— প্রতীকী ছবি
রেচনতন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল কিডনি। কিডনির প্রধান কাজ হল রক্তে থাকা দূষিত পদার্থ ছেঁকে বার করা। এ ছাড়াও কিডনি রক্তে লবণ এবং পটাশিয়ামের ভারসাম্য রক্ষা করে, ক্যালশিয়াম শোষণেও সাহায্য করে। দীর্ঘ দিন ধরে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ক্ষতি করে। কিডনি ঠিক মতো কাজ না করলে নানা রকম শারীরিক জটিলতার সৃষ্টি হয়।
কিডনির অসুখ ধরা পড়ে অনেক দেরিতে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, দুটি কিডনিই ৮০-৯০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর আমরা বুঝতে পারি। ওজন কমে যাওয়া, খিদে না পাওয়া, ক্লান্তি, গোড়ালি ফোলা, প্রস্রাবে রক্ত, অনিদ্রা, চুলকানি, পেশিতে খিঁচুনি এবং মাথাব্যথার মতো লক্ষণগুলিকে কখনওই অবহেলা করা উচিত নয়। একটা বয়সের পর থেকেই নিয়মিত কিডনির যাবতীয় পরীক্ষা করানো উচিত। ডায়াবিটিস ও উচ্চরক্তচাপের সমস্যা থাকলে বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে। রইল এমন পাঁচটি কৌশল যা কিডনি ভাল রাখতে সহায়তা করবে।
১) নিয়ম করে শরীরচর্চা: নিয়মিত শরীরচর্চা যে কোনও রোগেরই ঝুঁকি কমায়, কিডনির অসুখও তার ব্যতিক্রম নয়। পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ কিডনির সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি। যাঁরা শরীরচর্চা করার সুযোগ বা সময় পান না তাঁদের জন্য নিয়মিত হাঁটাহাটি, দৌড়ঝাঁপ, সাঁতার কাটা বা সাইকেল চালানোর মতো অভ্যাস অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে। সময় করে কোনও না কোনও উপায় শারীরিক ভাবে সচল থাকার চেষ্টা করুন।
২) ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ: ডায়াবিটিস কিডনির সমস্যা ডেকে আনে। ডায়াবিটিসে যেহেতু রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়, তাই রক্ত পরিশুদ্ধ করতে কিডনিকে বেশি কাজ করতে হয়। এই কারণেই বারংবার মূত্র ত্যাগের প্রবণতা দেখা যায়। তাই রক্তে শর্রকার মাত্রা সামান্য বাড়তেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করুন।
৩) ধূমপান কমানো: ধূমপান শুধু ফুসফুস নয়, কিডনিরও ক্ষতি করে। ধূমপানে রক্তনালির ক্ষতি হয় ও দেহে রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা তৈরি হয়। যা কিডনির উপর মারাত্মক চাপ তৈরি করে। ধূমপান কিডনির ক্যানসারের আশঙ্কাও বৃদ্ধি করে।
৪) পর্যাপ্ত জল পান: কিডনির স্বাস্থ্য ভাল রাখতে জল খেতে হবে এ কথা সবাই জানেন, কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় যে অনেকেই পরিমিত পরিমাণে জল পান করেন না। দিনে অন্তত দুই থেকে আড়াই লিটার জল পান করা আবশ্যিক। আবহাওয়া কিংবা শারীরিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে এই পরিমাণ বদলে যেতে পারে।
৫) খেয়াল খুশি মতো ওষুধ খাওয়া বন্ধ করা: পেট ব্যথা থেকে সর্দিকাশি, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খেয়ে ফেলেন অনেকেই। কিন্তু অধিকাংশ প্রদাহনাশক ওষুধ, আইবুপ্রফেন কিংবা ন্যাপ্রক্সেন জাতীয় ওষুধ অনিয়ন্ত্রিত ভাবে প্রয়োগ করলে কিডনির উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। শরীরে কোনও অংশে ব্যথা, মাথা যন্ত্রণা বা আর্থরাইটিসের ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খেলে কিডনির ক্ষতি হতে পারে।