থাকে। অনেকের আবার কাশি শুরু হয়, ক্রমাগত হেঁচকি উঠতে থাকে। শ্বাসের সমস্যাও দেখা দেয়।
হৃদ্রোগের ব্যথার লক্ষণ আলাদা
সুবর্ণের কথায়, হৃদ্রোগের কারণে ব্যথা হলে তার উপসর্গ কিছু আলাদা। তখন বুকের মাঝখানে ব্যথা শুরু হবে। মনে হবে বুকে চাপ ধরছে। এই ব্যথা যদি বুক থেকে ঠেলে গলার দিকে উঠতে শুরু করে, সেই সঙ্গে হাতেও ব্যথা শুরু হয় তা হলে সাবধান হতে হবে। ব্যথার সঙ্গেই দরদর করে ঘাম হতে পারে। ব্যথা ধীরে ধীরে পিঠের দিকেও যাবে। চোয়াল ও কাঁধেও ব্যথা শুরু হবে। তখন হাত-পা ঠান্ডা হতে শুরু করবে। হৃৎস্পন্দনের হার বেড়ে যাবে। এই সব উপসর্গ দেখা দিলে বুঝতে হবে সেটি হার্ট অ্যাটাকের পূর্বলক্ষণ। তখন এক মুহূর্তও সময় নষ্ট না করে, কাছাকাছি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে রোগীকে।