ওমিক্রনের উচ্চ সংক্রমণের হার উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে চিকিত্সকদের। ছবি: সংগৃহীত
করোনভাইরাসের নিত্য নতুন রূপ নিয়ে সারা বিশ্ব চিন্তিত। অতীতে ডেল্টার মতো কিছু রূপ যেমন মারাত্মক প্রাণঘাতী প্রমাণিত হয়েছে। তেমনই ওমিক্রন ভাইরাসের সর্ব শেষ রূপটি প্রথমটির চেয়ে আরও বেশি সংক্রামক। এই উচ্চ সংক্রমণের হার উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে চিকিত্সকদের।
বাজারে চলতি টিকা আদৌ কি ওমিক্রনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম, সেই নিয়েও সংশয় করছেন অনেকেই। এর ফলে প্রচলিত কোভিড টিকার মান উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বিজ্ঞান মহলে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে।
মডার্না নামক ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা প্রথম দাবি করেছিল যে, বাজারে প্রচলিত টিকাগুলি কোভিডের নয়া রূপগুলির বিরুদ্ধে অতটা কার্যকর না-ও হতে পারে। তারা এটাও জানিয়েছিল যে, বিশেষ করে ওমিক্রনের বিরুদ্ধে কার্যকর হবে এমন টিকা এ বছরের প্রথম দিকেই প্রস্তুত করা হবে। ফাইজার সংস্থার উচ্চ আধিকারিকরা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন ওমিক্রনের বিরুদ্ধে কার্যকর হবে এমন টিকা শীঘ্রই প্রস্তুত হবে।
আসুন জানা যাক এই টিকা কোভিডের অন্যান্য টিকাগুলির তুলনায় কতটা আলাদা এবং এটি আদৌ প্রয়োজন কি না।
মডার্না এবং ফাইজার— এই দুই সমস্থা ইতিমধ্যেই ওমিক্রনের বিরুদ্ধে কার্যকর হবে এমন টিকা নিয়ে গবেষণাগারে পরীক্ষা- নিরীক্ষা শুরু করেছে। এ ক্ষেত্রেও একই এম-আরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে যা কোভিডের অন্যান্য টিকায় প্রয়োগ করা হয়। ওমিক্রন রূপে অন্তত ৫০টি মিউটেশন রয়েছে যা এটিকে প্রথম দিকের সার্স-কোভ-২ রূপের চেয়ে আলাদা করে। ভারতে প্রস্তুত হয়েছে এমন কোভিড টিকাগুলি মডার্না এবং ফাইজার দ্বারা তৈরি করা ভ্যাকসিনগুলির থেকে খুব আলাদা৷
কোভিশিল্ড টিকায় শরীরে কোধিডের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে অন্য একটি ভাইরাস ব্যবহার করা হয়। ভিন্ন ভাইরাসের একটি পরিবর্তিত সংস্করণ ব্যবহার করে এই টিকা শরীরে কোভিডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। অন্য দিকে, ভারত বায়োনটেকের কোভ্যাক্সিন একটি নিষ্ক্রিয় ভ্যাকসিন, যা প্রতিলিপি তৈরি করে না।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ দ্বারা পরিচালিত একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুসারে, ওমিক্রন সংক্রমণের ফলে শরীরে যে অ্যান্টিবডিগুলি তৈরি হয়, তা ডেল্টা-সহ অন্যান্য রূপের সংক্রমণ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে। তাই স্বাস্থ্য আধিকারিকরা ওমিক্রন নির্দিষ্ট ভ্যাকসিনের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন।
পুণের জায়েন্ট জেনোভা বায়োফার্মাসিউটিক্যালস সংস্থা সম্প্রতি তাদের দুই-ডোজ এমআরএনএ ভ্যাকসিনের ফেজ ২ ট্রায়ালের তথ্য পেশ করেছে এবং ফেজ ৩ ট্রায়ালও প্রায় সমাপ্তির পথে। সংস্থাটি ওমিক্রন রূপের বিরুদ্ধে কার্যকর এমআরএনএ টিকাও তৈরি করছে। মানবদেহে ক্লিনিকাল ট্রায়ালও শুরু হবে শীঘ্রই।