ছবি : সংগৃহীত।
দিনরাত ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা উপদেশ শোনা যায়। তার মধ্যে কিছু কিছু উপদেশ ‘ভাইরাল’ও হয়। বিশেষ করে কেউ যদি প্রকাশ্যে এসে বলেন, কোনও ‘উপদেশ’ মেনে তাঁর শারীরিক সুপরিবর্তন এসেছে, তবে তো কথাই নেই, ণত্ব-ষত্ব বিচার না করেই অনেকে চোখ বুজে আপন করে নেন সেই উপদেশ। কিন্তু সব উপদেশ কি ভাল? সব উপদেশ কি ততটাই কার্যকরী, যতটা দাবি করা হয়?
কিছু দিন হল সমাজমাধ্যমে জনপ্রিয় হয়েছে তেমনই এক ‘ওষুধ’। নাম ‘ঘি-ওয়াটার’। আদতে গরম জলে সামান্য ঘি গুলে নেওয়া। রান্নাবান্নার প্রতিযোগিতা ‘মাস্টারশেফ’-এর এক সেমিফাইনালিস্ট কৃতি ধিমান জানিয়েছেন, তিনি নিয়মিত সেটি পান করেন। সকাল বেলা খালি পেটে। আর তাঁর দাবি, তাতে তাঁর স্বাস্থ্যগত বদল এসেছে।
কী কী বদল এসেছে, তা-ও সবিস্তার জানিয়েছেন কৃতি। সমাজমাধ্যমে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমার ত্বক আগের থেকে অনেক ভাল আছে। অনেক বেশি উজ্জ্বল, পরিচ্ছন্ন এবং আর্দ্র থাকে এখন। চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে। মাথার ত্বক এখন অনেক বেশি আর্দ্র থাকে।’’ শুধু তা-ই নয়, কৃতি বলেছেন, তাঁর পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করেছে ঘি-জল। পাশাপাশি, দিনের প্রথম খাবার খাওয়ার পরে রক্তে শর্করার পরিমাণ এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে যাওয়ার যে সমস্যা অনেকেরই হয়, তা-ও নিয়ন্ত্রণ করেছে ‘ঘি-জল’। কিন্তু কৃতি যা যা বলেছেন, তা কি শুধু গরম জলে ঘি গুলে খাওয়ার জন্যই?
সকালে খালি পেটে জলে গুলে ঘি খাওয়ার কথা বলা হয়েছে আয়ুর্বেদেও। তবে হায়দরাবাদের গ্লেনেগলস হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ চিকিৎসক বিরালি শ্বেতা বলছেন, ‘‘আয়ুর্বেদে ওই পানীয়ের কথা বলা আছে। আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় তা অনেকে ব্যবহারও করেন। কিন্তু তার যা যা উপকারের কথা বলা হয়েছে, তার যথেষ্ট বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’’ পুষ্টিবিদ জিনাল প্যাটেল যদিও শ্বেতার সঙ্গে একমত নন। তিনি বলছেন, ‘‘ঘি নানা রকম পেটের সমস্যার সমাধানে কার্যকরী। গ্যাস, বদহজম, পেট ফাঁপা ভাব অথবা কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা কমতে পারে ঘি খেলে। যাঁরা ওজন কমানোর কথা ভাবছেন, তাঁদের আগে নজর দিতে হয় পেটের স্বাস্থ্যের দিকে। তাই তাঁরা পেট ভাল রাখতে ঘি-জল খেতেই পারেন।’’
কৃতির মতোই ঘি ত্বকের উপকার করে বলে মনে করেন জিনিয়াও। তিনি বলছেন, ‘‘ঘি ত্বকের কোলাজেন বৃদ্ধি করতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং শক্তি বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।’’ তবে ঘি উপকারী হলেও নিয়মিত অনেকটা খেতে নিষেধ করছেন জিনাল। তাঁর পরামর্শ, রোজ ঘি খাওয়া যেতেই পারে, তবে অল্প পরিমাণে।