ফুসফুসের টিউমার যত বড় হতে থাকে, ততই হৃদ্যন্ত্রের উপর চাপ সৃষ্টি হয়।
আধুনিক জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাসে অনিয়ম, অতিরিক্ত দূষণের কারণে আমাদের চারপাশে যে সব অসুখের প্রকোপ সবচেয়ে বেড়েছে, তার মধ্যে ক্যানসার প্রধান। ভারতে যে সব ক্যানসারের প্রবণতা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে, তার মধ্যে ফুসফুসের ক্যানসার অন্যতম। মূলত ধূমপায়ীদেরই ফুসফুসে ক্যানসার হয় বলে ধারণা রয়েছে আমাদের। কারও ফুসফুসে ক্যানসার হলেই আমরা ধরে নিই, তিনি ধূমপায়ী ছিলেন। কিন্তু ধূমপান না করলেও ফুসফুসে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়।
বারবার নিউমোনিয়া বা ব্রঙ্কাইটিসের মতো উদ্বেগজনক লক্ষণগুলি দেখা দিলে বুঝতে হবে ক্যানসার ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে আপনার শরীরে। কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ এবং উপসর্গ রয়েছে যা জানান দেয় ফুসফুসে তৈরি হওয়া টিউমার আপনার হৃদ্যন্ত্রের উপর চাপ তৈরি করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হৃদ্স্পন্দনের হার হঠাৎ বেড়ে যাওয়াও এই মারণরোগের লক্ষণ হতেই পারে।
ইউরোপীয় কার্ডিওলজি রিভিউ (ইসিআর) অনুসারে, ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বুক ধড়ফড় করা একটি সাধারণ ঘটনা। এ ক্ষেত্রে ফুসফুসের টিউমার যত বড় হতে থাকে, ততই হৃদ্যন্ত্রের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। তবে বুকে ধড়ফড়ানি মানেই তা ক্যানসারের লক্ষণ না-ও হতে পারে।
অনেক সময় মানসিক চাপ, শরীরচর্চা, ওষুধের প্রভাবেও এমনটা হতে পারে। এ ছাড়া আর কোন কোন সঙ্কেত পেলে বেশি সাবধান হতে হবে?
ঘন ঘন সর্দি-কাশি লেগেই আছে? এমন কিন্তু স্বাভাবিক নয়। সাধারণ কাশি সপ্তাহ খানেকের বেশি স্থায়ী হয় না। তাই দীর্ঘ দিন যদি কাশি না কমে, তা হলে সাবধান হওয়া জরুরি। ফুসফুসে টিউমার তৈরি হলে বায়ু প্রবাহের পথ রুদ্ধ হতে পারে। আবার কখনও কখনও টিউমারের প্রভাবে ফুসফুসে জল জমে যেতে পারে। কাজেই অল্প হাঁটাহাঁটি কিংবা সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করলেই যদি দম ফুরিয়ে আসার উপক্রম হয়, তবে তা উপেক্ষা করা বাঞ্ছনীয় নয়। এ ছাড়াও কফের সঙ্গে রক্ত বেরোনো, হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া, খাওয়ার ইচ্ছে কমে যাওয়া, সর্বক্ষণ ক্লান্তিভাব, শ্বাস নেওয়ার সময় বুকে ব্যথাও ফুসফুসের ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নখ দেখেও বোঝা যায় আপনার শরীরে এই রোগ বাসা বেঁধেছে কি না! নখ নরম হয়ে যাওয়া, স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বেঁকে যাওয়া, আঙুলে জল জমে ফুলে যাওয়া— এই উপসর্গগুলিও ফুসফুসে ক্যানসারের উপসর্গ হতে পারে।