ট্যাটু করাবেন ভাবছেন, কী বিপদ হতে পারে জানেন তো! ছবি: সংগৃহীত।
ট্যাটুর কালি বিপজ্জনক!
ট্যাটু আঁকার দোকানে ব্যবহৃত কালিতে এমন কিছু রায়াসনিক থাকে, যা থেকে ক্যানসার হতে পারে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় এমনটাই দাবি করেছেন সুইডেনের বিজ্ঞানীরা।
সুইডিশ বিজ্ঞানীদের দাবি, ট্যাটু করার জন্য যে কালি ব্যবহৃত হয়, তার থেকে ‘লিম্ফোমা’ বা রক্তের ক্যানসার হতে পারে। যে সুচ দিয়ে দোকানিরা ট্যাটু করেন, তা অনেক সময়েই জীবাণুমুক্ত করা হয় না। তা ছাড়া, সুচ ফুটিয়ে বিশেষ রকম কালি দিয়ে ত্বকে ট্যাটু আঁকা হয়। চামড়ায় সুচ ফোটানোর সময়ে এই কালি সরাসরি গিয়ে রক্তে মেশে। গবেষকেরা বলছেন, কালির মধ্যে থাকা ক্ষতিকর উপাদান তখন রক্তে মিশতে থাকে। এই সব উপাদানই পরবর্তী সময়ে গিয়ে ক্যানসারের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
রক্তের ক্যানসারের ঝুঁকি ২১ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারে ট্যাটু। সুইডেনের বিজ্ঞানীরা ১১ হাজার ৯০৫ জনকে নিয়ে একটি পরীক্ষা করেন। তাঁদের বয়স ২০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। সকলেই ট্যাটু করিয়েছিলেন শরীরের বিভিন্ন জায়গায়। বেশ কয়েক বছর ধরে তাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। দেখা যায়, ট্যাটু করার কয়েক বছরের মধ্যেই তাঁদের মধ্যে ২ হাজার ৯৩৮ জনের রক্তের ক্যানসার হয়েছে।
গবেষকেরা দাবি করছেন, ট্যাটুর কালিতে বেঞ্জিন নামে এক যৌগ থাকে, যা ক্যানসারের কারণ। ট্যাটুর কালি কোন কোন উপাদান মিশিয়ে তৈরি করা হয়, তার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয় না। ফলে যিনি ট্যাটু করাচ্ছেন, তিনি জানতেই পারেন না যে, কী কী ক্ষতিকর রাসায়নিক ট্যাটুর কালির মাধ্যমে তাঁর রক্তে ঢুকছে।
বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন রকম ট্যাটুর কালি পরীক্ষা করে দেখেছেন, তাতে বেঞ্জিন ছাড়াও কার্সিনোজেনিক অ্যারোম্যাটিক অ্যামাইন, পলিসাইক্লিক অ্যারোম্যাটিক হাইড্রোকার্বনের মতো ক্ষতিকর উপাদানও রয়েছে। এ সব উপাদান রক্তে ঢুকলে তার থেকে ত্বকে সংক্রমণ, অ্যালার্জি হতে পারে। রক্তে বেশিমাত্রায় মিশলে, তা তলে তলে রক্তের ক্যানসারের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
তাই ট্যাটু করানোর আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। শরীরের কোন জায়গায় ট্যাটু করতে চাইছেন, তা আপনার চিকিৎসককে সবিস্তারে জানান। ট্যাটু করার আগে অবশ্যই জানুন আপনার শিরাগুলির অবস্থান। সঙ্গে এটাও দেখুন, ট্যাটু কোনও ক্ষতস্থানে হচ্ছে না তো! কোনও অ্যালার্জি, চুলকানি, র্যাশের আশঙ্কা আছে কি না, সে বিষয়ে আগে নিশ্চিত হন। ট্যাটু করালে আপনার কী কী ক্ষতি হতে পারে, তা আগে জেনে নিন ভাল করে।