Shortness of Breath and Asthma

হাঁপানির টান, শ্বাসকষ্ট সামলেও ঠাকুর দেখতে পারেন সিওপিডি-র রোগীরা, শুনে নিন চিকিৎসক কী বলছেন?

পুজোর ভিড়ে ধাক্কাধাক্কি করে ঠাকুর দেখতে গিয়ে যদি হাঁপানির টান ওঠে বা শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, তা হলেই মুশকিল। তাই বলে কি হাঁপানি বা সিওপিডি-র রোগীরা ঠাকুর দেখবেন না?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৪ ১১:৩৫
What to do at home for an asthma attack during this festive season

ফুসফুস বাঁচিয়ে ভিড়ে ঠাকুর দেখুন, পরামর্শ দিলেন চিকিৎসক। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

কখনও ভ্যাপসা গরম, আবার পরক্ষণেই বৃষ্টি। তাপমাত্রার কমা-বাড়ায় রোগজীবাণুরও বাড়বাড়ন্ত হয়। আর যদি হাঁপানি বা অ্যালার্জির ধাত থাকে, তা হলে তো কথাই নেই। আবহাওয়ার পরিস্থিতি যা-ই থাকুক, শরীরের গতিপ্রকৃতিও যেমনই হোক, পুজোয় ঠাকুর দেখা চাই-ই চাই। তবে যাঁদের হাঁপানির টান ওঠে, শ্বাসকষ্ট হয় অথবা সিওপিডি রয়েছে, তাঁদের সামলে চলতেই হবে। পুজোর ভিড়ে ধাক্কাধাক্কি করে ঠাকুর দেখতে গিয়ে যদি হাঁপানির টান ওঠে বা শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, তা হলেই মুশকিল। তাই বলে কি হাঁপানি বা সিওপিডি-র রোগীরা ঠাকুর দেখবেন না? একেবারেই নয়। শুধু জেনে নিন, চিকিৎসক কী বলছেন।

Advertisement

মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “পুজোয় প্যান্ডেলে-প্যান্ডেলে ধূপ-ধুনো দিয়ে আরতি হয়। অনেক সময়ে বদ্ধ প্যান্ডেলের কারণে সেই ধোঁয়া বাইরে বেরোতে পারে না। হাঁপানির রোগীদের সেটা খেয়াল রাখতে হবে। যখন ধূপ-ধুনো দিয়ে আরতি শুরু হবে, সেই সময়ে বাইরে থাকুন।” ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে এই বিষয়টিও মাথায় রাখুন। প্রয়োজনে কোনও বদ্ধ প্যান্ডেলে ঢোকার আগে ভাল করে দেখে নিন, ভিতরে ধোঁয়া আছে কি না। বাড়িতে পুজো হলে বা পাড়ার পুজোতে ধুনো দেওয়ার সময় সেখান থেকে দূরে থাকুন। খুব বেশি ভিড় থাকলে সেখানে যাবেন না। আর সঙ্গে অতি অবশ্যই ইনহেলার রাখতে হবে।

ঋতু পরিবর্তনের এই সময় হাঁপানির প্রকোপ বাড়ে। দূষিত বাতাস, ফুলের রেণু, ধোঁয়া, ধুলোতে শ্বাসের সমস্যাও বাড়ে। সিওপিডির রোগীদের এই সময়টাতেই কষ্ট বাড়ে। রাস্তায় বেরোলে ধুলো-ধোঁয়া নাকে ঢুকবেই। সে জন্য মাস্ক পরা খুব জরুরি। কেউ যদি সামনে ধূমপান করেন, তা হলে সেখান থেকে সরে আসুন। নিয়ম মানলেই সুস্থ শরীরে পুজো আনন্দে কাটাতে পারবেন।

পুজোয় কী কী নিয়ম মানলে সুস্থ থাকবেন?

১) হাঁপানি, সিওপিডি বা অ্যালার্জির ধাত থাকলে মাস্ক পরতেই হবে। ভিড়ে যখন যাবেন, অবশ্যই মাস্ক পরে নেবেন।

২) বাইরে থেকে এসে ভাল করে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। ব্যাগে স্যানিটাইজ়ার রাখলে খুব ভাল হয়।

৩) রোজের খাওয়া এমন হতে হবে, যাতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ে। ফুসফুসের জোরও বাড়াতে হবে। প্রোটিন রাখতেই হবে রোজের তালিকায়। মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, দুধ, বাদাম, শাক ইত্যাদি প্রোটিনে সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। পর্যাপ্ত জল খেতে হবে, যাতে শরীর আর্দ্র থাকে।

৪) ঘন ঘন দুধ চা বা কফি খাবেন না। বাইরে বেরোলে নরম পানীয়, ঠান্ডা শরবত বা আইসক্রিম ভুলেও খাবেন না। যদি শ্বাসকষ্ট হয় বা হাঁপানির টান ওঠে, তা হলে ঈষদুষ্ণ জলে একচিমটে নুন ফেলে খেতে পারেন। তাতেও আরাম পাবেন।

৫) যে সব বয়স্ক মানুষ হাঁপানিতে ভুগছেন, তাঁদের প্রত্যেকের উচিত বাধ্যতামূলক ভাবে নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নেওয়া।

৬) শ্বাসনালি ও ফুসফুস ভাল রাখতে নিয়ম করে ব্রিদিং এক্সারসাইজ় করুন। সারা বছরই হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

এই বিষয়ে যোগাসন প্রশিক্ষক অনুপ আচার্য বলছেন, “ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণে ফুসফুসই আগে আক্রান্ত হচ্ছে। তা ছাড়া এখন মানুষজন শরীরচর্চার অভ্যাস কমিয়ে দিয়েছেন। তাই বিভিন্ন রোগ চেপে বসছে অকালেই।” ফুসফুস ভাল রাখতে বাড়িতে বসেই কিছু ব্যায়াম করুন।

১) প্রথম করা উচিত অনুলোম-বিলোম। প্রথমে ডান দিকের নাকের ছিদ্র চেপে ধরে, বাঁ দিক দিয়ে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার কাজ করতে হবে। পরে বাঁ দিকের নাকের ছিদ্র চেপে ধরে, ডান দিক দিয়ে শ্বাসগ্রহণ ও বর্জনের অভ্যাস করতে হবে।

২) এর পরে করে নিন কপালভাতি। আরামদায়ক কোনও একটি আসনের ভঙ্গিতে বসুন। মাথা ও মেরুদণ্ড সোজা রাখুন। স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে শ্বাস নিন। শ্বাস ছাড়ার সময় পেটের পেশির উপর চাপ দিতে হবে। দ্রুত শ্বাস নিতে ও ছাড়তে হবে। নিয়মিত করলে শ্বাসের সমস্যা কমে যাবে।

আরও পড়ুন
Advertisement