ঋতুস্রাবের সময় কী ভাবে বজায় রাখবেন পরিচ্ছন্নতা? ছবি: সংগৃহীত।
মহিলাদের অত্যন্ত স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া ঋতুস্রাব। এ নিয়ে ঢাকঢাক-গুড়গুড়ের অন্ত নেই। বহু মহিলা এখনও ওষুধের দোকানে গিয়ে পুরুষ দোকানির কাছে ‘স্যানিটারি ন্যাপকিন’-কেনার কথা বলতে লজ্জা পান। কিশোরীরাও এই বিষয়ে খোলামেলা কথা বলতে পারে না। মনে প্রশ্ন থাকলেও, কার সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলা যায়, সেটা বুঝতেই পারে না তারা। অথচ এর সঙ্গে মেয়েদের স্বাস্থ্য জড়িত। ঋতুকালীন পরিচ্ছন্নতা কতটা জরুরি, তা না বুঝলে সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যাবে। তা বিপদ ডেকে আনতে পারে।
ঋতুকালীন পরিচ্ছন্নতা কেন জরুরি?
ঋতুস্রাবের সময়ে পরিচ্ছন্নতার অভাব থাকলে মূত্রনালির সংক্রমণ, জরায়ুমুখের ক্যানসার-সহ শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি, ভবিষ্যতে বন্ধ্যাত্বের মতো সমস্যাও তৈরি করতে পারে।
কী ভাবে বজায় থাকবে পরিচ্ছন্নতা?
১. গ্রামাঞ্চলে এখনও অনেকে কাপড় ব্যবহার করেন। ঋতুস্রাবের সময়ে কাপড় ব্যবহারে সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যায় বহুগুণ। বদলে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করা উচিত। তবে ৬-৭ ঘণ্টার বেশি একটি ন্যাপকিন কখনও রাখা উচিত নয়। অনেকেই মনে করেন, ঋতুস্রাবের পরিমাণ কম হওয়ায় ন্যাপকিন বদলানোর দরকার নেই। এটা একদম ঠিক নয়। দীর্ঘ ক্ষণ একটি স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করলে তা থেকে সংক্রমণের ভয় থাকে।
২. সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঋতুকালীন স্রাবের সময় স্যানিটারি ন্যাপকিনের পাশাপাশি ট্যাম্পন, মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহার হচ্ছে। এগুলি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও মাথায় রাখতে হবে, ৫-৬ ঘণ্টার মধ্যে ট্যাম্পন বদলে নিতে হবে। মেনস্ট্রুয়াল কাপ অত্যন্ত ভাল ভাবে গরম জল ও সাবান দিয়ে পরিষ্কার না করে পুনরায় ব্যবহার করলে তা থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকবে।
৩. স্যানিটারি ন্যাপকিন, ট্যাম্পন বা মেনস্ট্রুয়াল কাপ বদলের আগে ও পরে সাবান দিয়ে খুব ভাল ভাবে হাত ধুয়ে নেওয়া জরুরি।
৪. প্রতি বার স্যানিটারি ন্যাপকিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে খুব ভাল করে গোপনাঙ্গ পরিষ্কার করতে হবে।
৫. পরিচ্ছন্ন থাকতে একাধিক বার স্নান করুন। তবে গোপনাঙ্গে সাবান বা বডি ওয়াশ ব্যবহার করবেন না। এতে সেই অংশের পিএইচ ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে।
৬. ঋতুকালীন পরিচ্ছন্নতার অর্থ শুধু নিজেকে পরিষ্কার রাখা নয়, ব্যবহৃত স্যানিটারি ন্যাপকিন, ট্যাম্পন ভাল ভাবে কাগজ, প্লাস্টিক দিয়ে মুড়ে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলা। না হলে তা থেকেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে।