ফিট হওয়া সত্ত্বেও কেন অভিনেত্রী হৃদ্রোগের শিকার হলেন, তা নিয়ে একটা কৌতূহল ছিল। ছবি: সংগৃহীত।
বিশ্বসুন্দরী সুস্মিতা সেনের বুকে স্টেন্ট বসার খবরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন অনেকেই। অনেকেই ভেবেছিলেন, সুস্মিতার মতো এমন ফিটনস সচেতন মানুষের যদি হার্ট অ্যাটাক হতে পারে, যে কোনও দিন নিজেদের শরীরেও হানা দিতে পারে এই বিপদ। কারণ চিকিৎসকরা বলেন যে, যে কোনও রোগ ঠেকাতে ফিট থাকা দস্তুর। নয় তো অসুস্থতা হানা দেবে বেশি করে। কিন্তু সু্স্মিতার ফিটনেস নিয়ে সন্দেহ থাকার কথা নয়। তা সত্ত্বেও কেন অভিনেত্রী হৃদ্রোগের শিকার হলেন, তা নিয়ে একটা কৌতূহল ছিল। সম্প্রতি এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন হৃদ্রোগ চিকিৎসক রাজীব ভগওয়াত। হার্ট অ্যাটকের পরে তিনিই সুস্মিতার চিকিৎসা করেন।
চিকিৎসক জানিয়েছেন, বাইরে থেকে কাউকে অত্যধিক ফিট বলে মনে হতে পারে। কিন্তু শরীরের অন্দরে কী চলছে, তা বাইরে থেকে সব সময়ে বোঝা না-ও যেতে পারে। হার্ট অ্যাটাক কখন হবে, তা সব সময়ে লক্ষণ দেখেও বোঝা যায় না। তাই সব সময়ে সতর্ক থাকা জরুরি। হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেশি কাদের, সেই ব্যাপারে যদি জেনে নেওয়া যায়, তাহলে সতর্ক থাকা সম্ভব। ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, ধূমপানের অভ্যাস— এগুলি মূলত হার্ট অ্যাটাকের নেপথ্য কারণ। একটা বয়সের পর অনেকেই এই শারীরিক কিছু সমস্যায় ভোগেন। এই সমস্যাগুলি থাকলে হার্ট অ্যাটাক নিয়ে সচেতন থাকা জরুরি।
ঝুঁকি কমাতে শরীরচর্চা করা অত্যন্ত জরুরি। রোজ যদি অন্তত এক ঘণ্টা করে শরীরচর্চা না করেন, তা হলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা দ্বিগুণ হয়। শরীরচর্চা করলে চিন্তা, অবসাদও দূর হয়। আর সেই কারণেই হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পরেও দ্রুত সুস্থ হয়ে কাজে ফিরেছেন সুস্মিতা।
বুকে স্টেন্ট বসার কয়েক দিনের মধ্যে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছেন অভিনেত্রী। শরীরচর্চা করা থেকে ফ্যাশন উইকের মঞ্চে হাঁটা— স্টেন্ট নিয়েই দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন সুস্মিতা। অভিনেত্রীর চিকিৎসক জানিয়েছেন, এই ঘটনার পর ওঁর ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ভাগ্যিস সুস্মিতা নিয়মিত শরীরচর্চার করতেন। সেই জন্য কোনও বড় অঘটন ঘটেনি। অতিরিক্ত পরিশ্রম, মানসিক ভাবে অত্যধিক চাপে থাকা, ভিটামিন ডি-র অভাব এবং আরও বহু কারণে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। হার্ট অ্যাটাক মানেই যে মৃত্যু, তা তো নয়। অঘটন এড়াতে শরীরচর্চা করা জরুরি। সু্স্মিতা তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। চিকিৎসক আরও জানিয়েছেন, সঠিক সময়ে সুস্মিতাকে হাসপাতালেও আনা হয়েছিল। হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পর দ্রুত চিকিৎসা শুরু হওয়া জরুরি। সময়ের এ দিক-ও দিক হলেই বড় কোনও বিপদ ঘটে যেতে পারে। একই কথা বলেছেন সুস্মিতা নিজেও। তাঁর কথায়, ‘‘হার্ট অ্যাটাকের পর যে আমি এত দ্রুত আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারলাম, তার শুধুমাত্র নিয়ম করে ব্যায়াম করতাম বলেই।’’