Fitness Tips

মাঝবয়সের মেদ কমাতে

তিরিশ-চল্লিশের কোঠায় মহিলাদের শরীরে নানা পরিবর্তন দেখা দেয়। ভারী হতে শুরু করে চেহারা। নিজেকে ফিট রাখবেন কী ভাবে?

Advertisement
কোয়েনা দাশগুপ্ত
শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২৪ ০৯:৪০
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কথায় বলে, বয়স কেবল একটা সংখ্যা মাত্র। কিন্তু তাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে মনের মতো করে বাঁচতে হলে দরকার ফিট থাকা। অথচ তিরিশ থেকে মধ্য চল্লিশের মহিলাদের শরীরে দেখা দেয় নানা পরিবর্তন। এখন তিরিশের পরে অনেকেই মা হন, অনেকে আবার এই বয়সে গর্ভাবস্থার পরে মেদ ঝরিয়ে ফেলতে চান। দিনভর সাংসারিক কাজে যেমন ব্যস্ত কেউ, তেমনই অনেকের দিন কাটে একটানা অফিসে বসে। ফলে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রায় এই বয়সে মেদ বাড়ার আশঙ্কা বেশি। তার সঙ্গে ভুঁড়ি, কাজে-কর্মে ফ্লেক্সিবিলিটির অভাব তো রয়েছেই।

Advertisement

ফিটনেস প্রশিক্ষক অরিজিৎ ঘোষাল বলছেন, “অধিকাংশ সময়ে এই বয়স থেকেই কোমরে ব্যথা, হাঁটুতে ব্যথা, শরীর স্টিফ হয়ে আসার মতো নানা সমস্যা দেখা দিতে থাকে। প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসকেরা ওজন কমানোর পরামর্শ দেন। কিন্তু তিরিশের পর প্রত্যেক মহিলা প্রতি বছর ৩-৮ শতাংশ পেশিশক্তি হারান। তাই শুধু ওজন কমানো নয়, ফ্যাট কমিয়ে পেশি তৈরি করা জরুরি। এতে ওজন যেমন কমবে, সঙ্গে বাড়বে বোন ডেনসিটি ও মেটাবলিজ়ম রেট। ফলে ক্রমেই হাঁটু, কোমর, ঘাড়ের ব্যথা-সহ অন্যান্য সমস্যা থেকেও মুক্তি মিলবে।

কী করবেন?

অরিজিতের কথায়, বেশি বয়সে সুস্থ থাকতে হলে তিরিশের পর থেকেই মহিলাদের সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। তাই প্রথম থেকেই গ্লুটস, কোর, আপার ব্যাক মাসলের দিকে নজর দিন। সপ্তাহে তিন দিন স্ট্রেংদেনিং এক্সারসাইজ় করা জরুরি।

  • কোর স্ট্রেংদেনিংয়ের জন্য ডেডবাগ, বার্ড ডগ এক্সারসাইজ়, বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাঙ্ক করতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে পুরো ওজন যেন লোয়ার ব্যাকের উপরে না পড়ে, সে দিকে লক্ষ রাখবেন। সঙ্গে কোর কো–অর্ডিনেশনের দিকে নজর দিন।
  • গ্লুটসের ক্ষেত্রে ডার্টি ডগ, ক্ল্যাম শেল, ব্রিজ ইত্যাদি করতে পারেন।
  • আপার ব্যাকের জন্য সিটেড রো ধরনের যে কোনও পুশ এক্সারসাইজ় করা ভাল।
  • সপ্তাহে এক বার করতে পারেন হাই ইনটেনসিটি ইন্টারভ্যাল ট্রেনিং। অর্থাৎ একটানা ৩০ সেকেন্ড শারীরচর্চার পরে ৩০ সেকেন্ড বিশ্রাম নিয়ে ফের ৩০ সেকেন্ড এক্সারসাইজ়। এ ক্ষেত্রে স্কোয়াট, পুশ-আপ, বার্পিস, প্ল্যাঙ্ক, জাম্পিং জ্যাক, সিট-আপ ইত্যাদি যে কোনও পাঁচটি হাই ইনটেনসিটি ব্যায়াম বেছে নিতে পারেন। এ ছাড়া, নিয়মিত স্কোয়াট, ডেডলিফট, লাঞ্জেস, পুল, পুশ, টুইস্ট, গেট (হাঁটা ও দৌড়নো) এই সাত ধরনের প্রাথমিক শারীরচর্চা জরুরি। এতে যেমন পেশির নমনীয়তা বাড়বে, তেমনই বয়স বাড়লে যে কোনও ধরনের শারীরিক ব্যথার হাত থেকে সহজে নিস্তার পাওয়া যাবে।

আরও কিছু...

ফিটনেস প্রশিক্ষক গুরুপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “এ বয়সে শরীরের স্টিফ হয়ে আসার সমস্যা মেটাতে অর্ধচন্দ্রাসন, পদহস্তাসন, ভুজঙ্গাসন, ধনুরাসন, উষ্ট্রাসন করতে পারেন। তা ছাড়া, গর্ভাবস্থার পরের ওজন কমাতে হাঁটা, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাঁটা... তো থাকছেই। যে কোনও ধরনের স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ়ও ভাল।”

তবে মনে রাখবেন, সাঁতার, সাইক্লিং ইত্যাদিতে ওজন কমলেও মাসল তেমন তৈরি হয় না। এতে পরবর্তী কালে লুজ় ফ্যাট জমার সম্ভাবনা বাড়ে। তাই দ্রুত ওজন না কমিয়ে দরকার মাসল তৈরি। সঙ্গে খাদ্যাভ্যাস ও ঘুমের দিকেও নজর দেওয়া দরকার। তবে যা-ই করুন, প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিতে হবে।

মডেল: সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা; মেকআপ:অভিজিৎ কয়াল; ছবি: অমিত দাস; লোকেশন: পার্ক হোটেল

আরও পড়ুন
Advertisement