অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মেয়েরা মানসিক নানা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যান। ছবি: সংগৃহীত।
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মেয়েরা শারীরিক এবং মানসিক নানা পরিবর্তেন মধ্যে দিয়ে যান। সেই সময়ে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়া খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। আবার সন্তান জন্মের পরেও নতুন মায়েদের মধ্যে এই ধরনের মানসিক চাপ লক্ষ করা যায়। আয়ুর্বেদে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা থাকলেও সাম্প্রতিক অতীতে এ নিয়ে তেমন ভাবনাচিন্তা দেখা যেত না। কিন্তু বর্তমানে এই ধরনের সমস্যা নির্ণয় এবং নিরাময়ের সুযোগ অনেকটাই বেড়েছে। সাম্প্রতিক তিনটি গবেষণা থেকে তেমন ইঙ্গিত মিলেছে।
তিনটি আলাদা আলাদা গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় থাকাকালীন কিংবা সন্তান প্রসবের পরের এক মাস মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে যথেষ্ট তৎপর হয়েছে আমেরিকা। অবসাদ, উদ্বেগজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ওষুধ কিংবা থেরাপির সাহায্য নিচ্ছেন বিভিন্ন বয়সি মহিলারা।
সন্তানের জন্ম দেওয়ার আগে এবং পরে এই ধরনের মানসিক অবসাদ বা উদ্বেগ চিহ্নিত করা গেলেও সচেতনতার অভাবে কিছু ক্ষেত্রে ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। ‘হেল্থ অ্যাফেয়ার’ জার্নালের এপ্রিল সংখ্যায় এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কর্মরত একদল গবেষক জোর বলছেন, ‘পেরিনেটাল পিরিয়ড’ (পেরিনেটাল পিরিয়ড শুরু হয় সন্তানধারণের ২০ থেকে ২৮ সপ্তাহের মধ্যে। তা চলে প্রসবের ১ থেকে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত) চলাকালীন মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতেই পারে। কিন্তু তার সঠিক চিকিৎসা হয় না। বিশ্বের সর্বত্র এই বিষয়ে এখনও সচেতনতা গড়ে ওঠেনি। যার ফলে হবু মা, ভ্রূণ কিংবা নতুন মা এবং সদ্যোজাত— সকলেরই প্রাণের ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে।
২০২০ সালের পর থেকে পেরিনেটাল মুড অ্যান্ড অ্যাংজ়াইটি ডিজ়অর্ডার (পিএমএডি)-এ আক্রান্তের হার দ্বিগুণ হয়েছে। অন্তঃসত্ত্বাদের মধ্যে প্রায় ২৮ শতাংশই এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে আত্মহননের প্রবণতাও বেড়েছে দ্বিগুণ হারে। আগে সাধারণ মানুষের মধ্যে এই বিষয়ে তেমন সচেতনতা না থাকলেও এখন বিভিন্ন থেরাপি এবং অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্ট ওষুধ প্রয়োগ করে এই সমস্যা সমাধান করা হচ্ছে। এই গবেষণা নতুন মায়েদের মানসিক স্বাস্থ্যে বিপুল আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।