শিশুর জ্বর তিন দিনেও না কমলে সতর্ক হতে হবে। ফাইল চিত্র।
শীত পড়ছে ভাল রকমই। ভোরের দিকে হিমেল হাওয়ায় তাপমাত্রার পারদ নামছে। এই সময় সুস্থ থাকতে প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু জরুরি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। বিশেষ করে বাড়িতে শিশু থাকলে তাদের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়। একটু সতর্ক হলেই হঠাৎ ঠান্ডা লাগা, টনসিলের সংক্রমণ, হাঁচিকাশির মতো শীতের স্বাভাবিক রোগভোগের হাত থেকে নিজের সন্তানকে রক্ষা করা যায়।
এই বিষয়ে চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইয়ের মত, “শীতে সবচেয়ে ক্ষতি করে হিম। হেমন্তকাল থেকেই অল্পস্বল্প হিম পড়তে শুরু করে, এতেই শিশুদের শরীরে নানা সংক্রমণ হয়। কিছু নিয়ম মেনে চললে তবেই এই সব সমস্যাকে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব।”
চিকিৎসক বলছেন, প্রতি বছরই মরসুম বদলের সময়ে জ্বরের প্রকোপ বাড়ে। সর্দিকাশি, জ্বর ঘরে ঘরেই হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে রেসপিরেটারি সিনসিটিয়াল ভাইরাসের সংক্রমণের কারণেই জ্বর, শ্বাসকষ্ট বাড়ে। প্রতি বছরই মরসুম বদলের সময় রেসপিরেটারি ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ে। তাই শিশুর জ্বরের সঙ্গে যদি শ্বাসকষ্ট বা খিঁচুনি দেখা দেয়, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
বাবা-মায়েরা কী কী খেয়াল করবেন?
১) সবচেয়ে প্রথম দেখতে হবে সর্দিজ্বর কতটা বাড়ছে। তাপমাত্রা বেশি উঠে গেলে দেরি না-করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
২) চিকিৎসক জানাচ্ছেন, ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বর সাধারণ দু’-তিন দিন থাকে, বারে বারেই ধুম জ্বর আসতে পারে। কিন্তু চার থেকে পাঁচ দিন পরেও জ্বর না কমলে সতর্ক হতে হবে।
৩) শিশুদের কোনও রকম অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াবেন না। অ্যাসপিরিন কোনও ভাবেই দেওয়া যাবে না। চিকিৎসকের পরামর্শ মতোই ওষুধ খাওয়াতে হবে।
৪) জ্বরের সঙ্গে যদি খিঁচুনি, অজ্ঞান হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়, তা হলে সময় নষ্ট না করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
৫) শিশুর গা গরম দেখলে জলপট্টি দিন, গা, হাত-পা ভাল করে স্পঞ্জ করে দিন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিতে হবে। হাত না ধুয়ে শিশুর কাছে যাবেন না।
৬) শিশু যদি দিনে পাঁচ বারের কম প্রস্রাব করে তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
শিশুর শ্বাসকষ্ট বা ধুলো থেকে আলার্জি হলে রাস্তায় বেরোলে মাস্ক পরান অবশ্যই। বাসে-ট্রেনে কোথাও গেলে মাফলার রাখুন গলায়। প্রয়োজন অনুযায়ী গরম কাপড় দিন। শীতে ডেঙ্গি হওয়ার প্রবণতা থাকেই। তাই মশানিরোধক রাসায়নিক ক্রিম ব্যবহার না করে, চেষ্টা করুন হাত-পা ঢাকা জামাকাপড় পরাতে। শিশুকে বেশি করে ভিটামিন সি যুক্ত ফল ও মরসুমি সব্জি খাওয়ান। বাইরের খাবার একেবারেই চলবে না।