Combination Drugs

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে তিন রকম ‘ককটেল ওষুধ’! দেশ জুড়ে সমীক্ষায় দাবি আইসিএমআরের

দু’টি করে ওষুধ মিশিয়ে তিন রকম ‘কম্বিনেশন ড্রাগ’ তৈরি হয়েছে। সেগুলির পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে রোগীদের উপরে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ১২:২৯
Study finds Two drug combinations more effective than single pill in controlling hypertension

কোন কোন ওষুধের মিশ্রণ রক্তচাপ বশে আনতে পারবে? প্রতীকী ছবি।

আর একটি ওষুধে ভরসা নয়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে তিন রকম ককটেল ওষুধ নিয়ে গবেষণা ও সমীক্ষা চলছে দেশ জুড়ে। দু’টি করে ওষুধ মিশিয়ে তিন রকম ‘কম্বিনেশন ড্রাগ’ তৈরি হয়েছে। সেগুলির পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে রোগীদের উপরে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে ভারতের সেন্টার ফর ক্রনিক ডিজ়িজ় কন্ট্রোল (সিসিডিসি) এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) সমীক্ষাটি চালাচ্ছে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে।

Advertisement

চিকিৎসার ভাষায় এই ‘কম্বিনেশন’ ওষুধগুলিকে বলা হয় ‘এফডিসি’ অর্থাৎ, ‘ফিক্সড ডোজ় কম্বিনেশন’। একাধিক ওষুধ বিভিন্ন মাত্রায় যোগ করে একটি ওষুধ তৈরি হয়। সহজ করে বললে, একাধিক রাসায়নিক গঠনযুক্ত ওষুধ এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এ ক্ষেত্রে দু’টি করে ওষুধ মিশিয়ে তিন রকমের ‘কম্বিনেশন’ তৈরি করা হয়েছে। সেগুলির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হচ্ছে রোগীদের উপরে। দিল্লির ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স’ বা এইমসও এই সমীক্ষায় অংশ নিয়েছে। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত দেশের ৩৫টি হাসপাতালে রোগীদের ওই তিন রকম ওষুধ ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খাইয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

কী কী ওষুধ মেশানো হয়েছে?

আইসিএমআর জানিয়েছে, অ্যামলোডিপিন, পেরিন্ডোপ্রিল, ইন্ডাপামাইড— এই তিন রকম ওষুধই বিভিন্ন মাত্রায় মেশানো হয়েছে। অ্যামলোডিপিনের সঙ্গে পেরিন্ডোপ্রিল মিশিয়ে তৈরি হয়েছে একটি ‘কম্বিনেশন’, আবার অ্যামলোডিপিনের সঙ্গে নির্দিষ্ট মাত্রায় ইন্ডাপামাইড মিশিয়ে তৈরি হয়েছে আরও একটি ওষুধ। তা ছাড়া পেরিন্ডোপ্রিলের সঙ্গে ইন্ডাপামাইডও মেশানো হয়েছে নির্দিষ্ট মাত্রায়। এই তিন রকম ককটেল ওষুধ রোগীদের খাইয়ে দেখা গিয়েছে, তাঁদের রক্তচাপ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আইসিএমআরের দাবি, ওষুধ খাওয়ানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বার বার পরীক্ষা করা হচ্ছে রোগীদের। নিয়ম করে রোজ নির্দিষ্ট ডোজ়ে ওষুধগুলি খাওয়ানো হচ্ছে। তাতেই সুফল পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি।

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, যত জন ভারতীয় রক্তচাপের সমস্যায় আক্রান্ত, তাঁদের মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষ নিজেদের সমস্যা সম্পর্কে অবগতই নন। অথচ রক্তচাপের সমস্যা ডেকে আনতে পারে হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোক। কিছু ক্ষেত্রে পরিবারে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে পরবর্তী প্রজন্মে সঞ্চারিত হতে পারে এই রোগ। তা ছাড়া স্থূলতা, থাইরয়েডও উচ্চ রক্তচাপের কারণ হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন ধরা পড়লে এত দিন এক রকম ওষুধই দেওয়া হত রোগীদের। সেটিই খেয়ে যেতে হয় নিয়ম করে। তবে এখন রোগ গোড়া থেকে নির্মূল করতে ককটেল ওষুধ নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু হয়েছে।

তবে সমীক্ষা এখনও চলছে। আইসিএমআর সূত্রে খবর, ওষুধগুলি ঠিকমতো কাজ করছে কি না, কোনও রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে কি না, তা জানতে আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। সম্পূর্ণ নিরাপদ মনে হলে তবেই তা বাজারে আনা হবে।

আরও পড়ুন
Advertisement