Tryglycerids

রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়েছে? বিপদের ঝুঁকি এড়াতে কী ভাবে সুরক্ষা নেবেন?

ট্রাইগ্লিসারাইড খারাপ কোলেস্টেরল ‘এলডিএল’-এর মতোই ক্ষতিকর। সতর্ক থাকতে হবে। রোজের জীবনে কোন নিয়মগুলি মানলে এই লিপিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব?

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২২ ১৪:০৫
এই লিপিড শরীরে জমা হয় বাইরের খাবার এবং ক্যালোরি থেকে।

এই লিপিড শরীরে জমা হয় বাইরের খাবার এবং ক্যালোরি থেকে। প্রতীকী ছবি।

কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড— এই দু’টিকে অনেকেই গুলিয়ে ফেলেন। কিছু ক্ষেত্রে মিল রয়েছে বটে। তবে অমিলও কম নয়। হৃদ্‌যন্ত্রের অসুখ ধরতে চিকিৎসক রক্তপরীক্ষা করতে দেন, সেই পরীক্ষার মধ্যে দিয়েই তিনি দেখে নেন ট্রাইগ্লিসারাইড আর কোলেস্টেরলের মাত্রা বিপদসীমা পেরিয়েছে কি না। এই দুই লিপিডের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?

১) ট্রাইগ্লিসারাইড এবং কোলস্টেরল দু’টি সম্পূর্ণ আলাদা ভাবে উৎপন্ন হয়। শরীর যেমন নিজে থেকেই তার প্রয়োজনীয় কোলেস্টেরল উৎপাদন করে, এটা ট্রাইগ্লিসারাইডের ক্ষেত্রে হয় না। এই লিপিড শরীরে জমা হয় বাইরের খাবার এবং ক্যালোরি থেকে।

Advertisement

২) ট্রাইগ্লিসারাইড ও কোলেস্টেরল দু’টিই অনেক বেশি গেলে আলাদা ভাবে হৃদ্‌যন্ত্রের ক্ষতি করে। কোলেস্টেরল বেশি হওয়ার সঙ্গে হৃদ্‌রোগের সম্পর্ক তো আছেই। তবে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেশি থাকলে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি হতে পারে। ট্রাইগ্লিসারাইড বেশি হওয়া মানে ধরে নিতে হবে শরীর ঠিক মতো তার শক্তিক্ষয় বা শক্তিসঞ্চয় করছে না।

কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বেশি খেলেই তা লিভারে গিয়ে ট্রাইগ্লিসারাইড তৈরি হয়।

কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বেশি খেলেই তা লিভারে গিয়ে ট্রাইগ্লিসারাইড তৈরি হয়। প্রতীকী ছবি।

ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়লে কী কী ক্ষতি হতে পারে?

শরীরের রক্তবহনকারী নালীর দেওয়ালে ট্রাইগ্লিসারাইড জমতে থাকে। এর ফলে ওই নালিগুলি সরু হতে হতে রক্ত চলাচলও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। হৃদ্‌রোগ বা ব্রেন স্ট্রোকের মূলে থাকতে পারে রক্তবাহিকায় জমে থাকা অতিরিক্ত ট্রাইগ্লিসারাইড। কিডনির সমস্যাও হতে পারে এর ফলে। এ ছাড়া, পাকস্থলীর পাশে এই ট্রাইগ্লিসারাইড জমে ক্ষতি করতে পারে।

ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বাড়লে কোন কোন খাবার বর্জনীয়?

কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বেশি খেলেই তা লিভারে গিয়ে ট্রাইগ্লিসারাইড তৈরি হয়। এ ছাড়াও ভাত, আলুর মতো অতিরিক্ত সুক্রোজ জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলেই এটা হয়। অ্যালকোহল, কফি— এমন কিছু পানীয় অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার ফলে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বাড়তে পারে। বরং গ্রিন টি, সামুদ্রিক মাছ, মাছের তেল ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমাতে কোন বিষয়ে নজর দেওয়া প্রয়োজন?

১) ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। স্থূলতার কারণে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ওজন বাড়তে দেওয়া যাবে না। নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম করতে হবে।

২) রোজ শরীরচর্চা করা বাধ্যতামূলক। রক্ত চলাচল সচল রাখতে শারীরিক কসরত করা জরুরি।

৩) ধূমপানের অভ্যাস ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। তাই সুস্থ থাকতে ধূমপান কম করুন।

৪) মদ্যপানের পরিমাণ যেন মাত্রা না ছাড়ায়। অতিরিক্ত মদ্যপান ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়িয়ে দিতে পারে।

৫) মিষ্টি খাওয়া কমান। বেশি চিনি বা অন্য মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে ট্রাইগ্লিসারাইডের আশঙ্কা বাড়তে পারে।

আরও পড়ুন
Advertisement