শিশুর জ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে নিয়ম মানুন। প্রতীকী ছবি।
তীব্র গরমে বড়দের মতো কষ্ট পাচ্ছে ছোটরাও। ঠান্ডা-গরমের ফারাকে ঘন ঘন সর্দিকাশি, জ্বর হচ্ছে শিশুদের। চিকিৎসকেরা বলছেন, অ্যাডেনোভাইরাস নামে সর্দিকাশির ভাইরাসের দাপট বেড়েছে। সেই সঙ্গে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসও আছে। ঘরে ঘরে ভাইরাল জ্বরে আক্রান্ত খুদেরা। সেই সঙ্গে শুকনো কাশি, শ্বাসের সমস্যাও হচ্ছে অনেকের।
শিশুর জ্বর হলেই আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতেই বলছেন রাজ্যের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামী। তাঁর মতে, মরসুম বদলের সময়ে সর্দিকাশি, জ্বর ঘরে ঘরেই হয়। যদি দেখা যায় জ্বর তিন দিনের বেশি রয়েছে তা হলে কিছু পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি। আর শুরু থেকেই চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খেতে হবে। অনেক অভিভাবকই নিজে থেকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াতে থাকেন শিশুদের। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
বাবা-মায়েদের কী করণীয়?
১) সবচেয়ে প্রথম দেখতে হবে সর্দিজ্বর কতটা বাড়ছে। তাপমাত্রা বেশি উঠে গেলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
২) ১০৪ ডিগ্রি অবধি তাপমাত্রা উঠতে দেখা যায়। ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বর সাধারণ ২-৩ দিন থাকে, বারে বারেই ধুম জ্বর আসতে পারে। কিন্তু চার থেকে পাঁচ দিন পরেও জ্বর না কমলে সতর্ক হতে হবে।
৩) বাচ্চাদের প্যারাসিটামল ও আইবুপ্রোফেন দেওয়া যেতে পারে। চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা অন্তর দিনে পাঁচ থেকে ছয় বার ওষুধ খাওয়ানো যাবে। তবে ওষুধ নিজে থেকে খাওয়াতে যাবেন না। চিকিৎসককে জিজ্ঞেস করে তবেই ওষুধ খাওয়ানো উচিত।
৪) অ্যাসপিরিন কোনও ভাবেই দেওয়া যাবে না বাচ্চাদের।
৫) জ্বরের সঙ্গে যদি খিঁচুনি, অজ্ঞান হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়, তা হলে সময় নষ্ট না করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
৬) শিশুর গা গরম দেখলে জলপট্টি দিন, গা, হাত-পা ভাল করে স্পঞ্জ করে দিন। ফ্যান চালিয়ে রাখুন, সারা ঘরে যাতে হাওয়া চলাচল ঠিকভাবে হয় সেটা দেখুন।
৭) খাওয়ার পরিমাণ হঠাৎ করে কমে গেলে, দিনে পাঁচ বারের কম প্রস্রাব করলে চিকিৎসককে দেখিয়ে নিতে হবে।
৮) শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসের হারে নজর রাখতে হবে। শিশু যদি দ্রুত শ্বাস নিতে শুরু করে, শ্বাস-প্রশ্বাসের সময়ে বুক দ্রুত ওঠানামা করে তাহলে দেরি করা চলবে না।
৯) জ্বর হয়েছে বলে শিশুকে আপাদমস্তক গরম পোশাকে মুড়িয়ে দেওয়া কিন্তু কাজের কথা নয়। একাধিক গরম পোশাক পরালে বরং শিশুর কষ্টই হবে।