মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত এই প্রকল্পে নিমহানস হবে মূল কেন্দ্র। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ
সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আর এ বারের বাজেটে নজর কেড়েছে যে বিষয়গুলি তার মধ্যে অন্যতম হল মানসিক স্বাস্থ্যের উল্লেখ। মানুষের সামগ্রিক সুস্থতার জন্য মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্বের উপর দীর্ঘ দিন ধরেই জোর দিয়ে আসছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কোভিড অতিমারিতে আরও প্রকট হয় এই সমস্যা। তার পরই বাজেটে ‘ন্যাশনাল টেলি মেন্টাল হেলথ প্রোগ্রাম’ বা মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি সর্বভারতীয় উদ্যোগের পরিকল্পনাকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
এ দিন বাজেট পেশ করার সময় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানান, দেশব্যাপী ২৩টি উৎকর্ষ কেন্দ্রকে এক ছাতার তলায় এনে এই কর্মসূচি শুরুর কথা ভাবছে কেন্দ্র। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত এই প্রকল্পে নিমহানস হবে মূল কেন্দ্র এবং আইআইটি বেঙ্গালুরু একে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে।’’
আপাতদৃষ্টিতে এই উদ্যোগের কিছু উপকারিতা আছে বলে মনে করছেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘মানসিক স্বাস্থ্যকে আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজনের কথা আমরা অতিমারির আগে থেকেই বলছিলাম। অতিমারিতে আরও প্রকট হয় এই সংকট, কাজেই যদি আরও বেশি সংখ্যক মানুষের সঙ্গে এই বিষয়ে সমন্বয় সাধন করা যায় তবে নিঃসন্দেহে তাতে কিছুটা উপকার হবে।’’ তবে এর পরেও কিছু আশঙ্কা থেকে যায় বলে অনুত্তমা জানান, ‘‘মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবা এত বেশি প্রযুক্তি নির্ভর করতে গেলে বহু মানুষ এর আওতার বাইরে চলে যেতে পারেন।’’ তার প্রশ্ন, ‘‘ফোন এবং প্রযুক্তির কাছাকাছি পৌঁছতে যে বিত্তের প্রয়োজন, সেই বিত্ত যাঁদের নেই তাঁদের কি মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবার অধিকার থাকবে না?’’ তাই এই উদ্যোগের সমান্তরালে সরাসরি মণ্ডলভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান তিনি। তাঁর অভিমত এতে প্রাথমিক মানসিক শুশ্রূষার বন্দোবস্ত আরও দৃঢ় হবে। আরও বেশি সংখ্যক মানুষ উপকৃত হবেন।
এই পরিকল্পনার পাশাপাশি অনুত্তমার পরামর্শ, ‘‘এর পাশাপাশি সর্বক্ষণ সচল থাকে এমন কিছু সুইসাইড হেল্প লাইন নম্বরও উঠে আসুক। এই ধরনের পরিষেবার কাছে হাত পেতে যেন কাউকে নিরাশ হতে না হয়। অনেক ক্ষেত্রে এই ধরনের নম্বরগুলিতে যোগাযোগ করেও আমরা পরিষেবা পাই না। এই বিষয়টিকেও যদি এই পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত করা যায় তবে উপকৃত হবেন অনেকে।’’