শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা কেন জরুরি? ছবি: সংগৃহীত।
মহিলাদের হরমোনের তারতম্যের সমস্যা ভীষণ ভাবেই দেখা যায়। শরীরের সুস্থতা ও মনের সুখ সবটাই কিন্তু নির্ভর করে আছে হরমোনের উপরই। তাই শরীর চাঙ্গা রাখতে শরীরে হরমোনের সমতা থাকা ভীষণ জরুরি। আচমকাই ওজন বৃদ্ধি, ঘন ঘন মেজাজ বিগড়ে যাওয়া কিংবা অত্যন্ত ক্লান্তি ভাব কিন্তু হরমোনের তারতম্যের লক্ষণ হতে পারে। চুল পড়ে যাওয়া, ত্বকের সমস্যা, ব্রণ ইত্যাদির কারণও হতে পারে শরীরে হরমোনের সমতার অভাব। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা উপেক্ষা করে ভুল করে থাকেন অনেকে। অথচ ওষুধ খাওয়া ও নিয়মমাফিক জীবনচর্যায় হরমোনের ইমব্যালান্স সহজেই সামাল দেওয়া যায়।
মেয়েদের বয়ঃসন্ধির সময়ে, সন্তান জন্মের পরে ও ঋতুবন্ধের সময় এই সমস্যা হতে পারে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কিছু ক্রনিক অসুখেও এই কষ্ট ভোগ করেন। ডায়াবিটিস, থাইরয়েড, কিডনির রোগ থাকলেও হরমোনাল ইমব্যালান্স হতে পারে। তবে মেয়েদের শরীর এমন ভাবেই তৈরি যে, হরমোনের তারতাম্য খুব সহজেই দেখা দিতে পারে।
হরমোনের ভারসাম্য হারালে কোন কোন রোগে আক্রান্ত হন মহিলারা?
১) হরমোনের ভারসাম্যের তারতম্যে বয়সের হেরফেরে নানা রকমের রোগ দেখা দেয়। সবচেয়ে পরিচিত ‘পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম বা পিওএস। এটি কিশোরীবেলার রোগ। এ ক্ষেত্রে রোগীর ঋতুস্রাব অনিয়মিত হয়ে পড়ে, ওজন বেড়ে যায়, অ্যাকনে হয়, মাথার চুলের গোছ কমে যায়, হাতে-মুখে অবাঞ্ছিত রোম দেখা যায়।
২) হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে গেলে সন্তানধারণেও সমস্যা হতে পারে। যদিও তার চিকিৎসা আছে। হরমোনের গোলমালের কারণেই সিস্ট হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ওষুধেই কাজ দেয়। কখনও কখনও অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়ে।
৩) চল্লিশের পরেও মহিলারা হরমোনের অসুখে ভোগেন। রাতে গরম লাগা, হঠাৎ ঘাম, ত্বক পাতলা হয়ে যাওয়া, কালো ছোপ, খিটখিটে মেজাজ...এ সব উপসর্গ দেখা যায় তখন। ওষুধ দিয়ে, ক্রিম লাগিয়ে সব সমস্যাই আয়ত্তে আনা যায়। তবে প্রয়োজনে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপিও করা হয়।
কী ভাবে সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন?
১) হরমোনের সমস্যা দেখা দিলেই আগে ওজন কমান, ডায়েটে নজর রাখুন।
২) দিনে অন্তত আধ ঘণ্টা জোরে হাঁটুন। সময় না পেলে কিছু ক্ষণ স্কিপিং করুন। যখনই পারবেন একটু হেঁটে নিন।
৩) রাসায়নিক দেওয়া বা প্রসেস্ড ফুড এড়িয়ে চলুন।
৪) হরমোনের অসুখ হওয়ার কারণগুলির অন্যতম মানসিক অশান্তি। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখলেই দেখবেন, হরমোন ভারসাম্য ঠিকঠাক রয়েছে।
৫) তলপেটে একনাগাড়ে ব্যথা, মাথা ধরা, খিটখিটে মেজাজ বা হঠাৎ রেগে যাওয়া, ওজন অত্যধিক বেড়ে যাওয়া— এমন সব উপসর্গকে দেখেও অবহেলা করবেন না। সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।