ডায়েট করলে কতটা লাভ হতে পারে ক্যানসার আক্রান্তের? ফাইল চিত্র।
সিংহাসনে বসার ৬ মাসের মধ্যে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন ব্রিটেনের রাজা চার্লস। প্রাথমিক ভাবে শোনা গিয়েছিল, চার্লস প্রস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত। কিন্তু ব্রিটিশরাজের দফতর পরে বিবৃতি দিয়ে জানায়, মূত্রথলিতে একটি অস্ত্রোপচার হলেও সেখানে ক্যানসার হয়নি রাজার। তিনি ঠিক কোন ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত, তা জানা যায়নি। তবে সম্প্রতি বাহিকংহাম প্যালেসের তরফে জানানো হয়েছে, ৭৫ বছরের রাজার চিকিৎসা চলছে এবং তিনি অনেকটাই ভাল আছেন। সবচেয়ে বড় কথা হল, ভোজনরসিক রাজা তাঁর খাদ্যতালিকা থেকে এমন অনেক জিনিস বাদ দিয়েছেন, যা তিনি বেশি পছন্দ করতেন।
মধ্যাহ্নভোজে রেড মিটই বেশি পছন্দ ছিল রাজার। মাটনের নানা পদ অথবা পর্ক, ল্যাম্ব বা বিফও থাকত তাঁর পাতে। সেই সব আপাতত বর্জন করেছেন রাজা। চিকিৎসা শুরু হওয়ার পর থেকে রেড মিট ছুঁয়েও দেখেননি তিনি। দুপুরে থালা সাজিয়ে খেতেও বসেন না। বরং সবজি ও স্যালাডই থাকে তাঁর পাতে। আর রোজ খাওয়ার পর একটি করে অ্যাভোক্যাডো নিয়ম করে খান তিনি।
রানি ক্যামিলা ও তাঁর ছেলেও জানিয়েছেন, ক্যানসারের চিকিৎসা চলাকালীন একটি বারের জন্যও নিজের পছন্দের কোনও খাবার চেখেই দেখেননি রাজা চার্লস। মাংস খাওয়া পুরোপুরি ছেড়ে দিয়েছেন। রাজকীয় ভোজ ছেড়ে ডিটক্স পানীয় খান তিনি।
এখন কথা হল, ক্যানসার সারাতে কি ডায়েট সত্যিই অপরিহার্য?
এই বিষয়ে মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বলেন, “ডায়েট করলেই যে ক্যানসার সারবে, তা নয়। তবে ক্যানসারের রোগীদের ক্ষেত্রে সুষম ডায়েট সত্যিই জরুরি। তেলমশলা দেওয়া খাবার কম খাওয়া, বেশি করে শাকসব্জি ও ফল, ডিটক্স পানীয় খেলে শরীর অনেকটাই ভাল থাকতে পারে। আসলে কার শরীর কেমন, কী ধরনের ক্যানসারে ভুগছেন, ক্যানসার ঠিক কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে তার উপর নির্ভর করেই ডায়েট ঠিক করতে হবে।” চিকিৎসক জানাচ্ছেন, অনেক সময় দেখা যায়, ক্যানসারের রোগী কেমোথেরাপি বা রেডিয়োথেরাপি নিচ্ছেন এবং সেই সঙ্গে এমন কিছু খাচ্ছেন, যা ক্যানসার কোষের বিভাজন আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। অনেক সময়ে নানা রকম ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেও বিপদ বাড়ে। তাই কেউ যদি নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া করেন, বেশি করে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ খাবার খান, তাতে লাভই হবে। এমন অনেক ক্যানসারের রোগীই আছেন, যাঁরা চিকিৎসার পাশাপাশি নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া করে বেশ সুস্থ রয়েছেন।