Cancer Risk

জীবনে মাত্র ৭ পরিবর্তন আনতে পারলে ক্যানসারের থাবা গুটিয়ে যেতে পারে! জানেন সেগুলি কী কী?

সাম্প্রতিক একটি গবেষণা বলছে, ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে যত মানুষের মৃত্যু হয়, তার প্রায় অর্ধেকের পিছনেই কোনও না কোনও রিস্ক ফ্যাক্টর কাজ করে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৪ ১১:০৮
These seven changes in your lifestyle can cut cancer risk

জীবনযাপনে কী ধরনের পরিবর্তন আনলে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ভয় থাকে না? ছবি: সংগৃহীত।

ক্যানসার কেন হয়? তা নিশ্চিত ভাবে বলতে পারেন না কেউই। অনেকের ধারণা এই রোগ জিনগত। আবার, কেউ কেউ বলেন, মদ্যপান করলে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ভয় বেশি। সে সব তত্ত্ব একেবারে ভুল নয়। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, কিছু কিছু বিষয় রয়েছে, যেগুলি ক্যানসারের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই বিষয়গুলিকে বলা হয়, ‘রিস্ক ফ্যাক্টর’। সাম্প্রতিক একটি গবেষণা বলছে, ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে যত মানুষের মৃত্যু হয়, তার প্রায় অর্ধেকের পিছনেই কোনও না কোনও রিস্ক ফ্যাক্টর কাজ করে।

Advertisement

আগে ক্যানসার বা কর্কটরোগীর সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। কিন্তু চিকিৎসা সংক্রান্ত পত্রিকা ‘ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলছে, তরুণ প্রজন্ম তো বটেই, তার আগের প্রজন্ম থেকেই ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এবং তার ছায়া বর্তমান প্রজন্মের উপরেও এসে পড়েছে। ওই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, তরুণ প্রজন্মের বেশির ভাগের মধ্যেই স্তন, লিভার, মলাশয়, মলদ্বার, পিত্তথলি, অগ্ন্যাশয়ের মতো প্রায় ১৭ প্রকার ক্যানসারের অস্তিত্ব মিলেছে। তবে, জীবনযাপনে সামান্য কিছু পরিবর্তন যে মারণরোগ ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারে গবেষণাপত্রে সে কথাও বলা হয়েছে।

জীবনযাপনে কী ধরনের পরিবর্তন আনলে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ভয় থাকে না?

১) ওজন নিয়ন্ত্রণ:

ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। ওজন বেশি বেড়ে গেলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। সেই ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। ব্যায়াম না করলে ওজন কমানো সম্ভব নয়। স্থূলতার কারণে বৃদ্ধি পায় স্তন, কোলন, পাকস্থলীর ক্যানসার।

২) উদ্ভিজ্জ খাবার:

প্রাণিজ খাবার বাদ দিয়ে বেশি করে শাকসব্জি, ফল-মূল খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের বীজ, বাদাম, টোফু, দানাশস্য খেতে পারলেও মন্দ হয় না। ‘ইউসি স্ক্যান সানফ্রান্সিকো’র দেওয়া তথ্য বলছে উদ্ভিদজাত খাবার খাওয়ার অভ্যাস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ৪৭ শতাংশ কমিয়ে ফেলতে পারে। পুরুষদের প্রস্টেট ক্যানসারের ভয়াবহতা ক্ষীণ হয় উদ্ভিজ্জ খাবার খেলে।

৩) অলস জীবনযাপন:

দিনে দিনে ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ হল অলস জীবনযাপন। টানা ১০ থেকে১২ ঘণ্টা বসে বা শুয়ে থাকলে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে। সমীক্ষা বলছে, যাঁরা কোনও রকম কায়িক পরিশ্রম করেন না, তাঁদের শরীরে ক্যানসার হানা দেওয়ার সম্ভাবনা ৮২ শতাংশ।

৪) প্রক্রিয়াজাত খাবার:

ভাত-রুটির মতো ঘরোয়া খাবারের বদলে ভাজাভুজি, বাইরের মুখরোচক খাবার খাওয়া কিংবা নরম পানীয়ে চুমুক দেওয়ার ঝোঁক বেড়েছে। তা ছাড়া সময় এবং শ্রম বাঁচাতে হিমায়িত বা প্রক্রিয়াজাত প্রাণিজ খাবার খাওয়ার প্রবণতাও দিনে দিনে বাড়ছে। এই ধরনের খাবারে কৃত্রিম চিনি এবং সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি। তাই এগুলি খেলে স্থূলত্বও বাড়তে থাকে। স্থূলত্বের সঙ্গে ক্যানসারের যোগ রয়েছে।

৫) ফাইবারজাতীয় খাবার:

যে সব খাবারে ফ্যাটের পরিমাণ বেশি এবং ফাইবারের পরিমাণ কম, সেগুলি থেকে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। সেই ঝুঁকি এড়াতে প্রতি দিনের ডায়েটে ফল-মূল, বাদাম, বীজ, দানাশস্য জাতীয় খাবার রাখতে হবে। সঙ্গে পর্যাপ্ত জল খেতে হবে।

৬) রোদও বিপজ্জনক:

সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগনি রশ্মি থেকেও কিন্তু ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ত্বকের ক্যানসার হওয়ার নেপথ্যে এই অতিবেগনি রশ্মির বড় ভূমিকা রয়েছে। তাই রোদ থেকে বাঁচতে অবশ্যই ভাল মানের সানস্ক্রিন মাখতে হবে। সঙ্গে ছাতা, টুপি, রোদচশমা ব্যবহার করতে হবে।

৭) ধূমপান এবং মদ্যপান:

যাঁরা ধূমপান কিংবা মদ্যপানে আসক্ত তাঁদের গলা, মুখগহ্বর, খাদ্যনালির ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। সেই ঝুঁকি এক ধাক্কায় অনেকটা কমিয়ে ফেলতে চাইলে জীবন থেকে ধূমপান এবং মদ্যপান বাদ দিতে হবে।

আরও পড়ুন
Advertisement