Sleep Disorders

ঘুমের মধ্যে হাত-পা, শরীর আড়ষ্ট, দম আটকে আসে? কোনও রোগ বাসা বেঁধেছে কি, সারবে কিসে?

ঘুমের মধ্যে বোবায় ধরছে? এটা কি কোনও রোগ? কেন হয়, সারবে কী করে?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২৪ ১১:৪৩
What is sleep paralysis and how to avoid it

এই কষ্টকর পরিস্থিতি থেকে রেহাই মিলবে কী ভাবে? ছবি: সংগৃহীত।

ছোটবেলায় ঠাকুমা-দিদিমাদের মুখে শুনে থাকবেন বোবায় ধরার কথা। ঘুমের মধ্যে কারও বিকট গোঙানির আওয়াজ পেলে তখন বলা হত ‘বোবায় ধরেছে’। গ্রামেগঞ্জে এই কথাটা খুব প্রচলিত হলেও, শহরেও যে নেই তা নয়। অনেকেই আবার এর সঙ্গে ভূত-প্রেত, দানব ইত্যাদির গল্প জুড়ে দেন। আসলে বোবায় ধরা কোনও অতিলৌকিক ঘটনা নয়, এক রকম স্নায়বিক স্থিতি, যা ঘুমের মধ্যে হতে পারে। খুবই কষ্টকর পরিস্থিতি। চিকিৎসার পরিভাষায় একে বলা হল ‘স্লিপ প্যারালিসিস’। মনে হয় গোটা শরীর অবশ হয়ে গিয়েছে। হাত-পা নাড়ানোর ক্ষমতাও থাকে না। শ্বাস বন্ধ হয়ে আসতে থাকে। কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট অবধি স্থায়ী হতে পারে এই স্থিতি।

Advertisement

ঘুম ও জেগে থাকার মাঝামাঝি একটা পর্যায়ে যখন মস্তিষ্ক খুব সজাগ থাকে, সে সময়েই এমন পক্ষাঘাত হতে পারে। ঘুম যখন গভীরে পৌঁছয়নি, মস্তিষ্ক সক্রিয় রয়েছে তখনই মানুষ স্বপ্ন দেখে। তেমনই একটি পর্যায়ে যদি পেশিশক্তি কমতে থাকে, মস্তিষ্ক থেকে সঙ্কেত পেশিতে ঠিক মতো না পৌঁছয়, তখন পেশির অসাড়তা দেখা যায়। অনেকের আবার এই সময়ে দৃষ্টিবিভ্রমও হয়। মনে হয় চারদিকে আবছায়া ঘুরে বেড়াচ্ছে।

স্লিপ প্যারালিসিস থেকে পরিত্রাণের উপায় আছে কি?

এই বিষয়ে মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘স্লিপ প্যারালিসিস’ হওয়ার নির্দিষ্ট বয়স নেই। এই পরিস্থিতি যে কোনও বয়সেই হতে পারে। প্রচণ্ড মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ভুগলে স্নায়বিক অসাড়তা দেখা দিতে পারে। তাই এই অবস্থা থেকে রেহাই পেতে মন ভাল রাখা খুব জরুরি। সে জন্য রাতে শোয়ার আগে নিয়ম করে ধ্যান বা মেডিটেশন করতে হবে। অন্তত ১৫ মিনিট মেডিটেশন করলে উদ্বেগ অনেকটা কমবে, মন শান্ত হবে।

ঘুমোনোর আগে অতিরিক্ত নেশা করলেও এমন হতে পারে। রাতে ঘন ঘন চা বা কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকলেও ঘুমের সমস্যা হয়। তার থেকেও ‘স্লিপ প্যারালিসিস’ হতে পারে। তাই ঘুমোনোর আগে অ্যালকোহল বা অতিরিক্ত ক্যাফিন আছে, এমন খাবার বা পানীয় না খাওয়াই ভাল।

অল্পবয়সিরা আজকাল স্মার্টফোন, কম্পিউটারে ডুবে থাকে। রাতে বিছানাতেও দীর্ঘ সময় ফোন ঘাঁটাঘাঁটি করে। এই সমস্ত কিছুই ঘুমের নিয়মিত ও স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে নষ্ট করে, যার পরিণতিতে ‘স্লিপ প্যারালিসিস’ হতে পারে। অনিন্দিতার পরামর্শ, ঘুমনোর অন্তত ঘণ্টা দুয়েক আগে থেকে সমস্ত বৈদ্যুতিন গ্যাজেট দূরে রাখতে হবে। রাতে নির্দিষ্ট সময়েই ঘুমোনোর চেষ্টা করতে হবে। ৬-৮ ঘণ্টা টানা ঘুম দরকার। প্রতি দিন রাতে একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং সকালে একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে জেগে ওঠার অভ্যাস করলে এই সমস্ত সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement