Zero Sugar Tolerant Diet

একটি জিনিস না খেয়েই ২৩ কেজি ওজন ঝরিয়েছেন, ওরি যে ডায়েট করছেন তা ভাল না খারাপ?

২৩ কেজি ওজন ঝরিয়ে ফেলেছেন খুব তাড়াতাড়ি। ডায়েট থেকে বাদ দিয়েছেন মাত্র একটি জিনিস। কী ভাবে আচমকাই এত ছিপছিপে হয়ে গেলেন ওরি, সেই রহস্য ফাঁস করেছেন নিজেই।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ১২:১৮
Orry Sheds 23 Kilos With a special type of diet, know the details

ওরির ডায়েট কি স্বাস্থ্যকর, পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদ। ছবি: সংগৃহীত।

বছরখানেক আগেও তাঁর নাম জানতেন না কেউ। গত কয়েক মাসে বলিপাড়ায় মধ্যমণি হয়ে উঠেছেন ওরহান অবত্রমানি তথা ওরি। জাহ্নবী কপূর, খুশি কপূর থেকে সারা আলি খান, অনন্যা পাণ্ডে, এমনকি, দীপিকা পাড়ুকোন, ক্যাটরিনা কইফের মতো তারকাদের সঙ্গে তাঁর নিত্য ওঠাবসা। বলিউডের যে কোনও পার্টিতেই তারকাদের গা ঘেঁষে ছবি তুলতে দেখা যায় তাঁকে। সেই ওরিই ২৩ কেজি ওজন ঝরিয়ে ফেলেছেন খুব তাড়াতাড়ি। ডায়েট থেকে বাদ দিয়েছেন মাত্র একটি জিনিস। কী ভাবে আচমকাই এত ছিপছিপে হয়ে গেলেন ওরি, সেই রহস্য ফাঁস করেছেন নিজেই।

Advertisement

সম্প্রতি মালাইকা অরোরা এবং আরবাজ খানের ছেলে আরহান খানের পডকাস্টের একটা পর্বে হাজির ছিলেন ওরি। সেখানেই তিনি বলেন, গত কয়েক মাস ধরে ‘জ়িরো-সুগার-টলারেন্ট’ ডায়েট করছেন। অর্থাৎ খাওয়াদাওয়া থেকে চিনি একেবারেই বাদ দিয়ে দিয়েছেন। ঘরে তৈরি খাবারই খান। দিনভর পার্টি করলেও ভাজাভুজি ছুঁয়েও দেখেন না। প্রাতরাশে ডিমের সাদা অংশের অমলেট খান। আর তার পর নাকি সারা দিন তেমন কিছু খানই না। রাতে ইচ্ছে হলে বাড়িতে যা থাকে, তা-ই খান। এই ভাবেই ২৩ কেজি ওজন কমিয়ে, এখন তাঁর ওজন ৫০ কেজি। আরও কয়েক কেজি ওজন কমানোর ইচ্ছা আছে তাঁর। একেবারে ৪৭ কেজিতে পৌঁছে তবেই থামবেন তিনি।

জ়িরো-সুগার-টলারেন্ট’ ডায়েট কি ভাল?

স্থূলতা, ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার আরও একটি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কারণ হল চিনি খাওয়ার অভ্যাস। এই অভ্যাস ছাড়তে পারলেই যেমন ওজন কমবে, তেমনই জটিল রোগের আশঙ্কাও কমবে। পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তীর মত, মিষ্টি খাওয়া একেবারে ছেড়ে দিতে বলা হচ্ছে না। তবে চিনির পরিমাণ কমিয়ে আনাই ভাল। অন্তত এক মাস ডায়েট থেকে চিনি বাদ দিয়ে দেখতে পারেন। শরীর অনেক তরতাজা হবে।

চিনি বাদ দিলে লাভ কী কী?

শম্পার কথায়, যাঁরা বহু চেষ্টা করেও ওজন ঝরাতে পারছেন না, তাঁরা চিনি খাওয়া বন্ধ করে দেখতে পারেন। এতে ক্যালোরি কম ঢুকবে শরীরে। তবে শুধু রান্না বা চায়ে চিনি বাদ দিলেই হবে না। কেক, পেস্ট্রি, নরম পানীয়, প্যাকেটজাত ফলের রস, প্রক্রিয়াজাত সমস্ত খাবারই খাওয়া বন্ধ করতে হবে। এমনকি হেল্‌থ ড্রিঙ্কেও কিন্তু চিনি থাকে, তাই সেটিও খাওয়া চলবে না। পরিবর্তে খেতে হবে ডিটক্স পানীয়। টম্যাটো সস্, বার্বিকিউ সস্, স্যালাড ড্রেসিং-এর মতো খাবারেও প্রচুর শর্করা থাকে। সেগুলিও খাওয়া চলবে না।

চিনি খাওয়া বন্ধ করলে শরীরের অতিরিক্ত ক্লান্তি ভাব কমবে, হার্ট ভাল থাকবে, ব্যথা-বেদনা কমতে থাকবে, ঘুম ভাল হবে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসবে, এমনকি মানসিক স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে। বিভিন্ন গবেষণা বলছে, অতিরিক্ত চিনি খেলে স্মৃতিনাশ হতে পারে। শিশুরা যদি বেশি চিনি দেওয়া খাবার খায়, তা হলে তাদের বুদ্ধির বিকাশ সেই ভাবে হবে না।

ওরির ডায়েট কি স্বাস্থ্যকর?

পুষ্টিবিদের পরামর্শ, তারকারা আদতে কী খাচ্ছেন, তার সবটা প্রকাশ্যে আসে না। চিনি খাওয়া বন্ধ করা ভাল, কিন্তু সারা দিন না খেয়ে থাকার অভ্যাস মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। সারা দিনের ডায়েটে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট নির্দিষ্ট মাত্রায় রাখতেই হবে। না হলেই অপুষ্টিজনিত রোগ বাসা বাঁধবে। চিনি খাওয়া বন্ধ করলে বদলে চিকেন, মাছ, টোফু ইত্যাদি প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে। ডায়েটে রাখতে হবে প্রোবায়োটিক, যেমন দই ও দুগ্ধজাত খাবার এবং বিভিন্ন ধরনের বাদাম, যেমন কাঠবাদাম, আখরোট, পেস্তা, চিয়া বীজ, তিসির বীজ। প্রোটিনের পাশাপাশি এতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও ফাইবারের চাহিদাও পূরণ হবে। সেই সঙ্গে খেতে হবে সবুজ শাকসব্জি। সারা দিনে পর্যাপ্ত জল খেতে হবে এবং টানা ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমও জরুরি। তা হলেই ওজনও কমবে এবং শারীরিক ক্লান্তিও থাকবে না।

আরও পড়ুন
Advertisement