স্মৃতিশক্তি বাড়বে কোন কোন যোগাসনে, জেনে নিন। ছবি: ফ্রিপিক।
রোজের ছোটখাটো বিষয়গুলোও ভুলে যাচ্ছেন কি? অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাজ মনে থাকছে না। দৈনন্দিন জীবনের ছোট-ছোট প্রয়োজনগুলি মনে রাখতে পারছেন না। এমন ভুলে যাওয়ার সমস্যায় অনেকেই ভুগছেন। রোজের ব্যস্ততায় সংসার-পেশা সামলাতে গিয়ে উদ্বেগ এতটাই বাড়ছে যে, স্মৃতির পাতা ক্রমেই ফিকে হতে শুরু করছে। কম বয়সেই হানা দিচ্ছে স্মৃতিনাশের মতো মানসিক রোগ। সৃজনশীল কাজের জন্য যেমন চিন্তাভাবনা দরকার, সেগুলোও আর ঠিকমতো করতে পারছেন না। ভাবতে বসলেই দুশ্চিন্তা এসে মন-মগজ গ্রাস করছে। ফিটনেস প্রশিক্ষকেরা পরামর্শ দিচ্ছেন, মনের উপর চাপ কমাতে এবং বুদ্ধির গোড়ায় শান দিতে কিছু যোগাসন নিয়মিত অভ্যাস করতে হবে। ঠিকমতো রপ্ত করতে পারলে, মন-মেজাজ ফুরফুরে থাকবে।
সুখাসন
সহজ ও আরামদায়ক ভঙ্গিমায় করা হয় বলেই এই আসনের নাম সুখাসন। পা মুড়ে আরাম করে বসে এই ব্যায়াম করতে হয়। ম্যাটের উপর আগে সোজা হয়ে বসুন। তার পর দু’পা সোজা করে সামনে ছড়িয়ে দিন। ডান পায়ের হাঁটু ভাঁজ করে বাঁ ঊরুর নীচে নিয়ে আসুন। একই ভাবে বাঁ পা মুড়ে ডান ঊরুর নীচে রাখুন। দু’হাতের আঙুল জ্ঞানমুদ্রার (বুড়ো আঙুল আর তর্জনী একসঙ্গে রাখা) ভঙ্গিতে দুই হাঁটুর উপর রাখুন। এই আসন নিয়মিত করলে শরীর মনের ক্লান্তি দূর হয়। উদ্বেগ ও মানসিক চাপ থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
শীর্ষাসন
মাথা নীচে রেখে, হাত ও কনুইয়ে ভর দিয়ে পা উলম্ব ভাবে উপরের দিকে তুলে রেখে এই আসন করতে হয়। অর্থাৎ মাথা থাকবে নীচে, দুই পা উপরে। প্রথম প্রথম এই ব্যায়াম করতে সমস্যা হবে। তখন দুই পা ব্যালেন্স করতে না পারলে দেওয়ালে ভর দিয়ে রাখতে পারেন। ধীরে ধীরে ব্যায়াম রপ্ত হয়ে গেলে আর সমস্যা হবে না। শীর্ষাসন সঠিক ভাবে করতে পারলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। এই আসন নিয়মিত অভ্যাস করতে পারলে যেমন হার্ট ভাল থাকে, তেমনই অবসাদ দূর হয়। মনঃসংযোগ কয়েক গুণ বেড়ে যায়।
পদহস্তাসন
এই আসনটিও একাগ্রতা বাড়ানোর জন্য খুব ভাল। ব্যায়ামটি করার সময় সোজা হয়ে দাঁড়ান। দুই পায়ের মধ্যে দূরত্ব রাখুন। এ বার শ্বাস নিতে নিতে হাত দুটো উপরের দিকে তুলুন। ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে কোমর থেকে শরীরের উপরের অংশ সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে দিন। হাত দিয়ে গোড়ালি স্পর্শ করুন। খেয়াল রাখবেন, হাঁটু যেন না ভাঙে; টান টান থাকে। ২০-৩০ সেকেন্ড এই অবস্থায় থাকার পর আগের অবস্থায় ফিরে যান।
বৃক্ষাসন
সোজা হয়ে দাড়িয়ে নিজের দুটি হাত নমস্কারের ভঙ্গিতে বুকের কাছে আনুন। তার পর শরীরের ভারসাম্য রেখে নিজের ডান পায়ের হাঁটু ভাঁজ করে পায়ের পাতাটি বাঁ পায়ের ঊরুর উপর আনুন। ধীরে ধীরে মেরুদণ্ড সোজা রেখে হাত নমস্কারের ভঙ্গিতে সমান ভাবে মাথার উপর নিয়ে যান। ৩০ সেকেন্ড এই ভঙ্গিতে এক পায়ের উপর দাঁড়িয়ে থাকুন।
সর্বাঙ্গাসন
চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। পা দু’টি জোড়া করে উপরে তুলুন। এ বার দু’হাতের তালুতে কোমরের ভোর দিয়ে পিঠ এমন ভাবে ঠেলে তুলুন, যেন ঘাড় থেকে পা পর্যন্ত এক সরলেরখায় থাকে। থুতনিটি বুকের সঙ্গে লেগে থাকবে। দৃষ্টি থাকবে পায়ের আঙুলের দিকে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে হবে। ৩০ সেকেন্ড এ ভাবে থেকে শবাসনে বিশ্রাম নিন। তিন বার অভ্যাস করুন এই ব্যায়াম। এই ব্যায়ামের নিয়মিত অভ্যাসে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা থেকে অনেকটা রেহাই পাওয়া যায়।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লখা। কোনও রকম অসুস্থতা থাকলে, অস্ত্রোপচার হয়ে থাকল অথবা হাঁটু-কোমরে ব্যথা থাকলে নিজে থেকে ব্যায়াম করতে যাবেন না। যে কোনও যোগাসন করার আগে যোগাসন প্রশিক্ষকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।