ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে খাওয়াদাওয়াতে লাগাম টানলে অনেকটাই দূরে থাকে রোগ। প্রতীকী ছবি।
ডায়াবিটিসের সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। জীবনযাত্রার অনিয়ম ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অনেকটাই বাড়িয়ে দেয় এই রোগের আশঙ্কা। অনেকেই ভাবেন কেবল চিনি খেলেই বুঝি ডায়াবিটিস হয়। বিশেষজ্ঞরা কিন্তু বলছেন, অতিরিক্ত চিনি এই রোগের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয় বটে, তবে কেবল চিনি খাওয়া থামলেই যে ডায়াবিটিসের আশঙ্কা দূর হয়ে যায়, এমনও নয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বলছে, আমাদের সাধারণত দু’ধরনের ডায়াবিটিস হয়। টাইপ-১ আর টাইপ-২। এর মধ্যে টাইপ-১ ডায়াবিটিস রোগে অগ্ন্যাশয়ে অবস্থিত ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে মানুষের শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। আর ইনসুলিন না তৈরি হলে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে না। টাইপ ১ ডায়াবিটিসকে অটোইমিউন রোগও বলা হয়। কারণ, এই রোগ নিজে থেকেই হয়। কাজেই কেবল চিনি কম খেয়ে এই ধরনের ডায়াবিটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়।
টাইপ ২ ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে অগ্ন্যাশয়ের কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। কিন্তু মানুষের শরীর ঠিক মতো ইনসুলিন ব্যবহার করতে পারে না। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা অত্যধিক হারে বেড়ে যায়। এই ধরনের ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে খাওয়াদাওয়াতে লাগাম টানলে অনেকটাই দূরে থাকে রোগ।
সাধারণ মানুষের পক্ষে আলাদা করে রোগ চেনা সম্ভব নয়। তবে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই যে ডায়াবিটিস হয়, সেটা টাইপ ২। যা হয় মূলত আমাদের খাদ্যাভ্যাসের কারণে। বংশগত ভাবেও ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই ৪০ বছরের উপরের মানুষের ক্ষেত্রে উপসর্গ না থাকলেও প্রতি বছর ডায়াবিটিস পরীক্ষা করা প্রয়োজন। আমেরিকান ডায়াবিটিস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, তিন দশক আগেও শিশু ও তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এই রোগ ছিল অত্যন্ত বিরল। কিন্তু এই তিন দশকে ছবিটি আশঙ্কাজনক ভাবে বদলে গিয়েছে। তাই অল্পবয়সিদের ক্ষেত্রেও হতে হবে সতর্ক।