সন্তান নেওয়ার কথা ভাবছেন, কী কী মাথায় রাখতে হবে। ছবি: ফ্রিপিক।
এখন অনেক মেয়েই দেরিতে বিয়ে করছেন। তাই সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করতেও দেরি হচ্ছে। তাই অনেকেরই প্রশ্ন থাকে কোন বয়সে সন্তান নিলে ভাল। বেশি বয়সে সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করে যদি তাতে বাধা আসে, তা হলে হতাশাই বাড়ে।
এই বিষয়ে স্ত্রীরোগ চিকিৎসক মল্লিনাথ মুখোপাধ্যায় বলছেন, “চল্লিশ পেরিয়েও মা হওয়া যায়। এখন প্রায়ই এ রকম হচ্ছে। এমনকি পঞ্চাশের পরেও মা হচ্ছেন অনেকে। তবে যদি শরীর তৈরি থাকে, তা হলে এ সব অসম্ভব নয়। কিন্তু তা হলেই ঝুঁকি বাড়বে। তবে সন্তান নেওয়ার একটা সঠিক সময় আছে। চেষ্টা করতে হবে সেই বয়সের মধ্যে সন্তান নিতে।”
মল্লিনাথের মতে, মা হওয়ার আদর্শ বয়স হল ২১ থেকে ৩০ বছর। এই বয়সেই একটি মেয়ের জরায়ুর উর্বরতা সবচেয়ে বেশি থাকে। ৩০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে জরায়ুর কর্মক্ষমতা কিছুটা কমে যায়। তাই ৩৫ বছরের পরে যদি মা হওয়ার পরিকল্পনা কেউ করেন, তা হলে জরায়ুর অবস্থা ও ডিম্বাণুর গুণগত মান পরীক্ষা করে নিতে হবে সবচেয়ে আগে। মল্লিনাথ বলছেন, “৩০ পেরিয়ে গেলেই জরায়ুর ধারণক্ষমতা ও উর্বরতা দুই-ই কমতে থাকে। তখন সন্তান নিতে সমস্যা হতে পারে। আর যদি হরমোনের ভারসাম্য সঠিক না থাকে, তা হলে গর্ভপাতের আশঙ্কা বেশি থাকে। আবার ডিম্বাণুর গুণমান ভাল না হলে সন্তান বিকলাঙ্গ হতে পারে। মায়ের শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
‘প্রি-কনসেপশনাল কাউন্সেলিং’ এখন এ দেশেও হচ্ছে। মল্লিনাথের কথায়, সন্তান নেওয়ার কথা যদি ভাবেন, তা হলে এক বার চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন। কী কী স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে, তা চিকিৎসকই বুঝিয়ে বলে দেবেন। সেই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, থাইরয়েডের সমস্যা আছে কি না তা-ও পরীক্ষা করে দেখে নিতে হবে।
বয়স ৩৫ পার করে গেলেই সেই মহিলার রক্তের ‘এনআইপিটি টেস্ট’ করে নেওয়া হয়। তাতেই ৯৯ শতাংশ বলে দেওয়া যায় সন্তানের ডাউন সিন্ড্রোম হতে পারে কি না। আলট্রাসাউন্ড ও এএএইচ পরীক্ষা করিয়ে দেখে নেওয়া হয় স্বাভাবিক ভাবে মা হওয়া সম্ভব কি না। তা ছাড়া, আরও দেখা হয়, সন্তানধারণে ও প্রসবের সময় কোনও জটিলতা আসতে পারে কি না। সব কিছু পরীক্ষা করার পরেই সন্তান নেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে।