কেন বাড়ছে মায়োপিয়ার ঝুঁকি? ছবি: সংগৃহীত।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই আমাদের হাত চলে যায় মোবাইলের দিকে। মিনিট দশ-পনেরো সমাজমাধ্যমে উঁকি না দিলে অনেকেরই দিন শুরু হয় না। শৌচালয়ে গিয়েও শান্তি নেই, সেখানেও সঙ্গী ফোন। কেবল বড়দেরই নয়, শিশুদেরও এখন পড়াশোনা চলে অনলাইনে। তাদের ক্ষেত্রেও ‘স্ক্রিন টাইম’ আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে কোভিডের পর। মোবাইল, ল্যাপটপ কিংবা ট্যাব— যে কোনও স্ক্রিনের দিকে দীর্ঘ ক্ষণ তাকিয়ে থাকার ফলে দৃষ্টিশক্তি কমে যাচ্ছে তাদের। বাড়তি স্ক্রিন টাইমের কারণে দূরের জিনিস দেখতে সমস্যা হচ্ছে অনেকেরই। চিকিৎসকেরা এই সমস্যাকে বলেন মায়োপিয়া। এই সমস্যায় যাঁরা আক্রান্ত হন, তাঁরা নির্দিষ্ট দূরত্বে থাকা সব কিছু ঝাপসা দেখেন।
ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের অর্ধেক সংখ্যক মানুষ মায়োপিয়ায় আক্রান্ত হবেন। মায়োপিয়ায় আক্রান্ত রোগী কাছের জিনিস দেখতে পারলেও দূরের জিনিস দেখতে তাঁদের সমস্যা হয়। মায়োপিয়া বিভিন্ন কারণে হতে পারে। তবে চিকিৎসকদের মতে, মায়োপিয়ার অন্যতম বড় কারণ হল সূর্যের আলোয় কম সময় কাটানো। চিকিৎসকদের মতে, চোখের স্বাস্থ্যের জন্য প্রাকৃতিক আলো ভীষণ জরুরি। বিশেষ করে, শিশুদের ক্ষেত্রে সূর্যের আলোয় বেশি ক্ষণ থাকলে রেটিনায় ডোপামিন নামক যৌগের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই যৌগ দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে এবং মায়োপিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে। তাই শিশুদের দিনের আলো থাকতে থাকতে বেশি করে বাড়ির বাইরে সময় কাটানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। চোখ ভাল রাখতে এই অভ্যাস খুব স্বাস্থ্যকর।
মায়োপিয়ার উপসর্গ কী?
১. দূরের কোনও জিনিস একেবারে ঝাপসা দেখা।
২. দূরের কোনও জিনিসকে স্পষ্ট দেখার জন্য চোখের পাতা কুঁচকে কাছাকাছি নিয়ে আসা।
৩. সারা ক্ষণ মাথাব্যথা করা।
৪. চোখে যন্ত্রণা।
মায়োপিয়ার ঝুঁকি এড়াতে সবার আগে ফোন থেকে দূরে থাকা ভীষণ জরুরি। সকালে উঠে ফোনের পিছনে সময় নষ্ট না করে বাইরে বেরিয়ে হালকা শরীরচর্চা কিংবা হাঁটাহাটি করতে পারেন। শিশুরা স্কুল থেকে ফিরলে অবশ্যই সন্ধে হওয়ার আগে তাদের মাঠে খেলতে পাঠান। ঘরে বসে ভিডিয়ো গেম নয়, ছুটির দিনে বেশি করে প্রাকৃতিক আলোয় সময় কাটাতে উৎসাহী করে তুলুন খুদেকে।