সব্জি বা ফল কাটার পর তার রস লেগে থাকে চপিং বোর্ডের উপর। ছবি- সংগৃহীত
হাঁটু ভাঁজ করে মাটিতে বসে আনাজ কাটতে সমস্যা হয় বলে মাকে একটা চপিং বোর্ড কিনে দিয়েছিলেন রিমা। গ্যাসের পাশে দাঁড়িয়ে, ছুরি দিয়ে কাটতে বেশ সুবিধাই হয়েছে। বার বার পা মুড়ে বসতেও হচ্ছে না। কিন্তু আমেরিকার এক প্রবাসী বন্ধুর কাছে এই সংক্রান্ত গবেষণার কথা শুনে আর নিশ্চিন্তে থাকতে পারছেন না। সাম্প্রতিক সেই গবেষণায় বলা হয়েছে, শৌচাগারের কমোডের চেয়ে প্রতি দিনের ব্যবহৃত চপিং বোর্ডে জীবাণুর পরিমাণ প্রায় ২০০ গুণ বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্লাস্টিকের চপিং বোর্ডে থাকা ‘মাইক্রোপ্লাস্টিক্স’ থেকে নানা রকম শারীরিক জটিলতা হতে পারে।
রক্তে বিভিন্ন উপাদানের মাত্রা হেরফের হওয়াও অস্বাভাবিক নয়। আমেরিকার নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটির এক দল গবেষক বলেছেন, কাঠের বা প্লাস্টিকের বোর্ডের উপর সব্জি কাটলে, সেখানে প্রায় কোটি খানেক বিষাক্ত মাইক্রোপার্টিকল্স উৎপন্ন হয়। সব্জি কাটার সময়ে ছুরির গায়ে লেগে থাকা ‘পলিপ্রপাইলিন’ এবং ‘পলিথিন’এর ক্ষুদ্র অংশ শরীরে গিয়ে নানা রকমের সমস্যা হতেই পারে। চিকিৎসকেরা বলছেন, ব্যবহার করা চপিং বোর্ডের উপর ‘স্যালমোনেল্লা’র মতো ব্যাক্টেরিয়া থাকা অস্বাভাবিক নয়। এই ধরনের ব্যাক্টেরিয়া শরীরে প্রবেশ করলে পেটের অসুখ হওয়া স্বাভাবিক।
কী ভাবে চপিং বোর্ড জীবাণুমুক্ত রাখবেন?
১) প্রতি বার ব্যবহার করার আগে ধোয়া
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আনাজ কাটার পর তাড়াহুড়োতে চপিং বোর্ড ধুয়ে না রাখলেও ব্যবহার করার আগে অবশ্যই তা ধুতে হবে। বাসন মাজার তরল সাবান বা জীবাণুমুক্ত করার যে কোনও দ্রবণ দিয়ে পরিষ্কার করে নেওয়া যায়।
২) কাপড় ব্যবহার না করা
কাঠের বোর্ড, জল দিয়ে পরিষ্কার করলে তা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ভিজে কাপড় দিয়ে মুছে নেন অনেকেই। কিন্তু এই ভাবে চপিং বোর্ড পুরোপুরি পরিষ্কার না-ও হতে পারে। কাঠের উপর বসে যাওয়া ছুরির দাগের ভিতর খাবারের অংশ ঢুকে থাকলে তা কাপড় দিয়ে মুছলেই পরিষ্কার করা যায় না।
৩) আমিষ, নিরামিষের জন্য আলাদা বোর্ড
মাছ, মাংসজাতীয় খাবার যে হেতু তা়ড়াতাড়ি নষ্ট হয়, তাই সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা বেশি। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন এর থেকে বাঁচার উপায় হল, আমিষ এবং নিরামিষ খাবারের জন্য আলাদা বোর্ড ব্যবহার করা।