ড্রাই আইস ভাল না খারাপ? ছবি: সংগৃহীত।
জল নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় অর্থাৎ হিমাঙ্কের নীচে রেখে বরফ জমানো বেশ ঝক্কির। তাই বড় বড় হোটেল, রেস্তরাঁ, গবেষণাগারে তার পরিবর্ত হিসাবে ‘ড্রাই আইস’ ব্যবহার করা হয়। এই ড্রাই আইস বা শুকনো বরফের মূল উপাদান হল কার্বন-ডাই-অক্সাইড। তাই এর ব্যবহার খুব সীমিত। সম্প্রতি, গুরুগ্রামের এক রেস্তরাঁয় খাবার খাওয়ার পর তাঁদেরই দেওয়া মাউথ ফ্রেশনার দিয়ে মুখ ধুয়ে হঠাৎ রক্তবমি করতে শুরু করেন পাঁচ জন। তদন্তের পর জানা যায়, মাউথ ফ্রেশনারটি ঠান্ডা রাখার জন্য তার মধ্যে ড্রাই আইস ব্যবহার করা হয়েছিল। কোনও ভাবে তা পেটের মধ্যে যেতেই এই বিপত্তি ঘটে। ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এফএসএসএআই) এবং সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-এর তরফে ‘ড্রাই আইস’এর ব্যবহার নিয়ে নানা রকম নির্দেশিকাও রয়েছে।
ড্রাই আইস আসলে কী?
শুকনো বরফ বা ড্রাই আইস আসলে জমাট বাঁধা কার্বন-ডাই-অক্সাইড। যার তাপমাত্রা -৭৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস থেকে যা সরাসরি জমাট বেঁধে যায়। তরল করার প্রয়োজন পড়ে না। যেখানে বরফের ব্যবহার করা সম্ভব নয়, সেখানে ফ্রিজিং বা কুলিংয়ের কাজে ব্যবহার করা হয় এই ড্রাই আইস। চিকিৎসা, খাদ্য সংরক্ষণ, গবেষণার মতো ক্ষেত্রে এই বরফের ব্যবহার দেখা যায়।
এই বরফ পেটে গেলে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে?
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বড় বড় রেস্তরাঁ কিংবা পানশালায় ইদানীং এই ধরনের বরফের ব্যবহার বেড়েছে। তবে এই ধরনের বরফ যথেচ্ছ ভাবে ব্যবহার করা যায় না। শুকনো বরফের মধ্যে থাকা কার্বন-ডাই-অক্সাইড ফুসফুসে প্রবেশ করলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে। ত্বকের ক্ষতি হওয়াও অস্বাভাবিক নয়। বেশি ক্ষণ ধরে ত্বকের সংস্পর্শে থাকলে কোল্ড বার্ন বা ফ্রস্টবাইট হওয়া অবশ্যম্ভাবী। তবে, ত্বকের সংস্পর্শে আসার চেয়েও ওই ধরনের বরফ খাওয়া অনেক বেশি বিপজ্জনক। মুখের মধ্যে দিয়ে এই বরফ শরীরে প্রবেশ করার সময়ে তা খাদ্যনালী এবং পাকস্থলীর টিস্যুগুলিকে হিমায়িত করে ফেলে। ফলে শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই ড্রাই আইস ব্যবহার করতে হলে বদ্ধ ঘরে থাকা চলে না। হাতে গ্লাভ্স পরে বরফ ধরার চিমটে দিয়েই তা ধরা উচিত।