খুব সকালে বিছানা ছাড়ার অভ্যাস না থাকলেও বিভিন্ন কারণে ঘুম থেকে উঠে পড়তেই হয়। প্রতীকী ছবি।
বছর ২৫-এর অরুণিমা। সম্প্রতি একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি পেয়েছেন। সকালের শিফ্ট। ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে পড়তে হয়। অরুণিমা এমনিতে ঘুমকাতুরে। সকালেই উঠতে পারেন না। অফিস যাওয়ার তাড়ায় এখন প্রতি দিনই ভোর ভোর উঠে তৈরি হতে হচ্ছে। অ্যালার্ম দিয়েও অনেক সময় ঘুম ভাঙতে চায় না। বেশ কিছু দিন এমন চলার পরে দুর্বল হয়ে পড়েন অরুণিমা। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসক জানালেন, সকালে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস নেই। অথচ জোর করে ঘুম থেকে ওঠার কারণেই এমন হচ্ছে।
অরুণিমার মতো এমন সমস্যা আরও অনেকের রয়েছে। খুব সকালে বিছানা ছাড়ার অভ্যাস না থাকলেও বিভিন্ন কারণে ঘুম থেকে উঠে পড়তেই হয়। শরীরের বিরুদ্ধে গিয়ে এই জাগরণের কারণে নানা শারীরিক সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। ঘুম তখনই ভাল হয়, যখন কোনও চিন্তা থাকে না। সকালে উঠতে হবে ভেবে রাতে ঘুমোলে ভিতরে ভিতরে একটা উদ্বেগ কাজ করতে থাকা। এই চাপা উদ্বেগ পরে চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে পারে।
১) চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, যদি কেউ জোর করে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করেন, সে ক্ষেত্রে তার প্রভাব পড়ে ‘সার্কেডিয়ান ক্লক’, অর্থাৎ শরীরবৃত্তীয় ঘড়িতে। ঘুমের একটি নির্দিষ্ট চক্র রয়েছে। এক জন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। রাত করে ঘুমিয়ে অনেকেই সকাল সকাল ওঠেন। ঘুমের চক্র অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এতে শরীরের কার্যক্ষমতা অনেক কমে যায়।
২) পর্যাপ্ত ঘুম সারা দিন চনমনে রাখতে সাহায্য করে। ঘুম ঠিকঠাক হলে শুধু শরীর নয়, ভাল থাকে মনও। কাঁচা ঘুম যদি ভেঙে যায়, সে ক্ষেত্রে কিন্তু শরীরে একটা আলসেমি চলে আসে। কোনও কাজেই মন বসে না। কোনও কাজে সঙ্গ দেয় না শরীরও। অল্প কাজে করেই ক্লান্ত লাগে। বেশ কিছু দিন এমন চলতে থাকলে স্বাস্থ্যের অবনতি হতে শুরু করে।
৩) সকালে ঘুম থেকে উঠলে ওজন কমে এ কথা ঠিক। তবে জোর করে ঘুম থেকে ওঠার কারণে মাত্রাতিরিক্ত হারে ওজন কমতে থাকে। এই ওজন হ্রাস শরীরে ডেকে আনতে পারে নানা ধরনের রোগ। সকালে ঘুম থেকে ওঠা যতটা ফলদায়ক, কাঁচা ঘুম ভেঙে বিছানা ছাড়ার অভ্যাস ততটাই অস্বাস্থ্যকর। সকালে উঠতে হলে বেশি রাত করে না ঘুমোনোই ভাল। ঘুমের ঘাটতি ডেকে আনতে পারে অনেক শারীরিক সমস্যা।