ডায়াবিটিস থাকলে উপোস করা যাবে? গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
দুর্গাপুজোর চতুর্থী থেকেই বঙ্গবাসীর মধ্যে শুরু হয় নানা রকম ব্রত-পালন। এই সব আচার-অনুষ্ঠান মানেই মা-কাকিমাদের উপোস। অবাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যেও এই সময়ে শারদ নবরাত্রি পালনের রীতি। সারা দিন উপোস করে অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেকেই। কেউ আবার ১২ ঘণ্টা জল না খেয়েও দিব্যি সুস্থ থাকেন। তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, একেক জনের শরীরের চাহিদা একেক রকম। তাই উপোস করলেই যে সকলে অসুস্থ হয়ে পড়বেন, এমন নয়। আবার দু-এক দিন ভাত না খেলেই কাহিল হয়ে পড়েন এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়। বিশেষ করে যাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি, তাঁদের জন্য অনেক ক্ষণ খালি পেটে থাকা কিন্তু যথেষ্ট চিন্তার। সারা দিন ধরে উপোস করে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ অনেকটা কমে গেলে মাথা ঘুরে যেতেই পারে। শুধু তাই নয়, শর্করার মাত্রা ঘন ঘন ওঠানামা করলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই উপোস করার আগে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন।
উপোস করার আগে কী কী মাথায় রাখবেন?
১) যে কারণেই উপোস করুন না কেন, আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সকলের শরীর এক রকম হয় না, তাই সারা দিন না খেয়ে থাকার ধকল নেওয়ার ক্ষমতা সকলের থাকে না।
২) যাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি, তাঁদের নিয়মিত পরীক্ষা করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
৩) উপোস করলেও শরীরে জলের অভাব যেন না ঘটে। ফলের রস, ঘোল, শরবতের মতো তরল সারা দিন ধরে খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। অনেকেই নির্জলা উপোস করেন, তাঁদের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
৪) উপোস শুরু করার আগে এমন কিছু খাবার খেতে হবে, যেগুলির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। খাবারে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বা ‘জিআই’ কম থাকলে রক্তে গ্লুকোজ ছড়িয়ে পড়ার গতি শ্লথ হয়। যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। সহজে কাহিল হতে দেয় না।
৫) যে সব খাবারে কার্বোহাইড্রেট এবং ক্যালোরির পরিমাণ বেশি, সেই সব খাবার উপোস ভাঙা মাত্রই খাওয়া যাবে না। পুষ্টিবিদেরা বলেন, জল, ফলের রস কিংবা ঘোল জাতীয় পানীয় খেয়ে উপোস ভাঙা যায়। তার পর খেজুর, ছোলা, বাদামের মতো খাবার খাওয়া যেতে পারে। তেলেভাজা কিংবা অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার না খাওয়াই ভাল।