জল খাওয়ার সময়ে এই ভুলগুলি রোজ করেন কি। —ফাইল চিত্র।
সুস্থ থাকার জন্য যে পর্যাপ্ত জল খাওয়া প্রয়োজন, সে কথা কারও অজানা নয়। তবুও অনেক সময়েই আমরা শরীরের যথোপযুক্ত আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ অনুযায়ী জল পান করি না। ফলে কিডনির সমস্যা, শরীরে জলশূন্যতা দেখা দেয়। চিকিৎসকেরা বলেন, সুস্থ থাকতে সঠিক ওজন বজায় রাখতে দিনে ৩ লিটার জল পান করা প্রয়োজন। তবে এই হিসেব সকলের জন্য সমান নয়। ওজন কত, শরীরের অবস্থা কেমন, কোনও দুরারোগ্য রোগব্যাধি রয়েছে কি না ইত্যাদি বিচার করে চিকিৎসকেরাই বলে দেন, কার কতটা জল খাওয়া উচিত। এখন কথা হল, জলপানের সময়ে আপনি কি নিয়ম মানছেন? মনে হতেই পারে, জল পান করার আবার কী নিয়ম আছে! কিন্তু চিকিৎসকেরাই জানাচ্ছেন, জলপানের সময়ে কিছু সাধারণ ভুল কমবেশি সকলেই করেন। এই ভুলগুলি শুধরে না নিলে, পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
জলপানের সময়ে কী কী ভুল একেবারেই করবেন না?
১) ঢকঢক করে ফ্রিজের ঠান্ডা জল একেবারেই খাবেন না। ফ্রিজের জল বা বরফ মেশানো জল নৈব নৈব চ। খুব গরমে অস্বস্তি হলে ঘরের সাধারণ তাপমাত্রায় থাকা জলে সামান্য ফ্রিজের জল মিশিয়ে খেতে পারেন। তবে, তা-ও যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই ভাল।
২) খাবার খাওয়ার সময়ে জলপান করেন কি? এই অভ্যাস অনেকেরই রয়েছে। খাবার খাওয়ার সময়ে শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকে। এই সময়ে পাকস্থলী থেকে বিভিন্ন রস নিঃসৃত হয়, যা খাবারকে হজম করাতে সাহায্য করে। এই সময়ে বেশি করে জল খেলে, হজমের প্রক্রিয়াটাই বাধা পাবে। ফলে পেট ফাঁপা, বমি ভাব, গ্যস-অম্বলের সমস্যা বাড়বে।
৩) বোতল থেকে নয়, বরং গ্লাসে করে জল খান। আর জল খাওয়ার সময় এক জায়গায় সুস্থির হয়ে বসতে হবে। হাঁটাচলা করতে করতে কিংবা অস্থির অবস্থায় পায়চারি করার সময়ে জল খাবেন না। এর ফলে গলায় বা নাকে জল আটকে আপনার বিষম লাগতে পারে।
৪) যতই তৃষ্ণা থাক, জল ঢকঢক করে নয় বরং ধীরেসুস্থে পান করা উচিত। না হলে শ্বাসনালিতে জল চলে যেতে পারে।
৫) কখন জলপান করছেন, তা-ও গুরুত্বপূর্ণ। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে জলপান করা সবচেয়ে ভাল। দাঁত মাজার আগেই জল খেয়ে নিন। এই অভ্যাস করলে অম্বলের সমস্যা কমবে, হজমশক্তি বাড়বে। খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে ও খাওয়ার ১ ঘণ্টা পরে জলপান করা উচিত।
৬) বাড়িতে খাওয়ার জল সব সময়ে কাচ, স্টিল বা মাটির পাত্রে রাখুন। প্লাস্টিক বা অন্য কোনও পদার্থ ব্যবহার না করাই ভাল। তামার পাত্রেও জল রাখতে পারেন। তামা বা মাটির পাত্র থেকে জল খাওয়া খুবই স্বাস্থ্যকর।
৭) জল যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকুই পান করুন। তিন লিটার বা তার বেশি জলপান করতে হবে, এই হিসেব করে দিনভর ঢকঢক করে জল খেয়ে গেলে কিন্তু সমস্যা বাড়বে। কম জল খেলে যেমন শরীরের ক্ষতি হবে, তেমনই প্রয়োজনের অতিরিক্ত জলপানে ‘ওভারহাইড্রেশন’ হবে। তখন হাত-পা ফুলে যাওয়া, খিঁচুনি বা কিডনির রোগও হতে পারে।