Dextrocardia

বুকের ডান দিকে হার্ট? কী কী লক্ষণ প্রকাশ পাবে তখন? এমন সমস্যায় চিকিৎসা কি সম্ভব?

বিরল রোগ। লাখে একজনের হয়তো হয়। আগে থেকে বোঝা সম্ভবই নয় যে, শরীরে কী অস্বাভাবিকতা আছে। তা হলে কী করণীয়?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪ ১৬:৫৩
What happens when the heart is on the right side instead of left, what are the symptoms

বুকের ডান দিকে হার্ট থাকলে চিকিৎসা কি সম্ভব? ছবি: সংগৃহীত।

বুকের ডান দিকটা ধুকপুক করে? যদি বুকের বাঁ দিকের বদলে ডান দিকে হয়? বিরল হলেও বুকের ডান দিকে হার্ট নিয়ে জন্মান অনেকেই। কিন্তু তা না জানলে বোঝা মুশকিল। অনেক সময়েই দেখা যায়, বুকের ডান দিকে প্রচণ্ড ব্যথা, শ্বাসকষ্ট হচ্ছে রোগীর। হাসপাতালে গেলে ইসিজি করার পরে ধরা পড়ে রোগীর হার্ট রয়েছে বুকের ডান দিকে। এই রকম শারীরিক অবস্থাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হয় ‘ডেক্সট্রোকার্ডিয়া’। তখন সব কিছুই উল্টেপাল্টে যায়। অর্থাৎ, হার্টের সঙ্গে সঙ্গে শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অবস্থানও বদলে যেতে পারে। সকলের ক্ষেত্রে যে এমন হবে তা নয়। তবে বুকের ডান দিকে হার্ট রয়েছে এমন অনেক রোগীই আছেন, যাঁদের যকৃৎ, প্লীহা, ফুসফুসের অবস্থান উল্টো দিকে।

Advertisement

বুকের ডান দিকে হার্ট থাকলে হৃদরোগের ঝুঁকি যেমন বাড়ে, তেমনই সেই রোগীর হার্টে অস্ত্রোপচারও খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। বাইপাস সার্জারিও হয় ঝুঁকিপূর্ণ।

এমন শারীরিক অবস্থা কেন হয়, তার সঠিক কারণ এখনও অবধি জানা যায়নি। তবে হার্টের চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শরীরের অভ্যন্তরীণ গঠন যখন তৈরি হয়, তখন ফুসফুস, যকৃৎ, প্লীহা, খাদ্যনালি, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদ্রন্ত্র তার নিজের নিজের অবস্থানে পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়।

হার্ট তৈরি হয় বুকের বাঁ দিকে। সেই মতো অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গও তাদের অবস্থান ঠিক করে নেয়। কিন্তু যদি হার্টের অবস্থানই উল্টো দিকে হয়, তখনই তৈরি হয় অস্বাভাবিকতা। যে রোগীদের হার্ট ডান দিকে এবং একই সঙ্গে অন্যান্য অঙ্গগুলির অবস্থানও উল্টো দিকে হয়, তাঁদেরই শারীরিক সমস্যা হয় বেশি। এঁদের জন্মের পর থেকেই নানা রকম শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে থাকে। একে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয়, ‘মাল্টি-অর্গান ডিফেক্ট’।

কী কী লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে?

ডেক্সট্রোকার্ডিয়ার তেমন কোনও বাহ্যিক লক্ষণ বোঝা যায় না। বুকের এক্স-রে, এমআরআই করলে অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে।

তবে এই ধরনের রোগীর হার্টে জটিল রোগ হতে দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে ত্বক ও ঠোঁটের রং নীলচে হয়ে যেতে পারে। মাঝেমধ্যেই অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন রোগী। ঘন ঘন শ্বাসের সংক্রমণ হতে পারে।

রোগীর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। যখন-তখন ফুসফুসের সংক্রমণ হতে পারে।

ক্লান্তি বাড়তে পারে। হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যেতে পারে। বুকে চাপ চাপ ব্যথা হতে পারে রোগীর।

চিকিৎসা কি সম্ভব?

এমন রোগীর সংখ্যা বিরল। কয়েক লাখে একজনের এমন হয়। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই বিরল রোগ আগে থেকে প্রতিরোধ করাও সম্ভব নয়। তাই একটা বয়সের পর সকলেরই স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি। বিশেষ করে হার্টের কিছু টেস্ট করিয়ে রাখা খুবই দরকার। তখন কোনও অস্বাভাবিকতা থাকলে সেটা ধরা পড়বে।

বুকের ডান দিকে হার্ট নিয়ে জন্মালে অস্ত্রোপচার করার ক্ষেত্রেও কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকে। যে পদ্ধতিতে বাইপাস করা হয়, সেটি এই সব রোগীদের ক্ষেত্রে অন্য ভাবে করতে হয়। শিরা-ধমনীর অবস্থান দেখে, অলিন্দ-নিলয় ইত্যাদি অবস্থান বুঝে তার পর অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকেরা।

আরও পড়ুন
Advertisement